ইয়ানিক সিনারের কাছে হেরে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে পড়ার হতাশা জোকোভিচের
ইয়ানিক সিনারের কাছে হেরে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে পড়ার হতাশা জোকোভিচের

সিনারের কাছে হারের পর জোকোভিচ, ‘এটা শেষের শুরু নয়’

রজার ফেদেরারের বয়স তখন ৩৭ বছর। ২০১৮ সালে সেই বয়সে তিনি জিতলেন ক্যারিয়ারের ২০তম গ্র্যান্ড স্লাম শিরোপা। তখন সেটা ছিল রেকর্ড। ফেদেরার এরপর আরও ৩ বছর টেনিস খেললেন। কিন্তু ২১তম গ্র্যান্ড স্লাম শিরোপা আর জেতা হলো না। ২০২১ সালের উইম্বলডনের কোয়ার্টার ফাইনারে উঠলেও সেখানে তিনি হারলেন সরাসরি সেটে। তখনই হয়তো ফেদেরার বুঝে গিয়েছিলেন—আর হবে না, তাহলে এখানেই ইতি টানা যাক! ওই টুর্নামেন্টের পর কিংবদন্তি ফেদেরার আর কোনো সিঙ্গেলস টুর্নামেন্টে খেলেননি। পরের বছরে দিয়েছেন অবসরের ঘোষণা।

রাফায়েল নাদাল গ্র্যান্ড স্লামে ফেদেরারকে ছুঁয়ে ফেলা ২০তম শিরোপা জেতেন ২০২০ সালে। তখন তাঁর বয়স ৩৩ বছর। পরের বছর গ্র্যান্ড স্লামে ছিল তাঁর শিরোপা–খরা। চোট–টোট মিলিয়ে বারবার মনে হচ্ছিল, শেষের শুরুর ঘণ্টা বেজে গেছে স্পেনের টেনিস তারকার। কিন্তু ২০২২ সালে আবার দুটি গ্র্যান্ড স্লাম জিতে গড়লেন রেকর্ড। কিন্তু গত বছর আবার কাটল শূন্যতায়। চোটের কারণে বেশির ভাগ সময়ই তাঁকে কাটাতে হয় কোর্টের বাইরে। সব মিলিয়ে ৩৭ বছর বয়সী নাদালের শেষের শুরু দেখে ফেলেছেন অনেকেই।

সিনারের বিপক্ষে নিজের সেরা খেলাটা খেলতে না পারার আক্ষেপ আছে জোকোভিচের

এবার আসা যাক এ দুজনের আরেক তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বী নোভাক জোকোভিচের কথায়। ফেদেরারের যুগ শেষ আর নাদাল যখন ‘ফুরিয়ে গেছেন’, দোর্দণ্ড প্রতাপে এগিয়ে যাচ্ছেন জোকোভিচ। গত বছর অস্ট্রেলিয়ান ওপেন, ফ্রেঞ্চ ওপেন ও ইউএস ওপেন জিতে নাদালকে ছাড়িয়ে রেকর্ড গড়ার পর ছাপিয়ে যান নিজেকেও (২৪টি গ্র্যান্ড স্লাম শিরোপা জয়)। এ বছরের প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের শুরুটা তিনি করেন ‘২৫’–এর হাতছানি নিয়ে। কিন্তু আজ সেমিফাইনালে ইয়ানিক সিনারের কাছে ৬–১, ৬–২, ৬–৭ (৬/৮), ৬–৩ গেমে হেরে সেই অভিযানের শেষ হয় জোকোভিচের।

ম্যাচটি হারার পর সার্বিয়ান তারকা জোকোভিচ নিজেই বলেছেন, ‘ফাইনালে যাওয়াটা তার (ইয়ানিক সিনার) প্রাপ্যই। আজ সে সম্পূর্ণভাবে আমাকে উড়িয়ে দিয়েছে। দেখুন, আমি যে পর্যায়ের টেনিস খেলেছি, তা নিয়ে হতাশ। প্রথম দুই সেটে আমার কিছুই ঠিক ছিল না। আমার মনে হয়, গ্র্যান্ড স্লামে এটা আমার অন্যতম বাজে ম্যাচ ছিল। অন্তত যেসব ম্যাচ আমি মনে করতে পারি, সেগুলোর মধ্যে।’

জোকোভিচের এই মন্তব্যের রেশ ধরেই একটা প্রসঙ্গে উঠে এল—বয়স তো ৩৬ বছর হয়ে গেছে, এ বয়সে ফেদেরার ফুরিয়ে গেছেন, ফুরিয়ে গেছেন নাদালও! তাহলে কি জোকোভিচেরও শেষের শুরু হয়ে গেল! জোকোভিচ অবশ্য সেটা মানতে নারাজ, ‘আমি সাধারণত যে পর্যায়ের টেনিস খেলি বা আমার কাছে মানুষ যেমন খেলা আশা করে, এ টুর্নামেন্টটা তেমন কাটেনি। কিন্তু এর মানে এই নয় যে এটা আমার শেষের শুরু।’