শেষ হলো পথচলা, থামলেন রাফায়েল নাদাল। কাল রাতে ডেভিস কাপে নেদারল্যান্ডসের কাছে হেরে স্পেন বিদায় নেওয়ায় পেশাদার টেনিস থেকে ছুটি পেয়ে গেলেন লাল দুর্গের রাজা। ২২ বারের গ্র্যান্ড স্লামজয়ী স্প্যানিশ কিংবদন্তির ২৩ বছরের ক্যারিয়ার শেষ হলো মালাগায়।
রেকর্ড ১৪ বারের ফ্রেঞ্চ ওপেনজয়ী নাদাল আরও কত রেকর্ড সঙ্গী করেই না ছাড়লেন টেনিস! তবে নাদালের আশা রেকর্ডের জন্য নয়, ‘একজন ভালো মানুষ’ হিসেবে তাঁকে সবাই মনে রাখবেন, মনে রাখবেন স্বপ্নবাজ এক মানুষ হিসেবেও।
আমি চাই মানুষ আমাকে বেশি মনে রাখুক মায়োর্কার ছোট এক গ্রাম থেকে আসা একজন ভালো মানুষ হিসেবে।রাফায়েল নাদাল
স্পেন হেরে যাওয়ার পর কোর্টে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে নাদাল বলেন, ‘আমি চাই মানুষ আমাকে এভাবে মনে রাখুক, যে কি না তার স্বপ্নকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল। যে জীবনটা আমি যাপন করেছি, তাতে বলতেই হয় আমি খুব ভাগ্যবান। আর টেনিসের কারণেই অবিস্মরণীয় সব স্মৃতি জমা হয়েছে ভান্ডারে।’
৩৮-এ টেনিস ছাড়ার পর নাদাল এক বাক্যেই নিজেকে বর্ণনা করলেন এরপর, ‘আমি সেই সাধারণ ছেলে, যে কিনা স্বপ্নের পেছনে ছুটেছে সব সময়, যতটা সম্ভব কঠোর পরিশ্রম করে আমি আজ যেখানে দাঁড়িয়ে, সেখানে এসেছে। তবে আমি চাই মানুষ আমাকে বেশি মনে রাখুক মায়োর্কার ছোট এক গ্রাম থেকে আসা একজন ভালো মানুষ হিসেবে।’
স্পেনের বিদায়ে বড় ভূমিকা রেখেছে নাদালের হারও। এককে নেদারল্যান্ডসের বটিচ ভন ডি জান্ডশ্লুপের কাছে হেরছে সরাসরি সেটে। ডেভিস কাপে টানা ২৯টি একক ম্যাচ জয়ের পর নাদালের এটিই প্রথম হার। হার দিয়ে ২০ বছরের ডেভিস কাপ ক্যারিয়ার শেষ করার পর নাদাল কথা বলেছেন এই হার নিয়েও। সেটি বলতে গিয়ে একটু মজাও করলেন নাদাল, ‘এক দিক দিয়ে দেখলে ভালোই হয়েছে। এটা তো আমার শেষ ম্যাচ। ডেভিস কাপে আমার প্রথম ম্যাচেও হেরেছিলাম, হারলাম শেষ ম্যাচেও। বৃত্তটা পুরো হলো।’
এরপর স্টেডিয়ামের বড় পর্দায় নাদালকে উৎসর্গ করে বানানো একটি ভিডিও দেখানো হয়। যেখানে তাঁর অনেক প্রতিদ্বন্দ্বীই কথা বলেছেন তাঁকে নিয়ে। এই ভিডিও দেখার পর একটু আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন নাদাল। বলেন, টেনিসে ছাপ রেখে যেতে পারাটাই তাঁর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জন, ‘আমি মনে কোনো খেদ না নিয়েই বিদায় নিচ্ছি এই ভেবে যে আমি ছাপ রেখে যেতে পারছি। সেটি শুধু খেলাধুলার কারণেই নয়, ব্যক্তিগত কারণেও। আমি জানি যে ভালোবাসা আমি পেয়েছি, সেটি শুধু টেনিস কোর্টে যা করেছি, সেটির জন্য নয়।’