টেনিসে ফুটবলের ছোঁয়া এনেছেন কার্লোস আলকারাজ?
ইংল্যান্ডের সাবেক স্ট্রাইকার গ্যারি লিনেকারের তেমনটাই মনে হয়েছে। তিনি উইম্বলডনজয়ী স্প্যানিশ টেনিস তারকার মধ্যে শুধু ফুটবলারের গুণই দেখছেন না, সঙ্গে দেখছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো আর লিওনেল মেসিকেও। এক টুইটে তিনি লেখেন, ‘অসাধারণ এক প্রতিভা কার্লোস আলকারাজ। তাঁকে একজন ফুটবলারের মতোই মনে হয়। তাঁর মুভমেন্টও ফুটবলারের মতোই। তাঁর মধ্যে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর গতি আর পাওয়ার দুটিই আছে। পাশাপাশি আছে লিওনেল মেসির চাতুর্য। কিন্তু এসবই সে করছে টেনিস র্যাকেট হাতে।’
লিনেকার আলকারাজের মধ্যে মেসি ও রোনালদোকে খুঁজে পাচ্ছেন। তবে তাঁর মধ্যে আরও একটা নতুন জিনিস খুঁজে পেয়েছেন টেনিসের সাবেক ১ নম্বর তারকা ম্যাটস উইলান্ডার। তিনি মনে করেন, আলকারাজের একটি গুণ রোনালদো, মেসি কিংবা রাফায়েল নাদাল, রজার ফেদেরার, নোভাক জোকোভিচ—কারও মধ্যেই নেই। সেটি কী?
উইলান্ডার লিনেকারের ‘রোনালদো’, ‘মেসি’ বিশ্লেষণের সঙ্গে একমত। একই সঙ্গে সুইডিশ টেনিস তারকা ব্যাখ্যা করেই জানিয়েছেন আলকারাজের সেই গুণটির কথা, ‘আমি লিনেকারের সঙ্গে একমত। কিন্তু তাঁর মধ্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা গুণ আমি দেখেছি, যেটি মেসি, রোনালদো এমনকি নাদাল, ফেদেরার কিংবা জোকোভিচের মধ্যেও নেই। সেটি হচ্ছে হাসি। হ্যাঁ, তাঁকে আমি টেনিস কোর্টে হাসতে দেখি, যেটি খুবই অসাধারণ একটা বিষয়। প্রচণ্ড চাপের মধ্যেও তাঁকে আমি নির্ভার দেখেছি। দেখে মনে হয়েছে, সে খুব আরাম করে খেলছে। সময়টা উপভোগ করছে। এটা খুবই নতুন ধরনের একটা বিষয়। জোকোভিচের মধ্যে এমন গুণ কিছুটা আছে, কিন্তু নাদাল, ফেদেরার কাউকে এভাবে খেলতে দেখিনি আমি।’
উইম্বলডন ও ইউএস ওপেনের চ্যাম্পিয়ন আলকারাজ এ মুহূর্তে বিশ্বের ১ নম্বর টেনিস খেলোয়াড়। সবচেয়ে কম বয়সে টেনিসের ১ নম্বর খেলোয়াড় হয়েছেন তিনি। স্প্যানিশ এই তারকাকে মনে করা হচ্ছে, তিনি আগামী দশকে টেনিসের সবচেয়ে বড় খেলোয়াড় হয়ে উঠবেন। উইলান্ডার মনে করেন, আলকারাজ ক্রীড়াজগতেরই ভিন্ন আঙ্গিকের একজন তারকা হয়ে উঠবেন, ‘২০ বছর বয়সী আলকারাজ দুর্দান্ত এক টেনিস খেলোয়াড়। কিন্তু সে ভিন্ন একজন ক্রীড়াবিদ হয়ে উঠবে তাঁর মানসিকতার কারণে। আদর্শ একজন খেলোয়াড়, যাঁকে সবাই অনুসরণ করবে—এমন একজন হয়ে উঠতে পারে আলকারাজ।’
এবারের উইম্বলডন ফাইনালে নিজের ২৪তম গ্র্যান্ড স্লামের অপেক্ষায় ছিলেন জোকোভিচ। আলকারাজ প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়লেও শেষ পর্যন্ত সার্বিয়ান তারকার সঙ্গে পেরে উঠবেন না বলেই ভেবেছিলেন অনেকে। বিশেষ করে, কিছুদিন আগেই ফ্রেঞ্চ ওপেনে জোকোভিচের বিপক্ষে আলকারাজের শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার উদাহরণ ছিল। কিন্তু সেন্টার কোর্টে দেখা গেল আলকারাজের সামনেই জোকোভিচ ভেঙে পড়লেন। ৪ ঘণ্টা ৪২ মিনিটের লড়াই শেষে জোকোভিচকে হারিয়ে আলকারাজ জানান দিলেন তিনি এসেছেন দাপট দেখাতেই।