টেনিসের ‘ব্যাড বয়’ হিসেবে পরিচিতি পেয়ে গেছেন অস্ট্রেলীয় তারকা নিক কিরিওস। প্রতিপক্ষ স্তেফান সিৎসিপাসকে অহেতুক খোঁচা মারা, উইম্বলডনের রীতি ভঙ্গ করে লাল টুপি পরা। এমন কিছু বাজে আচরণের জন্য এরই মধ্যে ১৪ হাজার ডলার জরিমানা গুনতে হয় কিরিওসকে। এসবের মধ্যেই অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরার আদালত থেকে সমন এল—গত বছর নিজের বান্ধবীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছিলেন, সে কারণেই হাজিরা দিতে হবে সেখানে।
উইম্বলডনের সেমিফাইনালে রাফায়েল নাদালের মতো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে লড়বেন তিনি। কিন্তু এর আগেই ক্যানবেরা আদালতের সমন তাঁকে বেজায় বিচলিত করেছে। যদিও তিনি ‘ব্যাপার না’–জাতীয় শরীরী ভাষা দেখানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিন্তু বিচলিত ভাবটা কিছুতেই লুকাতে পারছেন না কিরিওস। আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশের চেয়েও অভিযোগের ধরন নিয়ে বেশি ভাবছেন তিনি। কিরিওসের কৌঁসুলি এটিকে ‘পারিবারিক কলহ’ বললেও তাঁর মতো তারকার বিরুদ্ধে ‘পারিবারিক কলহে’র অভিযোগই–বা উঠবে কেন!
কিরিওস এখন নিজের দিকের কথাগুলো সবাইকে বলতে চান। কিন্তু ‘বলতে চাই’ বললেই তো বলা যায় না। আদালতের ব্যাপার! কৌঁসুলিই তাঁকে পরামর্শ দিয়েছেন, যতই বলতে ইচ্ছা করুক না কেন, এ মুহূর্তে তাঁর মুখ বন্ধ করে রাখাটাই শ্রেয়। কিরিওস নিজেই বলেছেন, ‘আমি আসলে আমার দিকের বক্তব্য সবাইকে জানাতে চাই। এটা জানানো আসলেই দরকার। আমারও তো বলার থাকতে পারে অনেক কিছু। কিন্তু এ মুহূর্তে আমি নিরুপায়। আমার কৌঁসুলিরা আমাকে পরামর্শ দিয়েছেন এ ব্যাপারে এ মুহূর্তে মুখ বন্ধ রাখার। আমি তাদের পরামর্শ মেনে নিয়েছি।’
ক্রিস্টিয়ান গারিনকে উইম্বলডনের কোয়ার্টার ফাইনালে ৬–৪ ৬–৩ ৭–৬ (৭–৫) গেমে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছেন কিরিওস। রাফায়েল নাদালের বিপক্ষে তাঁর এই সেমিফাইনাল নিয়ে সবাই যে আগ্রহী, সেটি বোঝাই যাচ্ছে। ‘মোস্ট ওয়াচড ম্যাচ এভার’ এমন একটা পোশাকি তকমাও দেওয়া হয়েছে এটিতে। কিরিওসের কাছে উইম্বলডনের সেমিফাইনালে ‘স্বপ্ন সত্যি’ হওয়ার মতো এক ব্যাপার, ‘আমি জীবনে কখনো ভাবিনি, কোনো গ্র্যান্ড স্লাম টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে উঠব। একটা সময় মনে হয়েছিল, আমি নিজেকে কিছুটা অপচয়ই করেছি।’
কিরিওস যা–ই বলুন। এর আগে দুইবার তিনি গ্র্যান্ড স্লাম টুর্নামেন্টের সেমির খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন। ২০১৪ সালে মিলোস রাওনিকের কাছে হেরে উইম্বলডন আর ২০১৫ সালে অ্যান্ডি মারের কাছে হেরে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সেমিফাইনালে ওঠা হয়নি তাঁর।
এবারের উইম্বলডন যাত্রাকে কিরিওসের কাছে ‘বন্ধুর, পাথুরে’ মনে হচ্ছে। এ বছরের শুরুতেও তিনি উইম্বলডন নিয়ে খুব বেশি আশাবাদী ছিলেন না। তাঁর প্রস্তুতিটাও ভালো ছিল না। কিন্তু হঠাৎই ভেতর থেকে একধরনের তাগিদ তিনি অনুভব করেছেন। সেই তাগিদটা হচ্ছে—‘একটু চেষ্টা করে দেখিই না।’ সেই চেষ্টার ফলটাই হাতেনাতে পেয়েছেন কিরিওস।