ইতিহাস গড়া ফাইনাল উপহার দিলেন জোকোভিচ-ফেদেরার

অল ইংল্যান্ড ক্লাবের ক্লাব হাউসে শিরোপা হাতে জোকোভিচ। ছবি: এএফপি
অল ইংল্যান্ড ক্লাবের ক্লাব হাউসে শিরোপা হাতে জোকোভিচ। ছবি: এএফপি
>

উইম্বলডনে কাল ছেলেদের ফাইনালে ‘ক্ল্যাসিক’ লড়াই উপহার দিয়েছেন রজার ফেদেরার ও নোভাক জোকোভিচ। শেষ পর্যন্ত জিতেছেন সার্বিয়ান তারকা জোকোভিচই

শুধু গ্যালারিতে নয়, টিভি সেটের সামনে বসে থাকা দর্শকেরাও বোধ হয় আসন ছেড়ে উঠতে পারেননি। এতটাই শ্বাসরুদ্ধকর লড়াই! মানসিক চাপ সহ্য করার সর্বোচ্চ পরীক্ষা গেছে স্নায়ুর ওপর দিয়ে। তাও দু-এক ঘণ্টা গেলে হয়, ৪ ঘণ্টা ৫৭ মিনিট ধরেই উত্তেজনায় বুঁদ ছিলেন টেনিসপ্রেমীরা। শেষ পর্যন্ত রজার ফেদেরারের হতাশ মুখখানি দেখে মর্মযাতনায় তাঁর ভক্তরা হয়তো ভুলেই গিয়েছিলেন, ৩৮ ছুঁই ছুঁই বয়সে উইম্বলডন ফাইনালের ইতিহাসে দীর্ঘতম ম্যাচটাই খেলেছেন কিংবদন্তি। শুধু শিরোপাটা জেতা হয়নি। ওটা উঠেছে নোভাক জোকোভিচের হাতে।

যোগ্য খেলোয়াড় হিসেবেই শিরোপাটা জিতেছেন জোকোভিচ। তবে কাল উইম্বলডনের ফাইনালে বেশির ভাগ সমর্থকই শিরোপা দেখতে চেয়েছিলেন ফেদেরারের হাতে। আগামী মাসে আটত্রিশে পা দিতে যাওয়া কিংবদন্তি এ বয়সে কী লড়াইটাই না করলেন! করতালি পাবেন জোকোভিচও। কোর্টে যেদিকেই বল মারা হোক না কেন সার্বিয়ানের যেন কোনো দুর্বলতাই নেই! ফেদেরার প্রায় চার থেকে পাঁচবার জয়ের সুবাস পেয়েও পারেননি জোকোভিচের দুর্দান্ত প্রতিরোধের জন্য। এমনকি পঞ্চম সেটে ফেদেরারের দু-দুটো ম্যাচ পয়েন্ট পর্যন্ত সেভ করে দিলেন!

রানারআপ শিরোপায় নিশ্চয়ই সন্তুষ্ট নন ফেদেরার? ছবি: এএফপি

উইম্বলডন ফাইনালের ইতিহাসে শেষ সেটে টাইব্রেকের মধ্য দিয়ে শিরোপার নিষ্পত্তি হওয়ার নজির দেখা গেল এই প্রথম। যেখানে স্কোরকার্ড বলছে ৭-৬ (৭/৫), ১-৬, ৭-৬ (৭/৪), ৪-৬, ১৩-১২ (৭/৩) গেমে জয়ী জোকোভিচ। স্কোর কার্ড ভুল বলছে। জয়ী আসলে দুজনেই। অসাধারণ রোমাঞ্চকর টেনিস উপহার দেওয়ার জন্য।

উইমম্বলডনে গত ৭১ বছরের ইতিহাসে জোকোভিচই প্রথম খেলোয়াড় যিনি ম্যাচ পয়েন্টে পিছিয়ে থেকেও শিরোপা জিতলেন। অন্যদিকে, ফেদেরার জিতলে গড়তেন সবচেয়ে বেশি বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের রেকর্ড। জোকোভিচের চেয়ে বয়সে প্রায় পাঁচ বছরের বড় হয়েও দুর্দান্ত ফিটনেসের অনন্য নজির দেখিয়েছেন ফেদেরার। শেষ সেটে ১৬তম গেমটাই দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে লড়েছেন দুজন। যেখানে দুটো ম্যাচ পয়েন্ট পেয়েও শিরোপা জিততে পারেননি ফেদেরার।

উল্টো ‘অবাস্তব’ কিন্তু ক্ল্যাসিক এ ফাইনাল থেকে উইম্বলডনে নিজের পঞ্চম শিরোপা তুলে নিয়েছেন জোকোভিচই। অবাস্তব—কথাটা ম্যাচ শেষে জোকোভিচই বলেছেন, ‘দুটি ম্যাচ পয়েন্টে পিছিয়ে থেকে ঘুরে দাঁড়ানো এবং ১২-১২ ব্যবধানে থাকতে টাইব্রেক করাটা আসলে অবাস্তব ব্যাপার। এটা সবচেয়ে উত্তেজনাকর ফাইনাল না হলেও অবশ্যই আমার ক্যারিয়ারে সেরা দু-তিনটি ফাইনালের মধ্যে থাকবে, যেখানে প্রতিপক্ষ সর্বকালের অন্যতম সেরা—রজার ফেদেরার। যাঁকে আমি শ্রদ্ধা করি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এমন ম্যাচে কাউকে হারতে হয়।’