সাফ ফুটবলে পাঁচ ম্যাচেই অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। আরও ছয়জন খেলেছেন বদলি হিসেবে। ছয়জন মাঠে নামার সুযোগ পাননি। তারপরও সবাই এই বিজয়ের অংশীদার। সাফজয়ী বাংলাদেশ দলের ২৩ খেলোয়াড়ের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি লিখেছেন বদিউজ্জামান
একেই বলে ‘ক্যাপ্টেন ফ্যান্টাস্টিক’! সদ্য শেষ হওয়া মেয়েদের সাফে যোগ্য অধিনায়কের মতো সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
নিজে তো গোল করেছেনই, সতীর্থকে দিয়ে গোল করিয়েছেনও সাবিনা খাতুন।
ব্যক্তিগত ও দলীয় সাফল্যে রাঙিয়ে দিয়েছেন সাফ ফুটবলকে। পাকিস্তান ও ভুটানের বিপক্ষে করেছেন হ্যাটট্রিক। টুর্নামেন্টে ৫ ম্যাচের ৩টিতেই পেয়েছেন ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার। ৮ গোল করে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতাও তিনি। সাফের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও উঠেছে সাবিনার হাতে। জাতীয় দলের জার্সিতেও বাংলাদেশ দলে সাবিনার ধারেকাছে কেউ নেই। শুধু সাফেই করেছেন ২২ গোল। সব মিলিয়ে ৪৮ ম্যাচে গোল ৩২টি।
সাবিনার উত্থান যেন রূপকথার এক গল্প। পাঁচ বোনের সংসারে তিনি চতুর্থ। স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হওয়ার। কিন্তু মেয়েকে পড়ানোর খরচ চালানোর সামর্থ্য ছিল না প্রয়াত বাবা সৈয়দ গাজীর। ডানপিটে সাবিনা স্কুলে ছেলেদের সঙ্গে ফুটবল খেলতেন। সাতক্ষীরার আন্তস্কুল টুর্নামেন্টে নবারুণ উচ্চবিদ্যালয়কে একাই টেনে নিয়ে যেতেন। সেখানেই নজর কাড়েন জেলা ফুটবল দলের প্রয়াত কোচ আকবর আলীর। সাবিনার মুভমেন্ট, পাসিং, ড্রিবলিংয়ে মুগ্ধ আকবর আলী ২০০৯ সালে সাবিনাকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। সেবার জাতীয় মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপে সবচেয়ে বেশি গোল করে পরের বছর এসএ গেমসের দলে ডাক পান সাবিনা। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০১০ সালের পর থেকে টানা খেলছেন জাতীয় দলে। আট বছর ধরে জাতীয় দলের অধিনায়ক। বাংলাদেশের প্রথম নারী ফুটবলার হিসেবে দেশের বাইরের পেশাদার লিগে খেলার কৃতিত্বও তাঁর। খেলেছেন মালদ্বীপ ও ভারতে। সাফের ছয় আসরের সব কটিতেই খেলা সাবিনা বর্তমানে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের স্টাডি সেন্টার থেকে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন স্নাতক করছেন।
অনেক অর্জনের পরও দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের শিরোপা জিততে না পারার যে আক্ষেপ ছিল সাবিনার, এবারের সাফ ঘুচিয়ে দিয়েছে সেটিও।