দল চাইলে যে কাউকেই সংবাদ সম্মেলনে পাঠাতে পারে। তবে সাধারণত পারফর্ম করেছেন, এমন কাউকেই সংবাদ সম্মেলনে পাঠানো হয়। কিন্তু বাংলাদেশের কাছে ৩ উইকেটে হারের পর শ্রীলঙ্কা দল থেকে সংবাদ সম্মেলনে এলেন অভিজ্ঞ পেস অলরাউন্ডার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস।
তখনই বোঝা গিয়েছিল, ‘টাইমড আউট’ হওয়া নিয়ে মনের রাগ–ক্ষোভ উগরে দিতেই সংবাদ সম্মেলনে এসেছেন ম্যাথুস। আর প্রথম প্রশ্নটাও হলো বিতর্কিত সেই আউট নিয়েই। ম্যাথুসের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, আউট হয়ে কেমন লেগেছে? ম্যাথুস নিজে ফিল্ডিং দলের অধিনায়ক হলে কি একই কাজ করতেন?
ম্যাথুস এ দুটি প্রশ্নে দীর্ঘ উত্তর দিয়েছেন। তা ভেঙে ভেঙে বলাই ভালো। প্রথমে বললেন, ‘আমি ভুল কিছু করিনি। নিজেকে তৈরি করে ক্রিজে যাওয়ার জন্য আমার হাতে ২ মিনিট সময় ছিল এবং সেটা আমি করেছি। আমার (হেলমেট) সরঞ্জামে সমস্যা হয়েছিল। আমি জানি না কাণ্ডজ্ঞান কোথায় হারাল। অবশ্যই সাকিব ও বাংলাদেশের জন্য এটা লজ্জাজনক। যদি ওরা এভাবেই খেলতে চায় এবং এত নিচে নামে, আমার মনে হয় ওদের কোথাও একটা বড়সড় ঝামেলা আছে।’
শ্রীলঙ্কার সাবেক অধিনায়ক এরপর বলেছেন, ‘হেলমেটটা ভেঙে যাওয়ার পরও হাতে ৫ সেকেন্ডের মতো সময় ছিল। আমি বোঝাতে চাইছি, আমি শুধু হেলমেটটা পাল্টাতে চাইছিলাম। তাই এটা একদমই কাণ্ডজ্ঞানের (কমন সেন্স) ব্যাপার। আমি মানকাডিং কিংবা অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড নিয়ে কথা বলছি না। এটা একদমই কাণ্ডজ্ঞানের ব্যাপার, যেটার অনুপস্থিতি খেলাটায় অসম্মান বয়ে এনেছে। এটা ভীষণ লজ্জার।’
ম্যাথুসের আগে সংবাদ সম্মেলনে এসে সাকিব বলে গেছেন, লঙ্কান তারকার সঙ্গে অনূর্ধ্ব–১৯ বয়সভিত্তিক দল থেকে খেলেছেন। একে অপরকে ভালোভাবেও চেনেন। ম্যাথুসকে ‘টাইমড আউট’ করা নিয়ে কোনো অনুশোচনা নেই বলেও জানিয়েছেন সাকিব। এটা নিয়ে ম্যাথুসের কী ভাবনা—প্রশ্নের উত্তরে লঙ্কান অলরাউন্ডার বলেছেন, ‘আজকের (গতকাল) দিন পর্যন্ত তার ও বাংলাদেশ দলের জন্য আমার সর্বোচ্চ সম্মানটাই ছিল। আমরা সবাই জেতার জন্যই খেলি এবং সেটা নিয়মের ভেতরে থেকেই জেতার চেষ্টা করি। কিন্তু আজ (গতকাল) আমার ঘটনায় নিয়মই বলছে, আমি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই (ক্রিজে) ছিলাম। আমাদের কাছে ভিডিও আছে। আমরা এ নিয়ে পরে বিবৃতি দেব। ভিডিও থেকে ফুটেজের প্রমাণও আছে। আমি এখানে শুধু কথার কথা বলছি না, প্রমাণ নিয়েই বলছি।’
শ্রীলঙ্কার ইনিংসে ম্যাচের ২৫তম ওভারে ‘টাইমড আউট’ হন ম্যাথুস। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে ঢোকেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। উইকেটে গিয়ে দেখলেন, তাঁর হেলমেটের স্ট্র্যাপে কোনো একটা সমস্যা। সম্ভবত ওটা ছেঁড়া ছিল। ড্রেসিংরুমে ইশারা করলেন নতুন হেলমেটের জন্য। অতিরিক্ত খেলোয়াড়ের মাধ্যমে নতুন হেলমেট আনতে কিছুটা দেরি হয়ে যায়। এ সময় অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের বিপক্ষে ‘টাইমড আউট’–এর আপিল করে বাংলাদেশ। টেলিভিশনে দেখা গেছে, আউট নিয়ে মাঠেই ম্যাথুস আম্পায়ারের সঙ্গে দীর্ঘ সময় কথা বলেছেন। একপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে সাকিবের কাছে গেছেন তিনি। সাকিব এ সময় আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলার অনুরোধ করেন ম্যাথুসকে।