দুজনের নামই তামিম। দুজনই বাঁ হাতি। এক তামিম, মানে তামিম ইকবালকে চেনে পুরো ক্রিকেট বিশ্ব। আরেক ‘তামিম’ তানজিদ হাসান তামিম অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী বাংলাদেশ যুবদলের ওপেনার; ছোটদের ক্রিকেট থেকে সদ্যই নাম লিখিয়েছেন বড়দের সঙ্গে। বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপে দুই তামিমই খেলছেন এক দলে—তামিম একাদশে। বড় তামিমের সঙ্গে খেলার স্বপ্নটা ছিল অনেক আগে থেকেই। আজ সেই স্বপ্নটা পূরণ হয়ে যেতে পারে। স্বপ্ন পূরণের আগে ছোট তামিম প্রথম আলোকে বলেছেন বড় তামিমকে দেখে নিজের অনুপ্রাণিত হওয়ার গল্প।
‘তামিম’ নামটা কার রাখা?
তানজিদ হাসান তামিম: বাবা-মা মনে হয় (হাসি)। দাদা-দাদিও হতে পারে। ঠিক মনে নেই। ওইভাবে নাম নিয়ে কাউকে কিছু জিজ্ঞেস করা হয়নি।
তামিম ইকবালের নামে নাম আপনার। আপনি যখন খেলা শুরু করেছেন তখন তো তিনি বাংলাদেশের ক্রিকেটের বড় তারকা। বড় এক তারকার নামে আপনার নাম, আপনিও ক্রিকেটার হিসেবে নিজেকে গড়ছিলেন, তখন কেমন লাগত?
তানজিদ: ছোট থেকেই দেখছি তাঁকে। অনুপ্রাণিত হয়েছি সব সময়। ওনাকে দেখলেই মনে হতো, যদি কখনো ভালো খেলতে পারি, তাহলে হয়তো একদিন তাঁর সঙ্গে খেলতে পারব। এই ইচ্ছেটা ছিল।
নিজের এলাকায় যখন ক্রিকেট খেলতেন, তখন নিশ্চয়ই সবাই তামিম ইকবালের সঙ্গে আপনার তুলনা করত? তুলনা না হলেও কথা তো হতোই। আপনিও বাঁ হাতি ওপেনার, তামিমও। দুজনই আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান...
তানজিদ: হ্যাঁ, এমন হতো। অনেকেই বলত, আমি শুনতাম। আমি তেমন কিছু বলতাম না। তবে মানুষ বলত এসব ব্যাপারে। আমি ভাবতাম যদি সব ঠিক থাকে তাহলে হয়তো কোনো দিন তামিম ভাইয়ের সঙ্গে ওপেনিং করলেও করতে পারি। আগে থেকেই এই স্বপ্ন ছিল।
তামিম ইকবালের সঙ্গে প্রথম দেখা হওয়ার সময় কেমন লাগছিল?
তানজিদ: দেখা প্রথম হয়েছিল একাডেমি মাঠে। তখন কথা বলার সাহস পাইনি। এমনিতেই দূর থেকে দেখলাম ভাইয়ার ব্যাটিং। এই এবারই প্রথম ভাইয়ার সঙ্গে কথা বলা।
আপনার ব্যাটিংয়ে আক্রমণাত্মক ব্যাপারটা কী তামিমের ব্যাটিং থেকেই এসেছে?
তানজিদ: তামিম ভাইয়ের খেলা কখনোই আমি মিস করি না। ভাইয়ার যত আন্তর্জাতিক ম্যাচ আছে প্রায় সবই আমার দেখা। বিপিএল বা অন্য টুর্নামেন্ট, যখনই তিনি খেলেন, দেখার চেষ্টা করি। খেলা দেখতে দেখতেই এমনটা হয়েছে কিনা জানি না, তবে ব্যাটিংয়ের আক্রমণাত্মক ব্যাপারটা আমার মধ্যে যেভাবেই হোক চলে এসেছে।
ব্যাটিং নিয়ে কী আলাপ হয়েছে তামিমের সঙ্গে?
তানজিদ: খুব বেশি যে কথা হয়েছে, সেটি নয়। তবে টুকটাক কিছু হয়েছে। ব্যাটিং নিয়ে উনি কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। চেষ্টা করব, তাঁর কাছ থেকে আরও অনেক কিছু জানতে।
তামিমের কোন শটটা আপনার প্রিয়?
তানজিদ: পুল আর ড্রাইভ।
আজ অনুশীলনে আপনার ড্রাইভ গুলো যখন তামিম নন-স্ট্রাইক থেকে চেয়ে চেয়ে দেখছিলেন তখন কেমন লাগছিল?
তানজিদ: আসলে ভাইয়া যখন বলে যে ‘গুড শট’, তখন ভেতর থেকে অন্যরকম একটা অনুভূতি কাজ করে। কী যে বলব বুঝতে পারছি না (হাসি)। একটা ভালো লাগা কাজ করে।
অনুশীলনে দেখলাম আপনিই স্ট্রাইক নিয়েছেন। তামিম নন-স্ট্রাইকে..
তানজিদ: না না তেমন কিছু না। আজ আমি আগে এসে পড়েছিলাম ক্রিজে, তাই আমি স্ট্রাইকে ছিলাম। তবে ম্যাচে ভাইয়াই স্ট্রাইক নেবেন আগে...
দুজনের এক নাম হওয়ায় নাকি সমস্যা হচ্ছে দলের মধ্যে? আপনাকে নাকি ভিন্ন নামে ডাকতে হচ্ছে?
তানজিদ: আমার জার্সির নামও বদলে গেছে। সব সময় তামিম থাকত। এখন তানজিদ করা হয়েছে। আমাকে অবশ্য কোনো নাম ছাড়া জার্সি দিলেও খেলতে সমস্যা নেই (হাসি)। আমি তাঁর সঙ্গে ওপেন করছি এটাই আমার জন্য অনেক।