আফগানিস্তান সিরিজে ওয়ানডে সুপার লিগের শীর্ষে উঠে আসা দিয়ে শুরু করে তামিম ইকবালের সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় পর্ব ছড়িয়ে গেছে নানা দিকে। ২০২৩ বিশ্বকাপের পরিকল্পনা, দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে প্রত্যাশা, টি–টোয়েন্টি নিয়ে ভবিষ্যৎ ভাবনা, মাহমুদউল্লাহ–সাকিব আল হাসান...এমন আরও অনেক প্রসঙ্গে কথা বলেছেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন উৎপল শুভ্র।
তামিম ইকবাল : ভালো তো লাগছেই। তবে আমি যেমন জানি, আপনিও জানেন, এই পয়েন্ট টেবিল বদলাবে। বাংলাদেশ এখন সবার ওপরে আছে, এরপর হয়তো অন্য দল উঠবে, বাংলাদেশ নেমে যাবে, আবার উঠবে...পুরো চক্র শেষ হওয়ার পর আমরা কোথায় থাকি, সেটাই হলো গুরুত্বপূর্ণ।
তামিম: এটা তো আমার কাজের অংশই। এ নিয়ে আলোচনা তো হয়েছেই। বাংলাদেশের এখনো ৯টা ম্যাচ বাকি। আমরা শুধু আমাদের ম্যাচগুলো নিয়েই প্ল্যান করতে পারি। অন্য দলগুলো কেমন করবে, এটা তো আর আমার হাতে নেই। এখন পর্যন্ত আমরা ভালো পজিশনেই আছি। দেখা যাক কী হয়!
তামিম: আমরা এমন কিছু করতে চাই, যা আমরা আগে কখনো করিনি। নিজে ভালো করতে চাই, দল হিসেবে ভালো করতে চাই। ভালো করা মানে জেতা, এটা তো আর বলার দরকার নেই। জয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবার সুযোগ নেই।
তামিম: (হাসি) ঠিক। দেখেন, হারা-জেতা—এটা তো আর আমরা আগাম বলতে পারি না। তবে এটা বলতে পারি, আমরা জিততে চাই।
তামিম: দাদা, আমার কাছে মনে হয়, রিয়াদ ভাই ইজ অ্যান অ্যাসেট। সবকিছু ভেবে আমার কাছে একটা জিনিসই মনে হয়, হি ইজ অ্যান অ্যাসেট টু দ্য টিম।
তামিম: হি ইজ কোয়াইট ফিট। অন্য অনেকের চেয়ে শরীরটাকে উনি ভালো রেখেছেন। আর আমি আগেও বলেছি, আবারও বলছি, রিয়াদ ভাই আমাদের দলের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।
তামিম: জি, আমাদের খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে, তবে অবশ্যই অন্যদেরও সমর্থন লাগবে।
তামিম: আমার প্রথম কথা হলো এই প্রশ্ন গত বিশ্বকাপের আগেও বিভিন্নভাবে আমাকে অনেকবার করা হয়েছে বা অনেক জায়গায় অনেকজনকে করা হয়েছে যে তামিম তিন সিরিজ, চার সিরিজ খেলেনি, এই ওয়ার্ল্ড কাপে কেমনে খেলবে। আমি কিন্তু পাঁচ-ছয় সিরিজ না খেলেই বিপিএলে প্রথম টুর্নামেন্ট খেলেছি। আমি কত রান করেছি, সেটা কিন্তু লেখা আছে।
আমি ১৫ বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছি, আমি জানি কী করতে চাই, কী করতে চাই না। আর আপনি টি-টোয়েন্টি থেকে ছয় মাসের যে ছুটির কথা বললেন...দেখেন, আমার নিজের তো একটা প্ল্যান আছে। ওটা আপনারা আগামী মাসের মধ্যেই জানতে পারবেন। আমি কী চিন্তা করছি, আমি এই ফরম্যাটে খেলব কি খেলব না বা আমি কী করব বা করব না।
আমি আমার ক্রিকেট–জীবনে আমার সিদ্ধান্ত সব সময় পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছি সবাইকে। আমি কোনো কিছু লুকানোর মতো মানুষ নই। ওই যে আমি আপনাকে বললাম, আমি কী করতে চাই, তা আমার কাছে পরিষ্কার। কিছুদিনের মধ্যেই তা জানতে পারবেন। ছয় মাস ছুটির ব্যাপারটা আপনাদের কাছে হয়তো একটু আজব লাগছে।
তবে এটা আমাকে একটু সময় দিয়েছে ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবার। এমন নয় যে আমি হুট করে এসে মিডিয়ার সামনে কথাটা বলে দিয়েছি। আমি বোর্ড প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলাপ করেছি, ক্রিকেট অপারেশনস চেয়ারম্যানের সঙ্গেও। এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমাদের তিনটা মিটিং হয়েছে। ওখানে বিভিন্ন ধরনের কথা হয়েছে, আমি কী করতে চাই বলেছি।
তামিম: নো কমেন্টস।
তামিম: আমাকে অফিশিয়ালি ক্রিকেট বোর্ড থেকে কোনো প্রস্তাব দেওয়া হয়নি।
তামিম: না দাদা, আমি এক ফোঁটাও এভাবে করে চিন্তা করি না। প্রথম কারণ, আমার বয়স এখন ৩৩। যদি আমি ফিট থাকি আর পারফরম্যান্স ঠিক থাকে, তাহলে আমি আরও চার–পাঁচ বছর কেন খেলে যেতে পারব না!
তামিম: আমার তা মনে হয় না। আমি যদি বলি যে না, আর্থিক দিকটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, এটা বলা ঠিক হবে না। অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, তবে এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ খেলাটার প্রতি ভালোবাসা। আপনি যত বড় ক্রিকেটারদের নাম বললেন, শেষ দিন পর্যন্ত তারা খেলাটাকে ভালোবেসেছে। ওরা যদি আরও পাঁচ বছর আগেও খেলা ছেড়ে দিত, তারপরও তারা আরামে বাকি জীবন কাটিয়ে দিতে পারত।
আমি আমাদের বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের কথা বলছি না। আপনি যাদের নাম বলেছেন, তাদের কথা বলছি। ওরা এখনো কেন খেলছে...আই ডিপলি বিলিভ, বিকজ অব দ্য লাভ ফর দ্য গেম। ওরা যে জায়গায় গেছে, ওদের জন্য ১১ টাকা কী, ১২ টাকা কী আর ১৩ টাকাই–বা কী!
তামিম: দলে কতটা প্রভাব ফেলে, এটা বলা আমার জন্য একটু কঠিন। তবে এটা বলতে পারি, ও খেললে টিমের জন্য খুব ভালো হয়। কারণ, হি ইজ আ কোয়ালিটি প্লেয়ার। কিন্তু আপনি যে বললেন, ওর খেলা বা না খেলা নিয়ে যে অনিশ্চয়তা, আমার মনে হয় না এটা টিমকে অ্যাফেক্ট করে। করলে তা মেনে নেওয়া হতো না।
তামিম: দেখেন, আপনার এই প্রশ্নের খুব ভালো উত্তর দিতে পারবে টেস্ট ক্যাপ্টেন। আমি আসলে ওইভাবে চিন্তা করিনি।
তামিম: আমার কাছে মনে হয়, সব কটিই সমান। আপনি একটাকে বড় করবেন, একটাকে ছোট করবেন; আমি এ জিনিসটা পছন্দ করি না। আমরা ইংল্যান্ডকে যখন হারাই, ইংল্যান্ড বিশ্বের ১ নম্বর দল।
আমরা যখন অস্ট্রেলিয়াকে হারাই, তখন কেউ চিন্তাও করতে পারত না বাংলাদেশ টেস্টে অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে পারে। ওই মুহূর্তের জন্য ওটা সবচেয়ে বড় জয় ছিল। আমরা নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছি, এটাও দারুণ একটা অ্যাচিভমেন্ট। কোনোটা বড় নয়, কোনোটা ছোট নয়।