'এ' দলের হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে আছেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী
'এ' দলের হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে আছেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী

‘এ’ দলের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর

মৃত্যুঞ্জয়ে মুগ্ধ মিঠুন

অভিজ্ঞ কিন্তু জাতীয় দলের বাইরে—এমন খেলোয়াড়ের সঙ্গে তরুণ ও অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা ক্রিকেটারদের নিয়ে গড়া ‘এ’ দল নিয়েই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গেছে বাংলাদেশ। সেন্ট লুসিয়ায় দুটি প্রস্তুতি ম্যাচেই বাগড়া বাধিয়েছে বৃষ্টি। প্রথম ম্যাচের পর ড্র হয়েছে দ্বিতীয় ম্যাচেও, দুই ম্যাচেই খেলা হয়েছে এক ইনিংস করে। ‘এ’ দলের অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন বলছেন, জয়ের লক্ষ্য নিয়েই গিয়েছিলেন তাঁরা। সেটি পূরণ হয়নি, তবে বোলারদের পারফরম্যান্সে খুশি তিনি। বিশেষ করে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর বোলিংয়ে মুগ্ধ হয়েছেন মিঠুন।

বেশ কিছুদিন চোটের সঙ্গে লড়াই করা মৃত্যুঞ্জয় প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ক্রিকেটে ফিরেছেন, আলোও ছড়াচ্ছেন। সর্বশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেও আলো ছড়িয়েছিলেন বাঁহাতি পেসার। ওয়েস্ট ইন্ডিজে প্রথম ম্যাচে সুযোগ না পেলেও দ্বিতীয় ম্যাচে একমাত্র ইনিংসে ১৪ ওভার বোলিং করেছেন, ৩৮ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট।

দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের বোলাররা করেছেন ১১৫.১ ওভার, নিতে পেরেছেন ৫টি উইকেট। তবে বোলারদের পারফরম্যান্সে খুশিই হয়েছেন মিঠুন। বিসিবির দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘আমার মনে হয়, সব মিলিয়ে আজকের দিনে যেহেতু বোলিং ও ফিল্ডিং করেছি। ফিল্ডিং খুব ভালো হয়েছে, আমি খুশি। সঙ্গে সঙ্গে বিশেষত স্পিনাররা, আমাদের দেশে তো স্পিনাররা সব সময় ভালো করে। আজকেও তারা দারুণ বল করেছে। উইকেটে তাদের জন্য খুব একটা সাহায্য ছিল না। তারপরও তারা ধৈর্য ধরে এক জায়গায় বল করেছে, এটা তাদের ইকোনমি দেখলে বোঝা যায়।’

বোলারদের পারফরম্যান্সে খুশি 'এ' দলের অধিনায়ক মিঠুন

মিঠুন আলাদা করে বলেছেন মৃত্যুঞ্জয়ের কথাও, ‘হয়তো স্কোরবোর্ড সেটা দেখাচ্ছে না, ওরা কত ভালো বল করেছে। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে আমি খুশি। টেস্ট ম্যাচে যে ধৈর্য দরকার, আমি ওটা দেখেছি। সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুঞ্জয় খুব “ইম্প্রেসিভ”। ওর বোলিং খুব ভালো লেগেছে। যতক্ষণ বল করেছে, প্রচেষ্টা ভালো ছিল। খালেদ চেষ্টা করেছে, ও হয়তো আরেকটু ভালো করতে পারত। কিন্তু সব মিলিয়ে ফিল্ডিং ও বোলিংয়ে আমি খুশি।’

প্রথম ম্যাচে মাত্র ১৫৮.৫ ওভারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে হয়েছে ২৪১.৫ ওভার। তবে সেন্ট লুসিয়ার ড্যারেন স্যামি স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ম্যাচের উইকেট নিয়ে হতাশাই প্রকাশ করেছেন মিঠুন, ‘সত্যি বলতে, উইকেটের ওপরে ফল নির্ভর করে। আমার মনে হয়নি, বিশেষ করে দ্বিতীয় ম্যাচের উইকেট ফল আনার মতো ছিল। বৃষ্টির কারণে খেলা হয়নি, তবে হলে হয়তো ড্রয়ের দিকেই যেতে পারত। হয়তো চার দিন খেলা হলে একটু ভিন্ন হতো। তবে উইকেটে চাপ পড়েনি, তরতাজা ছিল একেবারেই। এক ইনিংস করে খেলা হয়েছে যেহেতু।’

ফজলে রাব্বী, খালেদ আহমেদ, মুকিদুল ইসলামের সঙ্গে মৃত্যুঞ্জয় (বাঁয়ে)

জেতার লক্ষ্য থাকলেও কন্ডিশনের কারণে সেদিকে যেতে পারেননি তাঁরা, জানিয়েছেন মিঠুন, ‘এটা আমাদের কাছে একদম নতুন এক কন্ডিশন। সবকিছুই আমাদের বিপক্ষে ছিল। আমরা বাংলাদেশ থেকে যে লক্ষ্য নিয়ে এসেছি, অবশ্যই জেতার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু পরিবেশটা ও রকম ছিল না। তারপরও সব মিলিয়ে বলব, আমরা যে লক্ষ্য নিয়ে খেলেছি, পুরোপুরি পূরণ না হলেও আমি খুশি।’

আর ‘এ’ দলের কোচ মিজানুর রহমান বলেছেন, ‘এ’ দলের এ সফরই খেলোয়াড়দের পরবর্তীতে জাতীয় দলের হয়ে কাজে লাগবে, ‘যে মানসিকতা নিয়ে এসেছি, যে প্রস্তুতি ছিল…এক দেশ থেকে আরেক দেশে গেলে যে সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়, শুরুতে আমাদের সেসব ছিল। এগুলোই বড় শিক্ষা। ‘এ’ দলে এসব শিখে জাতীয় দলে খেলব। শুরুতে সহজাত খেলাই খেলেছি, বাউন্সের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারিনি। যে কারণে আমরা ১৬৭ রান করেছি, কম ওভার খেলেছি। অভিজ্ঞদের মধ্যে মিঠুনই শুধু ফিফটি করেছে। তারা ভুল বুঝতে পেরেছে পরে।’

সব মিলিয়ে দলের খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সে খুশিই হয়েছেন তিনি, ‘এটা শিক্ষার জায়গা। কয়েকজন অভিজ্ঞ থাকে, কয়েকজন নতুন খেলোয়াড় থাকে। যতটুকু উন্নতি হয়েছে, তাতে খুশি। দীর্ঘ সংস্করণে যে দুই ম্যাচ হলো, তাতে খুশি। নির্বিঘ্নে খেলা হলে হয়তো ফল পক্ষে না-ও আসতে পারত, তবুও আমি খুশিই হতাম।’

আগামী ১৬, ১৮ ও ২০ আগস্ট তিনটি এক দিনের ম্যাচ হবে একই মাঠে।