৩ উইকেট নেন বেন স্টোকস
৩ উইকেট নেন বেন স্টোকস

‘লাল’ দিনে উজ্জ্বল দক্ষিণ আফ্রিকা, স্টোকসের বোলিংয়ে ইংল্যান্ডের লড়াই

সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক অ্যান্ড্রু স্ট্রাউসের প্রয়াত স্ত্রী রুথের নামে গঠিত ফাউন্ডেশনের সহায়তায় লর্ডস সেজেছিল লাল রঙে। সেই লাল দিনেই প্রোটিয়া বিষে নীল হয়েছিল ইংলিশরা। কাগিসো রাবাদার ৫ উইকেটের পর ডিন এলগার ও সোরেল এরভইয়ারের ব্যাটিংয়ে দ্বিতীয় দিন চা-বিরতিতে প্রোটিয়ারা গিয়েছিল টেস্টের পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। তবে বিরতির পরই ঘুরে দাঁড়াল ইংল্যান্ড। শেষ সেশনে স্বাগতিকেরা নিয়েছে ৫ উইকেট, যার ৩টিই নিয়েছেন বেন স্টোকস। দক্ষিণ আফ্রিকা অবশ্য দিন শেষ করেছে ১২৪ রানে এগিয়ে থেকে। ৪১ রানের ইনিংসে পর কেশব মহারাজ ফিরে গেলেও দিন শেষে ৪১ রানেই অপরাজিত মার্কো ইয়ানসেন। তাঁর সঙ্গী কাগিসো রাবাদা।

১৬৫ রানে প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে যাওয়ার পর বোলিংয়ের শুরুটাও ইংল্যান্ডের জন্য ছিল হতাশার। প্রথম উইকেট পেতে তাদের অপেক্ষা করতে হয় ২৩তম ওভার পর্যন্ত। অষ্টম ওভারে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যাওয়া ডিন এলগার আউট হন ৪৭ রান করে, সেটিও অদ্ভুতভাবে। জেমস অ্যান্ডারসনের লেগ সাইডের বাইরের বলে ডিফেন্ড করতে গিয়েছিলেন প্রোটিয়া অধিনায়ক, থাইপ্যাড থেকে বল গিয়ে লাগে হাতে, সেখান থেকে পায়ের পেছন দিক দিয়ে লাগে স্টাম্পে। তাতেই ভাঙে ৮৫ রানের উদ্বোধনী জুটি। এলগারের ওই উইকেট দিয়েই ১৯৯৪ সালে গ্রাহাম গুচের পর ৪০ পেরোনো বয়সে উইকেট নেওয়া প্রথম ইংলিশ বোলার হয়ে গেছেন অ্যান্ডারসন।

এলগার ফিরলেও কিগান পিটারসেনের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে আরও ৫৩ রান যোগ করেন এরভিয়ার। ম্যাথু পটসের বলে পিটারসেন স্লিপে জনি বেয়ারস্টোর হাতে ধরা পড়লে ভাঙে সে জুটি। পিটারসেন করেন ৪১ বলে ২৪ রান। দক্ষিণ আফ্রিকা চা-বিরতিতে যায় মাত্র ৭ রানে পিছিয়ে থেকে, ৮ উইকেট হাতে নিয়ে।

ঝড় তোলেন ইয়ানসেন ও মহারাজ

চা-বিরতির পরপরই আঘাত করেন জ্যাক লিচ। টার্ন করে বেরিয়ে যাওয়া বলে খোঁচা দিয়ে ফেরেন এইডেন মার্করাম। রেসি ফন ডার ডুসেনকে নিয়ে এরপর অবশ্য এগোচ্ছিলেন এরভইয়ার। তাঁদের জুটি ভাঙেন বেন স্টোকস। ইংল্যান্ড অধিনায়কের আক্রমণাত্মক বোলিংয়ে হার মানতে হয় এরভইয়ারকে। স্টোকসের বাউন্সারের জবাব ছিল না তাঁর কাছে, বেন ফোকসের হাতে ধরা পড়ার আগে ১৪৬ বলে করেন ৭৩ রান। পরের ওভারে ফন ডার ডুসেনকেও ফেরান স্টোকস। ফুল লেংথের বলে এলবিডব্লু হন ডুসেন, রিভিউ নিয়েও বদলাতে পারেননি নিতিন মেননের সিদ্ধান্ত।

কাইল ভেরেইনার আগে মার্কো ইয়ানসেনকে পাঠিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা, তবে এরপর জুটি বাঁধতে হয় দুজনকেই। সে জুটি ভাঙেন স্টুয়ার্ট ব্রড। তাঁর হালকা মুভমেন্টের বলে কট-বিহাইন্ড হন ভেরেইনা। লর্ডসে ব্রডের সেটি ১০০তম উইকেট। ইংল্যান্ডকে এরপর আরেক দফা হতাশ করেন কেশব মহারাজ ও মার্কো ইয়ানসেন। ৭০ থেকে ৭৪—এ ৫ ওভারে দুজন মিলে তোলেন ৪১ রান। আবার ইংল্যান্ডকে স্বস্তি দেন স্টোকস, তাঁর বাউন্সারে ক্যাচ তোলেন ৪৯ বলে ৪১ রান করা মহারাজ। সপ্তম উইকেটে মহারাজ ও ইয়ানসেন মাত্র ৭৫ বলে যোগ করেন ৭২ রান।

৫ উইকেট নেন কাগিসো রাবাদা

এর আগে দিনের পঞ্চম ওভারে কাগিসো রাবাদার ফুল লেংথের বলটা স্টাম্পে ডেকে আনেন ওলি পোপ, যিনি জীবন পেয়েছিলেন প্রথম ওভারেই। আগের দিনের সঙ্গে তিনি যোগ করেন ১২ রান, ৭৩ রানের ইনিংসে মারেন ৫টি চার। পোপ আউট হওয়ার পরই কার্যত ২০০ রানের আশা শেষ হয়ে যায় ইংল্যান্ডের। এর পরের উইকেটটিও রাবাদার, এবার পয়েন্টে ক্যাচ দেন ২০ বলে ১৫ রান করা স্টুয়ার্ট ব্রড। মাঝে জ্যাক লিচকে ফেরান মার্কো ইয়ানসেন। শেষে জেমস অ্যান্ডারসনকে এলবিডব্লু করে নিজের পঞ্চম উইকেট নেন রাবাদা। দক্ষিণ আফ্রিকা পেসারের ক্যারিয়ারে ইনিংসে এটি ১২তম বার ৫ উইকেট নেওয়া।