সাফ ফুটবলে পাঁচ ম্যাচেই অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। আরও ছয়জন খেলেছেন বদলি হিসেবে। ছয়জন মাঠে নামার সুযোগ পাননি। তারপরও সবাই এই বিজয়ের অংশীদার। সাফজয়ী বাংলাদেশ দলের ২৩ খেলোয়াড়ের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি লিখেছেন বদিউজ্জামান
এ মুহূর্তে যদি কুইজের প্রশ্ন হয়, বর্তমান জাতীয় নারী দলের মাঝমাঠে আস্থার প্রতীক কে? একবাক্যে সবাই মারিয়া মান্দার নামটাই বলবেন। ময়মনসিংহের কলসিন্দুরের প্রত্যন্ত গ্রাম মন্দিরগোনা থেকে উঠে আসা মারিয়া দিন দিন হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশ জাতীয় নারী দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সদ্য শেষ হওয়া সাফে বাংলাদেশের মাঝমাঠও যেন একাই দখল করে রেখেছিলেন। প্রতিপক্ষের রক্ষণ থেকে উড়ে আসা বলগুলো রিসিভ করে কী দারুণভাবেই না সারা মাঠে খেলাটা ছড়িয়ে দিয়েছেন!
২০১৪ সালে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ চ্যাম্পিয়নশিপের বয়সভিত্তিক জাতীয় দল দিয়ে শুরু মারিয়ার। এরপর টানা খেলছেন বয়সভিত্তিক ও জাতীয় দলে। ২০১৭ সালে অনূর্ধ্ব-১৫ নারী সাফের চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক ছিলেন। ২০২১ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ নারী সাফের চ্যাম্পিয়ন দলেরও। এবারের সাফে নেপালে ছিলেন সহ-অধিনায়ক। সাফ ও এএফসির বয়সভিত্তিক দলের সব সাফল্যে বড় ভূমিকা ছিল গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকপড়ুয়া মারিয়ার।
২০১১ সালের বঙ্গমাতা স্কুল ফুটবল টুর্নামেন্টের আবিষ্কার মারিয়া। ছোটবেলা থেকেই মারিয়া মাঠে প্রতিপক্ষের সঙ্গে লড়াই করেছেন। মাঠের বাইরেও লড়েছেন জীবনের সঙ্গে। মারিয়া তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় তাঁর বাবা মারা যান। এরপর মা এনতা মান্দা চার ভাইবোনকে নিয়ে লড়াই শুরু করেন। মারিয়ার মা ধানের মৌসুমে ধান লাগাতেন। মৌসুম শেষে ধান কাটার কাজ করতেন। এ জন্য দিনে পেতেন ২০০ টাকা পারিশ্রমিক।
ফুটবল খেলেই এখন মারিয়ার জীবনটা পুরোপুরি বদলে গেছে। বাংলাদেশের মেয়েদের ফুটবলের বদলে যাওয়ার গল্পটা মারিয়াদের হাত ধরেই শুরু, সেটা না বললেও চলছে।