এক দশকের বেশি সময় পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই খেলে চলেছেন সিদ্দিকুর রহমান। অবশেষে দেশসেরা এই গলফারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের মালিকানাধীন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান মোনার্ক মার্ট।
আগামী দুই বছরের জন্য মোনার্ক মার্ট সিদ্দিকুরকে পৃষ্ঠপোষকতা করবে। এই সময়ের মধ্যে সিদ্দিকুর যতগুলো টুর্নামেন্টে অংশ নেবেন, এর পুরো বিমানভাড়া, অনুশীলনের জন্য ভ্রমণ, আবাসনসহ অন্যান্য সব খরচ বহন করবে প্রতিষ্ঠানটি। এর বদলে সিদ্দিকুরের জার্সি ও গলফের সরঞ্জাম বহনকারী ব্যাগে থাকবে মোনার্ক মার্টের লোগো। পাশাপাশি মোনার্ক মার্টের শুভেচ্ছাদূতও করা হয়েছে সিদ্দিকুরকে।
এ উপলক্ষে রাজধানীর একটি হোটেলে আজ দুই পক্ষের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি সই হয়েছে। মোনার্ক মার্টের পক্ষে চুক্তিতে সই করেছেন প্রতিষ্ঠানের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম।
১১ বছর পর স্পনসর পেলেন সিদ্দিকুর। সর্বশেষ ২০১১ সালে গ্রামীণফোন স্পনসর করেছিল তাঁকে। এর পর থেকে অনেক চেষ্টা করেও কোনো স্পনসর জোগাড় করতে পারেননি সিদ্দিকুর। ব্যক্তিগত খরচেই এত দিন খেলে চলেছেন। এমনও হয়েছে স্পনসরের অভাবে অনেক টুর্নামেন্টে খেলতেই যেতে পারেননি। গত বছর বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ) এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছিলেন সিদ্দিকুর। চেয়েছিলেন সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘ মেয়াদে উচ্চতর অনুশীলনে যেতে। কিন্তু সেবার কোনো জায়গা থেকেই সহযোগিতা পাননি। শেষ পর্যন্ত নিজের খরচেই যুক্তরাষ্ট্রে অনুশীলন করতে গিয়েছিলেন।
সাকিব আল হাসানের ব্যক্তিগত উদ্যোগে সিদ্দিকুর পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছেন বলে জানালেন মোনার্ক মার্টের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম, ‘অন্য খেলার খেলোয়াড়দের সহযোগিতা করতেই সাকিব আল হাসান এমন উদ্যোগ নিয়েছেন। স্পনসরের অভাবে অনেক সময় অনেক খেলোয়াড়েরা বিভিন্ন টুর্নামেন্টে খেলতে পারেন না। তাঁদের জন্য কিছু করার তাগিদ সব সময়ই আছে সাকিবের। সেটার অংশ হিসেবে এবার সিদ্দিকুরের পাশে দাঁড়ানো।’
এশিয়ান ট্যুরের টুর্নামেন্ট শিনহান ডংঘায়ে ওপেনে খেলতে আগামীকাল জাপান যাচ্ছেন সিদ্দিকুর। সাকিব আল হাসানের প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে উচ্ছ্বসিত তিনি। তিনি বলেন, ‘সাকিবের সঙ্গে এ ব্যাপারে সরাসরি কোনো কথা হয়নি আমার। তবে অবশ্যই এটা আমার জন্য বড় অনুপ্রেরণা। কারণ, তিনি আমাদের দেশের কিংবদন্তি ক্রিকেটার। আমাকে উনার প্রতিষ্ঠানের শুভেচ্ছাদূত করেছে, এ জন্য আমি গর্বিত। আমার খুব ভালো লাগছে। আমি খেলার মাঠে নিজের সেরাটাই দেব, যাতে তাদের কোনো অনুশোচনা না থাকে। দিন শেষে যেন আমরা দুই পক্ষই একটা ভালো অবস্থানে থাকতে পারি।’
এত দিন নিজের খেলার খরচ নিজেকেই বহন করতে হতো সিদ্দিকুরের। টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার এই প্রক্রিয়াটাকে ভালো খেলার জন্য বাড়তি চাপ মনে হতো তাঁর। তবে এবার নির্ভার হয়েই খেলতে চান সিদ্দিকুর, ‘অবশ্যই এখন আমার দায়িত্ব আরও বেড়ে গেল। এর মানে এই নয় যে আমি আরও চাপ নিচ্ছি। তবে এটা সত্য, এখন আমি অনেকটা স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে পারব। আমি যত বেশি নির্ভার হয়ে খেলতে পারব, পারফরম্যান্স তত ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।’