রোমান–দিয়া, আর্চারির জুটি থেকে জীবনের জুটি
রোমান–দিয়া, আর্চারির জুটি থেকে জীবনের জুটি

জীবনেও জুটি বাঁধলেন রোমান–দিয়া

‘বিয়ে করলে বরকত বাড়ে, সে হিসেবে দুজন মিলে ভালো কাজ হবে। আমরা দুজন একসঙ্গে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করব। আল্লাহ যদি চান, তাহলে আমাদের হাত দিয়ে অলিম্পিকে সোনা আসবে।’

কথাগুলো বললেন দিয়া সিদ্দিকী। জাতীয় দলের সতীর্থ আর্চার রোমান সানার সঙ্গে আজ বিয়ের পর এভাবেই অনুভূতি জানালেন তিনি।

এর আগে আমাদের একটা সম্পর্ক ছিল, সেটা আজকে পরিপূর্ণতা পেল। আল্লাহ পাকের কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।
রোমান সানা, আর্চার

রোমান-দিয়া যুগল খেলার মাঠেই শুধু সীমাবদ্ধ থাকল না, সংসারজীবনেও জুটি বেঁধেছেন তাঁরা। ২০২১ সালে সুইজারল্যান্ডে বিশ্বকাপ আর্চারির স্টেজ–২–এ রিকার্ভ মিশ্র ইভেন্টে রুপা জেতে এই জুটি। রোমান সানা ও দিয়া সিদ্দিকীর বিয়ে হলো আজ নীলফামারীতে। বেলা আড়াইটার দিকে শহরের আশা কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছে। দিয়ার বাড়ি নীলফামারী জেলা শহরের নীলকুঞ্জ আবাসিক এলাকায়।

বিয়ের পর অনুভূতি জানতে চাইলে রোমান সানা বলেন, ‘এর আগে আমাদের একটা সম্পর্ক ছিল, সেটা আজকে পরিপূর্ণতা পেল। আল্লাহ পাকের কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। আমি মনে করি, বিয়ের পর বরকত বাড়ে। আশা করি, ইনশা আল্লাহ, আমরা দুজন মিলে সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করব যেন বাংলাদেশকে আর্চারিতে অন্য লেভেলে নিয়ে যেতে পারি।’

আর্চারির অনুশীলন ক্যাম্পে রোমান ও দিয়া

রোমান সানা আরও বলেন, ‘সব সময় আমরা চেষ্টা করেছি একে অন্যের পাশের থাকতে। আমি যতটুকু সমর্থন দিতে পেরেছি, ও সব সময় আমার চেয়ে বেশি সমর্থন দিয়েছে আমাকে। এখন যেহেতু সে আমার সহধর্মিণী, সে হিসেবে আশা করি আরও দ্বিগুণ সমর্থন দিতে পারবে। এর আগে হয়তোবা পেছন থেকে সমর্থন দিত। কিছু বাধ্যবাধকতা ছিল। এখন সেটা থাকছে না। এখন খোলামেলাভাবে ভালো কিছু হবে।’

বিয়ের অনুষ্ঠানে ছিলেন বাংলাদেশ আর্চারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজীবউদ্দীন আহমেদ, সহসভাপতি আনিসুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম, আর্চারি ফেডারেশনের উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ উপকমিটির চেয়ারম্যান ফারুক ঢালী, কোচ মার্টিন ফ্রেডরিখ, নীলফামারী পৌরসভার মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদসহ জেলার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

কাজী রাজীবউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘আমরা যারা অভিভাবক আছি, আমাদের সবার কামনা একটাই, ওরা স্বাচ্ছন্দ্যে দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করুক।  ক্রীড়ঙ্গনে আমরা অনেক ভালো ভালো স্বপ্ন তো দেখছি। ওরা যেন স্বাধীনভাবে খেলতে পারে, তাহলে উন্নতি হবে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের। ওদের গতি বাড়ানোর জন্যই এই বিয়ের আয়োজন। এ জন্যই রোমান সাম্রাজ্যে দিয়ার আবির্ভাব।’

আর্চারির মঞ্চে দিয়া ও রোমান

তাঁর সংযোজন, ‘আর্চারি একটা নতুন খেলা। সে তুলনায় আমাদের অর্জন বেশি। এটা কিন্তু ওদের জন্যই হয়েছে। আমরা সবার পক্ষ থেকে দোয়া করব, ওরা যেন সুখী দাম্পত্য জীবন কাটাতে পারে, আর্চারিতে আরও বেশি মনোযোগ দিতে পারে। সামনে অলিম্পিক কোয়ালিফিকেশন আছে। ওরা যেন আরও বেশি মনোযোগ দেয়। তাহলে ওদের স্বপ্ন সফল হবে।’

বিয়েতে ছিলেন রোমানের মা বিউটি বেগম, বড় ভাই বিপ্লব সানা, বোন লুবনা আক্তার, ভগ্নিপতি মেহেদী হাসান, চাচা রোকন সানাসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা।

দিয়ার পরিবার থেকে ছিলেন তাঁর বাবা সাংবাদিক নূর আলম সিদ্দিকী, মা শাহানাজ বেগম, দুই ভাই সৌহার্দ সিদ্দিকী ও সাজিদ সিদ্দিকী। পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়েতে কাজী ছিলেন আবদুল আজিজ। বিয়ে পড়ান, নীলকুঞ্জ আবাসিক এলাকার জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মো. জাকির হোসেন। উকিল হন দিয়ার ফুফা একটি টিভি চ্যানেলের রংপুরের প্রতিনিধি আনজারুল ইসলাম।