জুয়াইরিয়া ফেরদৌস জয়িতা একই দিনে জিতেছেন তিন খেলায় সোনা
জুয়াইরিয়া ফেরদৌস জয়িতা একই দিনে জিতেছেন তিন খেলায় সোনা

একই দিনে তিন খেলায় সোনাজয়ী, কে এই জয়িতা

শেখ কামাল দ্বিতীয় যুব গেমসে একই দিনে তিনটি খেলায় সোনা জিতে চমক দেখিয়েছেন জুয়াইরিয়া ফেরদৌস জয়িতা।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার বনানী আর্মি স্টেডিয়ামে শটপুটে প্রথম সোনা জেতেন ঝিনাইদহের মেয়ে জুয়াইরিয়া ফেরদৌস জয়িতা। দুপুরে মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে মেয়েদের হকির ফাইনালে চট্টগ্রাম বিভাগকে ১-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে খুলনা বিভাগ। জয়িতা আবার খুলনার অধিনায়ক। এরপর সন্ধ্যায় মেয়েদের কাবাডির ফাইনালে জয়িতার দল খুলনা হারায় বরিশালকে।

জয়িতার ভাগ্য ভালো যে তিনটি খেলা একই সময়ে পড়েনি। না হলে হয়তো এক দিনে তিন সোনা জিতে আলো কাড়াটা তাঁর পক্ষে সম্ভব হতো না। আর্মি স্টেডিয়ামে সকালে ইভেন্ট করেই চলে আসেন বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম চত্বরে। এখানে হকি ও কাবাডি স্টেডিয়াম কাছাকাছি হওয়ায় দুটিতেই নামতে পেরেছেন কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে।

ক্রিকেট, কাবাডি, অ্যাথলেটিক্‌স, হকি—জয়িতা পারদর্শী এসব খেলাতে

অ্যাথলেটিসে থ্রো ইভেন্টে পারদর্শী জয়িতা ক্রিকেট, হকিও ভালো খেলেন। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–২১ নারী হকি দলে খেলেছেন। ২০১৯ সালে এশিয়ান হকি ফেডারেশন কাপ অনূর্ধ্ব–২১ এ বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করার অভিজ্ঞতা তাঁকে খেলার দুনিয়ায় আরও টেনেছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের অধীন জাতীয় অনূর্ধ্ব–২১ ক্যাম্পে ছিলেন। তবে চূড়ান্ত দলে জায়গা পাননি।

ক্রিকেটে জাতীয় স্তরে জায়গা করে নেওয়া এখন তাঁর বড় লক্ষ্য। তবে খেলতে চান হকিও। একই দিনে তিন সোনা জিতে উচ্ছ্বসিত জয়িতা সেটাই বলেন, ‘আমি ক্রিকেটে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে চাই। তবে হকিও যেহেতু খেলি তাই দুটি খেলাতেই থাকতে চাই।’

মা সুরাইয়া বেগম ঝিনাইদহ শহরে ফজর আলী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের শারীরিক শিক্ষিকা। ফলে মা জানেন খেলাধুলার গুরুত্ব কী? মেয়েকে তিনি খেলার ব্যাপারে ছোট থেকেই সহায়তাই করেছেন। মেয়ের সাফল্যে মা এখন ভীষণ খুশি। মেয়ের সঙ্গে ঢাকায় এসে আজ ফোনে সুরাইয়া বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‌‘আমি স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিভিন্ন ক্রীড়া টিম করি। জয়িতা এগুলো কাছ থেকে দেখেছে। বড় আপুদের কোলে কালো বড় হয়েছে সে। এভাবেই খেলার প্রতি ভালোবাসা জন্মেছে ওর।’

জয়িতার হাতে হকির শিরোপাও

সুরাইয়া বেগমের দুই সন্তানের বড়জন ছেলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ এমবিএ শেষ করেছেন ছেলে। ভাইয়েরও সহায়তা পয়েছেন জয়িতা। ফজর আলী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছেন। মায়ের ইচ্ছা মেয়ে আগামীতে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হবেন,‌ ‘সে ভার্সিটির শিক্ষক হলে আমি খুশি হব।’ তবে মায়ের ইচ্ছা মেয়ে খেলাধুলায় আরও ভালো করবে আগামীতে, ‘আমি চাই সে খেলাধুলা চালিয়ে যাক। খেলার পাশাপাশি খেলোয়াড় তৈরির সংগঠক হোক।’

সেই আশা নিয়েই সুরাইয়া বেগম আজই ঢাকা থেকে ফিরছেন ঝিনাইদহ। সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন জয়িতাকেও।