চীনে পৌঁছানোর পর বিমানবন্দরে বাংলাদেশের টিটি খেলোয়াড়েরা
চীনে পৌঁছানোর পর বিমানবন্দরে বাংলাদেশের টিটি খেলোয়াড়েরা

বাংলাদেশের টিটিতে চীনা টনিক

২৫ জনের বিশাল এক টেবিল টেনিস দল অনুশীলন ক্যাম্প করতে গত রোববার চীনের হুনান প্রদেশে গেছে। বাংলাদেশ থেকে এত বড় টেবিল টেনিস দলের কোথাও অনুশীলনে যাওয়া এটাই প্রথম। নবীনদের গড়ে তুলতে ৪২ দিনের এ সফরে ১১ জন ছেলে, ৯ জন মেয়েসহ খেলোয়াড় ২০ জন। সম্প্রতি শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত দক্ষিণ এশিয়া টিটিতে খেলা ১৪ খেলোয়াড় আছেন দলে। ১০-১৩ বছরের খেলোয়াড়দের মধ্যে মেধার ভিত্তিতে বাছাই করা হয়েছে বাকি ছয়জনকে। দলে আছেন চার কোচ এবং একজন সমন্বয়কারী।

চীনে এই অনুশীলন ক্যাম্প আয়োজন করতে পেরে টিটি ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সহসভাপতি খন্দকার হাসান মুনীর দারুণ খুশি, ‘এক বছর ধরে বাংলাদেশের ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ চীনা দূতাবাসের সঙ্গে কথা বলে এই অনুশীলনের ব্যবস্থা করেছে। এর সব খরচ বহন করবে চীনা সরকার। ভবিষ্যতেও এটা চালু রাখতে চীন সম্মতি দিয়েছে।’

বাংলাদেশের টিটিতে অনেক সময়ই বিদেশি কোচ এসেছেন। ২০১৬ সালে উত্তর কোরিয়া কোচ কিম সুং হানকে পাঁচ মাসের জন্য আনে টিটি ফেডারেশন। সঙ্গে আসেন অনুশীলন পার্টনার কিম সু গান। পরে আসেন ভারতের কোচ আংসুল গার্গ, ফ্রান্সের কোচ সারাহ হানফু, ভারতের অভিষেক মুখার্জি এবং সর্বশেষ বিখ্যাত কোচ মিহির ঘোষ। টিটি ফেডারেশন স্বল্প মেয়াদের জন্য এনেছিল তাঁদের। এবার বড় একটা দলকে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হলো চীন।

টিটি ফেডারেশনের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। টিটি খেলোয়াড়দের জন্য নতুন এক দরজাই খুলেছে এতে। পাঁচবারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন ও বাংলাদেশ টিটি খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতির সভাপতি মানস চৌধুরীও এটিকে স্বাগত জানাচ্ছেন। তবে চীনে প্রশিক্ষণের জন্য খেলোয়াড়-কোচ নির্বাচন নিয়ে তাঁর আছে ভিন্নমত, ‘যাঁদের পাঠালে ভালো হতো তাঁদের না পাঠিয়ে অন্যদের পাঠানো হয়েছে।’

ছয়বারের সাবেক জাতীয় চ্যাম্পিয়ন মাহবুব বিল্লাহও এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে মানসের মতো খেলোয়াড়-কোচ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনিও। ঘরোয়া খেলা নিয়মিত না হওয়া নিয়েও অসন্তুষ্ট তিনি, ‘লিগ, টুর্নামেন্টগুলো অন্তত প্রতিবছর নিয়মিত হওয়া দরকার। কিন্তু তা তো হয় না। ফেডারেশনের কার্যক্রম খুবই হতাশাজনক।’ হাসান মুনীর অবশ্য দাবি করেছেন, যোগ্য খেলোয়াড়-কোচদেরই চীনে পাঠানো হয়েছে।

অবশ্য করোনায় খেলা বন্ধ থাকার পর আট মাস উডেনফ্লোর ব্যবহারেরই অনুপযোগী ছিল। ওই সময়টায় খেলা হতে পারেনি। বাকি সময়টা সূচি মেনে নিয়মিত আয়োজনগুলো হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রায় এক বছর আগেই মেয়াদ শেষ হওয়া বাংলাদেশ টিটি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শেখ জাহাঙ্গীর আলম, ‘গত চার বছরে দুবার জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ ও একবার বাংলাদেশ গেমস হয়েছে। বাংলাদেশ গেমসকে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন ধরলে তিনবার হয়েছে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ। চার বছরে দুবার লিগ, দুবার ফেডারেশন কাপ করেছি। চার বছরে পাঁচটা র‍্যাঙ্কিং টুর্নামেন্ট হয়েছে। কাজেই খেলা অনিয়মিত বললে তো হবে না। আমরা বিশ্বাস করি, চীনে ৪২ দিনের প্রশিক্ষণে ভালো ফল বয়ে আনবে।’