উগান্ডার পতাকা গায়ে জড়িয়ে সোনার হাসি জোশুয়া চেপতেগেইয়ের
উগান্ডার পতাকা গায়ে জড়িয়ে সোনার হাসি জোশুয়া চেপতেগেইয়ের

রেকর্ড গড়ে উগান্ডাকে সোনা এনে দিলেন চেপতেগেই

ইথিওপিয়া দলের সব কৌশল ভন্ডুল করে দিয়ে ছেলেদের অ্যাথলেটিকসে ১০ হাজার মিটার ইভেন্টে সোনার পদক জিতছেন উগান্ডার জোশুয়া চেপতেগেই। স্তাদে দে ফ্রান্সে গতকাল রাতে চেপতেগেই ২৬ মিনিট ৪৩.১৪ সেকেন্ডে ফিনিশ লাইন ছুঁয়ে অলিম্পিক রেকর্ডও গড়েছেন। আগের রেকর্ড ছিল ইথিওপিয়ার কেনেনিসা বেকেলের; ২০০৮ বেইজিং অলিম্পিকে এই ইভেন্টে দৌড় শেষ করতে ২৭ মিনিট ১.১৭ সেকেন্ড সময় নিয়েছিলেন তিনি।

ছেলেদের অ্যাথলেটিকসে ১০,০০০ মিটার ইভেন্টে বিশ্ব রেকর্ডটা (২৬ মিনিট ১১ সেকেন্ড) চেপতেগেইরই। এবার অলিম্পিক রেকর্ডও গড়লেন। তিনবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন এই দৌড়বিদ ২০২০ টোকিও অলিম্পিকে রুপা জিতেছিলেন। এবার অলিম্পিক রেকর্ডের সঙ্গে সোনা জয়ের আক্ষেপও ঘোচালেন। প্যারিস অলিম্পিকে এটাই উগান্ডার প্রথম পদক। ২৬ মিনিট ৪৩.৪৪ সেকেন্ড সময় নিয়ে কাল এই ইভেন্টে রুপা জিতেছেন ইথিওপিয়ার বেরিহু আরেগায়ি। তাঁর চেয়ে মাত্র ০.০২ সেকেন্ড পর ফিনিশ লাইন স্পর্শ করে ব্রোঞ্জ জিতেছেন যুক্তরাষ্ট্রের গ্রান্ট ফিশার।

উগান্ডাকে সোনার পদক এনে দেওয়ার পর ২৭ বছর বয়সী চেপতেগেই জানিয়েছেন, বেইজিংয়ে বেকেলেকে রেকর্ড গড়তে দেখেই অনুপ্রাণিত হয়েছেন তিনি, ‘তরুণেরা জীবনে যা অর্জন করতে চায়, তা অর্জন করাই তাদের স্বপ্ন। ১৬ বছর আগে বেইজিংয়ে গ্রেট কেনেনিসা বেকেলেকে জিততে দেখেছি। তখন থেকেই এটা আমার হৃদয়ে লালন করেছি। আমি বলেছিলাম, কোনো না কোনো দিন আমি অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন হব।’

২৬ সেকেন্ড ৪৩.১৪ সেকেন্ড সময় নিয়ে অলিম্পিকে ছেলেদের অ্যাথলেটিকসে ১০ হাজার মিটার ইভেন্টে রেকর্ড গড়েছেন চেপতেগেই

টোকিওর হতাশা প্যারিসে দূর করতে পেরে তাঁর পদকতালিকা আরও সমৃদ্ধ হলো বলে মনে করেন চেপতেগেই, ‘অনেক দিন ধরে এটা (অলিম্পিকে ১০,০০০ মিটারে সোনার পদক) জিততে চেয়েছি। টোকিওতে রুপা পাওয়ার পর হতাশ ছিলাম। এবার আমি আরও সাহস নিয়ে দৌড়েছি। তিনবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হলেও এই পদক মিস করছিলাম। এখন আমি নিজের সংগ্রহে এটা যোগ করতে পারব। এটা আমার কাছে চমকপ্রদ ব্যাপার।’

অ্যাথলেটিকসের লড়াই দেখতে কাল স্তাদে দে ফ্রান্সে প্রায় ৬৯ হাজার দর্শক এসেছিলেন। ২৫ ল্যাপের এই প্রতিযোগিতায় প্রথম কাউকে এগিয়ে থাকতে দেখা যায় দ্বিতীয় ল্যাপে।

এরপর কৌশল অবলম্বন করতে দেখা যায় ইথিওপিয়ার ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন সেলেমন বারেগা ও তাঁর সতীর্থ ইয়োমিফ কেজেলচা ও আরেগায়িদের। তাঁরা অদল-বদল করে পথের দখল রেখে নিজেদের একজনের সামনে থাকা নিশ্চিত করে এগিয়ে যেতে থাকেন। উগান্ডার হয়ে চেপতেগেইয়ের সঙ্গে দৌড়ে ছিলেন মার্টিন মাগেনগো ও জ্যাকব কিপলিমো। তিনজনই দৌড়ের গতি বাড়াতে শুরু করলে ইথিওপিয়ানদের সঙ্গে লড়াই জমে ওঠে। যদিও ততক্ষণে ১৫ ল্যাপ পেরিয়ে গিয়েছিল।    

কানাডার মোহাম্মদ আহমেদ ও কেনিয়ার বেনার্ড কিবেটও ততক্ষণে ইথিওপিয়ার কেজেলচাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে শুরু করেন। সেটা বুঝতে পেরে ১০ ল্যাপ বাকি থাকতে নিজ ট্র্যাকে ফেরেন বারেগা। এবার চেপতেগেই ও যুক্তরাষ্ট্রের ফিশারের চ্যালেঞ্জের সামনে পড়েন বারেগা। ফলে ইথিওপিয়ার হয়ে আবারও দৌড়াতে শুরু করেন কেজেলচা। ফিনিশ লাইন থেকে ১ কিলোমিটার দূরে থাকতে কেজেলচার জায়গায় ফেরেন আরেগায়ি। ইথিওপিয়াকে সোনা জেতানোর পথেই ছিলেন তিনি।

শেষ মুহর্তে সবাইকে পেছনে ফেলেন উগান্ডার চেপতেগেই

কিন্তু শেষ ৪০০ মিটারের বেল বাজার ঠিক আগমুহূর্তে চেপতেগেই সবাইকে পেছনে ফেলেন। শেষ পর্যন্ত ইথিওপিয়ার আরেগায়ির চেয়ে ৩০ সেকেন্ড আগে ফিনিশ লাইন ছুঁয়ে উগান্ডাকে প্রথম সোনা এনে দেন চেপতেগেই।