যুক্তরাষ্ট্রের ডাইভার অ্যালিসন গিবসন
যুক্তরাষ্ট্রের ডাইভার অ্যালিসন গিবসন

পদক নয়, যুক্তরাষ্ট্রের ডাইভারের মূল লক্ষ্য যখন কেনিয়ার শিশুরা

অলিম্পিকে একটা পদক—অ্যাথলেটের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন নিশ্চয়ই এমনই। যুক্তরাষ্ট্রের ডাইভার অ্যালিসন গিবসন অবশ্য শুধু একটা পদক জিততেই প্যারিসে যাননি। তাঁর স্বপ্নটা যে পদকের চেয়েও বড়!

গিবসনের সে স্বপ্নের সঙ্গে জড়িয়ে আছে কেনিয়ার শিশুদের ভবিষ্যৎও। অলিম্পিকে যাওয়া গিবসনের লক্ষ্য একটাই—শিশুদের জন্য তহবিল জোগাড় করা।

রয়টার্সকে গিবসন বলেছেন, ‘অলিম্পিক ট্রায়ালের আগে এবং অলিম্পিক ট্রায়ালের সময় শুধু ভেবেছি—যদি অলিম্পিকে যেতে পারি, তাহলে একটা উদ্যোগ নিতে পারব সব শিশুর জন্য তহবিল জোগাড় করতে!’

এ ক্ষেত্রে গিবসনের অনুপ্রেরণা ম্যারি কামাউ। তিনি হোপ ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি দাতব্য উদ্যোগের নির্বাহী পরিচালক। যে সংস্থার লক্ষ্য কেনিয়াজুড়ে স্কুল ও হাসপাতাল গড়ে তোলা। তাঁর সঙ্গে আলোচনার পরই কামাউকে এ ক্ষেত্রে সহায়তার সিদ্ধান্ত নেন গিবসন।

অলিম্পিকে এবার একটা অন্য লক্ষ্য আছে গিবসনের

গিবসন বলেন, ‘একটা শিশুর স্পনসর ছিলাম। সেখানে বসে ভাবছিলাম, “আমি তো আরও এমন করতে চাই, আরও বেশি করতে চাই। আমি সহায়তা করতে চাই।” অলিম্পিক ট্রায়ালের ফাইনালে গিয়ে আমার শুধু মনে হয়েছে, “ঈশ্বর, দয়া করে সাহায্য করুন অলিম্পিকে যেতে। যাতে আমি এটি শুরু করতে পারি।’”

শেষ পর্যন্ত প্যারিসে সুযোগ পেয়েছেন গিবসন। এখন তাঁর মূল লক্ষ্যই শিশুদের জন্য তহবিল জোগাড় করা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের পতাকাবাহী বাস্কেটবল কিংবদন্তি লাব্রন জেমসের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পেরেছেন।

জেমসের সঙ্গে আলোচনার ব্যাপারে গিবসন বলেন, ‘সে বলেছে, “আচ্ছা ফোনটা দাও, নোটস (অ্যাপ) ওপেন করো। ফোনটা দিলাম, সে নোটস ওপেন করে তার ফাউন্ডেশনের সিএমওর (প্রধান বিপণন কর্মকর্তা) নাম টাইপ করে বলল, “তাকে ই–মেইল করো।” সে এটাও বলেছে, “আমি কোনো প্রতিজ্ঞা করতে পারছি না।” কিন্তু এটাও বলেছে, “তাকে ইমেইল করো, এরপর দেখা যাবে আমরা কী করতে পারি।”’

গিবসন যাঁর জন্য জেমসের কাছে গিয়েছিলেন, সেই কামাউ তাঁর স্বামীর সঙ্গে ২০০০ সালে শুরু করেছিলেন হোপ ইন্টারন্যাশনাল। এখন পর্যন্ত কেনিয়ায় ৩৫টি স্কুল গড়েছেন তাঁরা। যাতে পড়ে ৩০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী।

কামাউ রয়টার্সকে বলেন, ‘গত ২৫ বছরে আমরা অনেক কিছু শিখেছি। তবে এই নড়বড়ে সম্প্রদায়ের প্রয়োজনটা বুঝেছি।’

টোকিওতে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর গিবসন অবসর নিয়েছিলেন। তবে মহৎ উদ্যোগের কথা ভেবেই অবসর ভেঙে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। গিবসনকে নিয়ে মাকাউ বলেন, ‘আমি তার জন্য বেশ রোমাঞ্চিত। অনেক খুশি। পাগলের মতো প্রার্থনা করছি তার জন্য। আমি চাই, সে যাতে অলিম্পিকে জেতে। আমার মনে হয় সে আমার জীবনের বড় একটা অংশ এখন। সে হোপ ইন্টারন্যাশনালের অংশ। আমরা বাচ্চাদের জীবনে প্রভাব রেখে যে পরিবর্তন আনছি সেটির অংশ। সে এই গল্পের অংশ।’

মেয়েদের ৩ মিটার স্প্রিংবোর্ড ডাইভিংয়ের প্রাথমিক পর্বে গিবসন অংশ নেবেন ৭ আগস্ট। সে ইভেন্টে কেনিয়া থেকে যে বেশ কয়েকজোড়া চোখ নজর রাখবে, সেটি বলাই যায়!