ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিজেই বলেছেন অলিম্পিক শেষে তাঁর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে ইচ্ছা করছে না
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিজেই বলেছেন অলিম্পিক শেষে তাঁর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে ইচ্ছা করছে না

অলিম্পিক শেষে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে ইচ্ছা করছে না ফরাসিদের

‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’—অলিম্পিক গেমস পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ক্রীড়া আসর, খেলাধুলা নিয়ে সবচেয়ে বড় আয়োজনও। আর এ আয়োজন সফল করাকে জাতীয় গৌরবের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। অলিম্পিক আয়োজন করে সারা দুনিয়াকে দেখিয়ে দেওয়া যায়, নিজ দেশের সামর্থ্য। প্যারিসে অলিম্পিক আয়োজন করে ফ্রান্সও গর্বিত। দেশটির প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ বলেছেন, এবারের অলিম্পিক আয়োজন তাঁর দেশের সত্যিকারের পরিচয় বিশ্বদরবারে তুলে ধরেছে। তিনি এবারের অলিম্পিককে ‘সফল এক আয়োজন’ বলেছেন।

ইমানুয়েল মাখোঁ মনে করেন অলিম্পিক আয়োজন করে ফ্রান্স তাঁর আসল চেহারা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেছে

পরশু অলিম্পিক শেষে এখন দেশটি ফিরে যাবে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায়। ব্যাপারটা যেন একটু মনই খারাপ করে দিচ্ছে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের। এলিসি প্রাসাদে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি সেই মনোভাবই তুলে ধরেছেন, ‘অলিম্পিক শেষ। আমরা আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাব। কিন্তু আমাদের যে ফিরতে ইচ্ছা করছে না।’

অলিম্পিক শুরুর দিনই দুষ্কৃতকারীদের হামলায় গোটা ফ্রান্সের রেল যোগাযোগ ব্যাহত হয়। অলিম্পিক আয়োজনই হয়েছে ফ্রান্সের বেশ কিছু রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে। কিন্তু তারপরও অলিম্পিকের আয়োজনটা যথেষ্ট ভালো হয়েছে বলেই মনে করেন বিশ্লেষকেরা। রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই অলিম্পিক গেমস ফরাসিদের দৈনন্দিন জীবনকে আনন্দময় করেছে। মাখোঁ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সেটিই বলেছেন, ‘অলিম্পিক আয়োজন করে মনে হচ্ছে, গুমোট ভাবটা কিছুটা হলেও কেটেছে।’

কাল পর্দা নেমেছে প্যারিস অলিম্পিক–উৎসবের

ইতিহাসের সর্বাধিক ক্রীড়াবিদ এবারের অলিম্পিকে অংশ নিয়েছেন। সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষ প্যারিসে গেছেন অলিম্পিক উপভোগ করার জন্য। এমনকি সবচেয়ে বেশি গণমাধ্যমকর্মীও এবারের অলিম্পিক গেমসের অংশ হয়েছেন। এত বিশাল আয়োজনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা, যাঁরা ক্রিড়াবিদ, ভক্ত ও গণমাধ্যমকর্মীদের সার্বিক নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিলেন, তাঁদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন মাখোঁ, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অনেক নাশকতার পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিয়েছেন।’

আনন্দময় অলিস্পিক আয়োজন শেষে ফ্রান্সের সামনে এখন রাজনৈতিক সংকটের চোখ রাঙানি

ফ্রান্সে সম্প্রতি পার্লামেন্ট নির্বাচনে কোনো দলই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ না করায় যে রাজনৈতিক সমস্যার জন্ম হয়েছে, সেটি আবারও দেখা দেবে। মাখোঁর সরকারের প্রধানমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল আতাঁলের মেয়াদ শেষ হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনে বামপন্থী জোট, ডানপন্থী জোট ও মাখোঁর মধ্যপন্থী দলের কেউই জেতেনি। অলিম্পিকের সময় গ্যাব্রিয়েল আতাঁল দায়িত্ব পালন করলেও নির্বাচনের পর নতুন একজন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত না হওয়ায় যে সংকট, অলিম্পিকের পর সেটি আরও ঘণীভূত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।