যেকোনো দাবাড়ুর কাছেই বিশ্বকাপে খেলা স্বপ্নের ব্যাপার। ফাহাদ রহমান সেই স্বপ্ন পূরণ করেছিলেন ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে। বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ দাবাড়ু হিসেবে ১৬ বছর বয়সে বিশ্বকাপ দাবায় খেলেছিলেন ফাহাদ। চার বছর পর আবারও বিশ্বকাপের টিকিট পেয়েছেন এই আন্তর্জাতিক মাস্টার। আজ ঢাকায় এশিয়ান জোনাল দাবায় অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপে যাচ্ছেন ফাহাদ। এ বছরই জুলাই-আগস্টে আজারবাইজানের বাকুতে হচ্ছে বিশ্বকাপ দাবা। অন্যদিকে, প্রথমবারের মতো মহিলা বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেয়েছেন মহিলা ক্যান্ডিডেট মাস্টার জান্নাতুল ফেরদৌস।
২০১৯ সালের মার্চে ঢাকায় বিশ্বকাপ দাবার বাছাইয়ের ওপেন বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ফাহাদ প্রথমবার পেয়েছিলেন বিশ্বকাপের টিকিট। এবার পেলেন এশিয়ান জোনাল দাবায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে। টুর্নামেন্টের অষ্টম রাউন্ড শেষে দ্বিতীয় স্থানে থাকা দাবাড়ুদের চেয়ে আধা পয়েন্ট এগিয়ে ছিলেন ফাহাদ। সেই অগ্রগামিতা ধরে রেখে আজ শেষ রাউন্ডে ফাহাদ হারিয়েছেন শরিফ হোসেনকে। নয় ম্যাচে সাড়ে সাত পয়েন্ট নিয়ে তিনিই চ্যাম্পিয়ন।
চ্যাম্পিয়ন হয়ে ফাহাদ প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘টুর্নামেন্টে আমি এগিয়ে ছিলাম শেষ দিকে এসে। তাই আত্মবিশ্বাসী ছিলাম, চ্যাম্পিয়ন হতে পারব। শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন হয়ে ভালো লাগছে। আমার কাছে টুর্নামেন্টটা সহজ বা কঠিন কিছুই মনে হয়নি। আমি নিজের সেরাটাই দিয়েছি।’
জান্নাতুলও বিশ্বকাপের টিকিট পেয়েছেন একই টুর্নামেন্টে মহিলা বিভাগে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে। শেষ রাউন্ডে জান্নাতুল ড্র করেছেন নেপালের লোহানি সুজনার সঙ্গে। তাঁর পয়েন্ট সাত।
এশিয়ান জোনাল দাবায় নিয়ম হলো, গ্র্যান্ডমাস্টার বা আন্তর্জাতিক মাস্টার ছাড়া অন্য কেউ চ্যাম্পিয়ন হলে সরাসরি আন্তর্জাতিক মাস্টার খেতাব পাবেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক মাস্টার ফাহাদ চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় এই সুযোগ নিতে পারেনি ফিদে মাস্টারদের কেউ। তবে মহিলা বিভাগে চ্যাম্পিয়ন জান্নাতুল ফিদে মাস্টার হওয়ায় তিনি সরাসরি আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার খেতাব পাবেন। অবশ্য ফিদের নতুন নিয়মে রেটিং ২০০০–ঊর্ধ্ব না হওয়া পর্যন্ত এই খেতাব পাবেন না তিনি। জান্নাতুলের রেটিং এখন ১৭০৪। টুর্নামেন্ট থেকে বাংলাদেশের বড় প্রাপ্তি বলতে জান্নাতুল। এ ছাড়া শরিফ হোসেন ও নাঈম হকের ক্যান্ডিডেট মাস্টার থেকে ফিদে মাস্টার হওয়ায় একটা প্রাপ্তি।
ওপেন বিভাগে ছোটদের কেউ বড় কোনো চমক দিতে পারেনি। অষ্টম রাউন্ড শেষে ছয় পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন আন্তর্জাতিক মাস্টার মিনহাজ উদ্দিন, ফিদে মাস্টার তাহসিন তাজওয়ার জিয়া, শেখ নাসির আহমেদ, ক্যান্ডিডেট মাস্টার শরীফ হোসেন ও শ্রীলঙ্কার ফিদে মাস্টার লিয়ানাগে রানিনদু দিলশান। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শেষ রাউন্ডের খেলা চলছিল।
ভারত বাদে দক্ষিণ এশিয়ার বাকি ৬ দেশ নিয়ে আয়োজিত এশিয়ান জোনাল দাবা ৩.২ অঞ্চলের খেলায় বাংলাদেশের দাবাড়ুরাই ছিলেন ফেবারিট। ফলাফলেও ব্যতিক্রম কিছু হয়নি।