বাংলাদেশ অধিনায়ক আরদুজ্জামানকে পাগড়ি পরিয়ে দেন কাবাডি ফেডারেশন সভাপতি ও পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল–মামুন (বাঁয়ে) এবং প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল
বাংলাদেশ অধিনায়ক আরদুজ্জামানকে পাগড়ি পরিয়ে দেন  কাবাডি ফেডারেশন সভাপতি ও পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল–মামুন (বাঁয়ে) এবং প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল

বাংলাদেশের কাবাডিতে এমন অবসর কে কবে দেখেছে

বাংলাদেশের কোনো কাবাডি খেলোয়াড় ঘটা করে জাতীয় দল থেকে অবসর নিচ্ছেন—এই দৃশ্য কেউ কখনো দেখেছেন?

অচেনা সেই দৃশ্যই আজ দেখা গেল মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়ামে। চতুর্থ বঙ্গবন্ধু কাপ কাবাডির ফাইনালে বাংলাদেশের শিরোপা জয়ের দিনে আন্তর্জাতিক কাবাডি থেকে অবসর নিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক আরদুজ্জামান মুন্সি। বিদায়টা তাঁর বেশ রঙিনই হলো। এমন দিনে হয়েছেন ম্যাচসেরা। ১২ দলের টুর্নামেন্টে যেটি তাঁর তৃতীয় ম্যাচসেরার পুরস্কার।

ফাইনাল শেষে বাংলাদেশের আনন্দ উৎসবের মধ্যে সব আলো কেড়ে নেন বাগেরহাট থেকে উঠে আসা ৩৮ বছর বয়সী আরদুজ্জামান। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘আমি আন্তর্জাতিক কাবাডি থেকে অবসর নিয়েছি, কিন্তু কাবাডি থেকে সরে যাইনি। ঘরোয়া কাবাডি খেলব। গত এশিয়ান গেমসে আমাদের ভালো করা উচিত ছিল। চাইনিজ তাইপের সঙ্গে আমাদের ম্যাচটা ভালো হয়নি, কিন্তু আমাদের দল ভালো। আমি আশাবাদী পরের এসএ গেমসে আমরা রুপা পাব। এশিয়ান গেমস, বিশ্বকাপেও ভালো করব।’

বাংলাদেশের জার্সিতে ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচে সেরা খেলোয়াড় আরদুজ্জামান

আরদুজ্জামানের দৃষ্টিতে কাবাডিতে এখনো ভারতই এক নম্বর, দুইয়ে ইরান আর তিনে বাংলাদেশ। তবে বাস্তবে বাংলাদেশ চলে গেছে পাঁচ–ছয়ে। তিনি অবশ্য বলেছেন, এক–দুটি ম্যাচ খারাপ করায় এশিয়াডে ফল খারাপ হয়েছে। বাংলাদেশ দল হিসেবে এখনো কিছু করার ক্ষমতা রাখে।

২০০৯ সালে আন্তর্জাতিক কাবাডি শুরু করেন আরদুজ্জামান। ১৫ বছর খেলে আজ নিলেন অবসর। লম্বা খেলোয়াড়ি জীবন নিয়ে নিজেই বলেন, ‘আমি মূলত গ্রামে হাডুডু খেলতাম। তারপর সাধারণ কোটায় পুলিশে চাকরি নিই। ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে কাবাডিতে যোগ দিই। ২০০৯ সালে বাংলাদেশের সেরা খেলোয়াড় হয়ে প্রথমবার জাতীয় দলে সুযোগ পাই।’

প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের কাছ থেকে শিরোপা বুঝে নিচ্ছেন আরদুজ্জামান

বিদায়বেলায় কোনো আক্ষেপ কি আছে? আরদুজ্জামান সরাসরি উত্তর না দিয়ে একটু ঘুরিয়ে বলেন, ‘আসলে দেখুন, পাওয়া না–পাওয়ার মধ্যেই মানুষের জীবন চলে। তারপরও আমার বিদায়টা অনেক সুন্দর হয়েছে। কাবাডির ইতিহাসে এত সুন্দর বিদায় কাউকে দেওয়া হয়নি। আমি বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনকে ধন্যবাদ জানাই।’

নিজের সবচেয়ে বড় সাফল্যের কথা বলতে গিয়ে তৃপ্তিও ঝরেছে তাঁর কণ্ঠে, ‘২০১৬ সালে আমি বিশ্বকাপে তৃতীয় সেরা খেলোয়াড় হই। ২০০৯ সালে ইনডোর এশিয়ান গেমসে ব্রোঞ্জ পাওয়ার কথাও বলব। সব মিলিয়ে নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে আমি খুশি।’