জাতীয় প্রতিযোগিতায় প্রথমবার এসেই ১০০ মিটার স্প্রিন্ট জিতে যাওয়া যেকোনো তরুণ-তরুণীর কাছেই স্বপ্ন। আজ সেই স্বপ্নই পূরণ হয়ে গেল দেলোয়ার হোসেন সাইদীর।
শেরপুরের তরুণ দেলোয়ার বিকেএসপির সাভার শাখায় নবম শ্রেণিতে পড়ছে। প্রথমবার জাতীয় প্রতিযোগিতায় এসে এবং ১০০ মিটার জিতে সে বলল, ‘জাতীয় প্রতিযোগিতায় এর আগে কখনো অংশ নিইনি। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেও আসা হয়নি। প্রথমবার এসেই দ্রুততম মানব হয়েছি। এর চেয়ে আনন্দের কিছু হতে পারে না। ধন্যবাদ জানাই বিকেএসপিকে। পরিবারও সমর্থন দিয়েছে। তাদের অবদানেই এই সাফল্য পেয়েছি।’
বাংলাদেশের দ্রুততম মানব ইমরানুর রহমান দেলোয়ারের আদর্শ। একদিন ইমরানুরের মতো বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করার স্বপ্ন দেখে ছেলেটি, ‘আগামী দিনে এসএ গেমসে ভালো করতে চাই। আশা করি আমি সেটা পারব।’ নিজের সাফল্যের পেছনে বিকেএসপির অবদানের কথা আলাদাভাবে বলেছে দেলোয়ার।
বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন আয়াজিত জাতীয় জুনিয়র অ্যাথলেটিকসে বরাবর দেখা যায় বিকেএসপির আধিপত্য। সেটাই স্বাভাবিক। কারণ, বিকেএসপিতে আছে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা। যেটি নেই জেলায়। সেটারই প্রতিফলন দেখা গেল এবারের শেখ কামাল ৩৮তম জাতীয় জুনিয়র অ্যাথেলেটিকসেও। তবে জেলা থেকে খেলোয়াড় সেভাবে উঠে না আসার প্রমাণও এটি।
পাশাপাশি বলতেই হয়, ইলেকট্রনিক বোর্ডে ধরা খেলোয়াড়দের টাইমিংও এ যুগে বলার মতো নয়। বালক অনূর্ধ্ব-১৬ বিভাগে দ্রুততম মানব হওয়া শিপন মিয়া সময় নিয়েছে ১১.৩৭ সেকেন্ড। বালিকা অনূর্ধ্ব-১৬ বিভাগে দ্রুততম মানবী মিম আক্তারের সময় লেগেছে ১২.৭০ সেকেন্ড। কিশোর বিভাগে দেলোয়ারের সময় লেগেছে ১১.২০ সেকেন্ড। কিশোরী বিভাগে সুমাইয়া আক্তারের লেগেছে ১২.৪৯ সেকেন্ড।
নওগাঁর মেয়ে সুমাইয়া বিকেএসপির একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। বাবা মারা গেছেন বছর চারেক আগে। বড় এক ভাই আছেন। মা একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় চাকরি করেন। তবে আত্মবিশ্বাস ছিল ভালো করবে এবং নিজের কাছে নিজের প্রত্যাশা পূরণ করবে।
প্রতিবারই জাতীয় জুনিয়র অ্যাথলেটিকস থেকে এমন নতুন মুখ বেরিয়ে আসে। কিন্তু সমস্যা হলো, যত্নের অভাবে বেশির ভাগ হারিয়ে যায় অকালে। দেশের অ্যাথলেটিকস অঙ্গন সেই খবরও আর রাখে না।