পরিচিত সাংবাদিকের সঙ্গে দেখা হলেই বলতেন, ‘আসেন না একদিন আরমানিটোলা স্কুলে। বাচ্চাদের নিয়ে আমার হকি কোচিংটা দেখে যাবেন।’
তাঁর অনুরোধে সাড়া দিয়ে অনেক সাংবাদিকই পুরান ঢাকার আরমানিটোলা স্কুলে গেছেন। যেখানে এলাকার ছোট ছোট ছেলেদের হকি শেখাতেন ফজলুল ইসলাম। দিনে দিনে যিনি হয়ে ওঠেন ‘ফজলু ওস্তাদ’। বাংলাদেশের মৃতপ্রায় হয়েও হকি যে এখনো টিকে আছে তাতে বড় অবদান ফজলুর। রাসেল মাহমুদ জিমিসহ পুরান ঢাকা থেকে অনেক খেলোয়াড় তৈরি করেছেন, যাঁরা জাতীয় দলে আলো ছড়িয়েছেন। তিনি নিজে একসময় হকি খেলেছেন ঢাকার শীর্ষ লিগে।
নিবেদিতপ্রাণ সেই হকি খেলোয়াড়, সংগঠক, কোচ ফজলু ওস্তাদ আর নেই। আজ সকালে ষাটোর্ধ্ব এই কোচের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে হকি অঙ্গনে নেমে আসে শোকের ছায়া।
পুরান ঢাকা থেকে উঠে আসা জাতীয় দলের সাবেক স্ট্রাইকার রফিকুল ইসলাম কামাল শোকে কাতর। প্রিয় ওস্তাদকে হারিয়ে তিনি প্রায় বাকরুদ্ধ। প্রথম আলোকে বললেন, 'আজ সকালে ওনার মেয়ে ফোন করে আমাকে বলল, আব্বা পড়ে গেছেন, হাত ভেঙে গেছে, নিশ্বাস নিচ্ছেন না। শুনে বলার মতো অবস্থা ছিল না আমার। তখন পৌনে দশটা বাজে। বললাম, মা বাসায় কেউ নাই? এটা বলার সময় ফোনটা রেখে দেয় তাঁর মেয়ে। আধঘণ্টা পর জানত পারলাম মিটফোর্ড হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা গেছেন ফজলু ওস্তাদ।
বাংলাদেশের হকি জন্য তাঁর মৃত্যু এক অপূরণীয় ক্ষতি। কারণ এমন নিবেদিতপ্রাণ হকি কোচ বাংলাদেশে আর চোখে পড়ে না। তাঁর পুরো জীবনটাই ছিল হকিময়। হকি ছাড়া আর কিছু বুঝতেন না। তারই স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন এশিয়ান হকি ফেডারেশনের সম্মাননা। পেয়েছেন আরও কিছু পুরস্কারও।