আগামী জুনে ওমানে অনুষ্ঠেয় জুনিয়র এশিয়া কাপে খেলা নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ
আগামী জুনে ওমানে অনুষ্ঠেয় জুনিয়র এশিয়া কাপে খেলা নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ

হকির আকাশে হতাশা

বিকেএসপির খেলোয়াড়দের হাত ধরেই যত সাফল্য

হকিতে আন্তর্জাতিক সাফল্য আসছে, কিন্তু সেটি মূলত বিকেএসপির খেলোয়াড়দের হাত ধরে। বাংলাদেশের ঘরোয়া হকি মানে শুধুই হতাশার গল্প। কোথায় আটকে গেল হকি, তা জানার চেষ্টা প্রথম আলোর—

গত মাসে জুনিয়র এএইচএফ কাপে (অনূর্ধ্ব-২১) চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশ দল যখন পুরস্কার মঞ্চে উৎসব করছিল, পাশেই হতাশ মুখে দাঁড়িয়ে ছিলেন ওমানের সাত কোচিং স্টাফ। অথচ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলের সঙ্গে কোচ ও সহকারী কোচ ছাড়া আর কেউই ছিলেন না। তবু অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন বাংলাদেশের যুবারা। সেরা পাঁচে থেকে নিশ্চিত করেছেন আগামী জুনে ওমানে অনুষ্ঠেয় জুনিয়র এশিয়া কাপে খেলা।

ওমানে এই সাফল্য এসেছে মাত্র ২০ দিন অনুশীলন করে। আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের অল্পদিনের ক্যাম্প করাটা যেন বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের অলিখিত রেওয়াজ। স্বল্প প্রস্তুতি, সুযোগ–সুবিধার অপ্রতুলতা, হকিতে অনিশ্চিত ক্যারিয়ার—তারপরও বাংলাদেশ জাতীয় বা বয়সভিত্তিক হকি দলগুলো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে ভালোই সাফল্য পাচ্ছে। এতে অবশ্য ফেডারেশন বা ক্লাবগুলোর তেমন কৃতিত্ব নেই। বিকেএসপির খেলোয়াড়দের হাত ধরেই আসছে সাফল্য।

গত বছরের ১১-২০ মার্চ ইন্দোনেশিয়ায় এএইচএফ কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। ৬-১৫ মে থাইল্যান্ডে এশিয়ান গেমস বাছাই হকিতে রানার্সআপ। দুই টুর্নামেন্ট মিলিয়ে বাংলাদেশ টানা ১০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ জিতেছিল, যেটা বাংলাদেশ হকি দলের জন্যই একটা রেকর্ড। ২৩ মে থেকে ১ জুন ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে ষষ্ঠ হয়েছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ এ বছরের জানুয়ারি মাসে জুনিয়র এএইচএফ কাপে হয়েছে চ্যাম্পিয়ন।

বাংলাদেশ জাতীয় হকি দল

সাফল্যের কৃতিত্ব খেলোয়াড়দেরই দিলেন অনূর্ধ্ব-২১ দলের কোচ মামুনুর রশীদ, ‘আমাদের খেলোয়াড়দের স্কিল ভালো। তাই আমি সাফল্যের কৃতিত্ব খেলোয়াড়দেরই দেব। ওদের নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হলে বাংলাদেশ হকিতে আরও এগিয়ে যাবে।’

ঢাকা প্রিমিয়ার হকি লিগে খেলতে বিভিন্ন সময় ঢাকায় এসেছেন বিশ্বের অনেক তারকা খেলোয়াড়। তাঁদেরই একজন গঞ্জালো পিলাত, সদ্য বিশ্বকাপজয়ী জার্মান দলের সদস্য। বাংলাদেশ জাতীয় দলের ডিফেন্ডার আশরাফুল ইসলাম প্রিমিয়ার লিগে মোহামেডানে পিলাতের সতীর্থ ছিলেন। দুজনের মধ্যে ভালো বন্ধুত্বও হয়ে গেছে।

কিন্তু পিলাত অবাক হন দেখে যে বেশির ভাগ সময় অলস বসে থাকেন আশরাফুল। জাতীয় দলের খেলাই যে তেমন থাকে না! তারপরও যে বাংলাদেশ ভালো খেলে, সেটাই বড় বিস্ময় তাঁর কাছে।

আশরাফুলকেও নাকি সেটা বলেছেন তিনি, ‘ও আমাকে প্রায়ই বলে, বিশ্বের কোনো দেশে এমন ফেডারেশন দেখিনি, যারা অনেক দিন পরপর খেলে। তোমরা যদি ধারাবাহিকভাবে খেলতে, তাহলে আরও উন্নতি করতে পারতে।’