প্যারিসে গতকাল রাতে ইতিহাসই গড়েছেন কিউবার রেসলার মিহাইন লোপেজ। অলিম্পিকের ইতিহাসে প্রথম অ্যাথলেট হিসেবে একই ইভেন্টে জিতেছেন টানা পঞ্চম ব্যক্তিগত সোনা। এই অর্জন কতটা অনন্য, তার একটি তুলনা টানা যায়। অলিম্পিকের দুই কিংবদন্তি কার্ল লুইস কিংবা মাইকেল ফেলপসেরও এমন কীর্তি নেই।
আগস্টে ৪২ বছরে পা রাখবেন লোপেজ। গতকাল রেসলিংয়ের ১৩০ কেজি গ্রেকো-রোমান ইভেন্টের ফাইনালে চিলির প্রতিনিধিত্ব করা কিউবান বংশোদ্ভূত ইয়াসমানি আকোস্তাকে হারিয়ে সোনা জেতেন তিনি। এই জয়ের মধ্য দিয়ে লুইস ও ফেলপসের মতো কিংবদন্তিদের পেছনে ফেলেন লোপেজ।
এত দিন একটি ইভেন্টে টানা চারটি ব্যক্তিগত সোনা জয়ে লুইস (অ্যাথলেটিকস/লং জাম্প), মাইকেল ফেলপস (সাঁতার/২০০ মিটার মেডলি), কেটি লেডেকি (সাঁতার/৮০০ মিটার ফ্রিস্টাইল), আল ওয়েরতের (অ্যাথলেটিকস/ডিসকাস), পল এলভেস্ট্রম (সেইলিং) এবং কাউরি ইচোর (রেসলিং) পাশাপাশি ছিলেন লোপেজ। গতকাল তাঁদেরও ছাড়িয়ে গেলেন!
২০২১ টোকিও অলিম্পিকের পর অবসর নিয়েছিলেন লোপেজ। কিন্তু রেকর্ডটি গড়তে আবারও রিংয়ে ফিরে আসেন তিনি। তিন বছর রেসলিংয়ের বাইরে থাকার পরও এবং চারবার মেরুদণ্ডের সমস্যায় ভুগেও প্যারিস অলিম্পিকের এই ইভেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালে ইরানের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আমিন মিরজাজাদেকে হারিয়ে চমকে দেন লোপেজ।
অলিম্পিকে লোপেজের পারফরম্যান্সও ঈর্ষণীয়। ২২ জয়ের বিপরীতে হেরেছেন মাত্র একটি ম্যাচ। সেটা ২০০৪ এথেন্স অলিম্পিকের কোয়ার্টার ফাইনালে। বার্তা সংস্থা এএফপিকে তাঁর কোচ রাউল ত্রুয়িল্লো বলেছেন, ‘গৌরব নিয়ে তার খুব একটা মাথাব্যথা নেই। নিজের আনন্দ এবং খেলার প্রতি ভালোবাসা থেকেই সে এটা করেছে। সৃষ্টিকর্তা যদি তাকে ইতিহাসের সেরা হওয়ার সুযোগ দেন, তবে কেন সে তার সদ্ব্যবহার করবে না?’
জয়ের পরই খেলাটি থেকে অবসর নেন লোপেজ। অবসর নেওয়া রেসলারদের প্রথা অনুযায়ী নিজের জুতা জোড়া রেসলিং ম্যাটের মাঝে রাখেন। এর আগে লোপেজকে উঠে দাঁড়িয়ে সম্মান জানিয়েছেন গ্যালারির দর্শকেরা। অবসর নেওয়ার ইঙ্গিতটা গত সোমবার ফাইনালে উঠেই দিয়েছিলেন লোপেজ, ‘আমাদের তরুণদের সুযোগ করে দিতে হবে। সারা জীবন আমি রেসলিংকেই ভালোবেসেছি।’
অলিম্পিকে একটি ইভেন্টে টানা চারটি ব্যক্তিগত সোনাজয়ী বাকি অ্যাথলেটদের শুধু লেডেকিই এখনো খেলে যাচ্ছেন। ২৭ বছর বয়সী লেডেকি ২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকেও খেললে লোপেজের রেকর্ডটি ভাঙার সুযোগ পাবেন তিনি।