ছয় বছর আগে জাপানে অনুষ্ঠিত এশিয়ান এয়ারগান চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার এয়ার রাইফেলের যুব বিভাগে রুপা জিতেছিলেন অর্ণব শারার। তখন থেকেই রাইফেল ইভেন্টে অর্ণবকে ধরা হচ্ছিল প্রতিভাবান উঠতি শুটারদের একজন হিসেবে।
অথচ পরের বছরগুলোতে ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক কোনো প্রতিযোগিতায়ই সেভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারছিলেন না বিকেএসপির সাবেক শুটার। অবশেষে গতকাল জ্বলে উঠলেন অর্ণব। গুলশান শুটিং রেঞ্জে শুরু হওয়া ৩০তম জাতীয় শুটিং প্রতিযোগিতায় ছেলেদের ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে জিতলেন সোনা।
এই ইভেন্টে অংশ নিচ্ছেন না দেশসেরা শুটার আবদুল্লাহ হেল বাকি। চোটের কারণে প্রিয় ইভেন্টই ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। তবে বাকি না থাকলেও অভিজ্ঞ রাব্বি হাসান মুন্না, শোভন চৌধুরী, রবিউল ইসলামরা ছিলেন। কিন্তু প্রথমবার জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েই তাঁদের টপকে সোনা জিতলেন অর্ণব। তিনি অংশ নিয়েছেন রাজধানী শুটিং ক্লাবের হয়ে।
বাছাইয়ে ৬২৮.৭ পয়েন্ট স্কোর করে প্রথম হয়ে ফাইনালে ওঠেন রাব্বি হাসান। আন্তর্জাতিক মানের এই স্কোর করলে এশিয়ান গেমসের ফাইনাল রাউন্ডে যাওয়া সম্ভব রাব্বি হাসানের পক্ষে। ২০১৮ সালে ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠিত সর্বশেষ এশিয়ান গেমসের বাছাইয়ে রাব্বির এই স্কোরের চেয়েও কম স্কোর করেছিলেন চীনের হুই জিচেং (৬২৭.২ পয়েন্ট)। কিন্তু এবার রাব্বি তাঁর চেয়ে বেশি স্কোর করেছেন ঘরোয়া আসরে। অবশ্য ফাইনালে গিয়ে পারেননি রাব্বি।
বাছাইয়ে আটজনের মধ্যে ষষ্ঠ হয়েছিলেন অর্ণব, তিনি স্কোর করেন ৬১৯.২ পয়েন্ট। অবশ্য ফাইনালে মাথা ঠান্ডা রেখে গুলি ছুড়েছেন তিনি। সোনার পদকের তুমুল লড়াইয়ে অর্ণবের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আর্মি শুটিং অ্যাসোসিয়েশনের তামজিদ বিন আলম। দুজনই প্রথমবার অংশ নেন জাতীয় শুটিং চ্যাম্পিয়নশিপে।
ফাইনালের চাপটা অর্ণব ভালোভাবে সামলালেও তামজিদ শেষ দিকে এসে খেই হারিয়ে ফেলেন।
ফাইনালে প্রতি সিরিজ জিতলে দুই পয়েন্ট করে পান একজন শুটার। নিয়ম অনুসারে যে শুটার সবার আগে ১৬ পয়েন্ট নিশ্চিত করবেন তিনিই চ্যাম্পিয়ন। একটা সময় পর্যন্ত অর্ণব ও তামজিদ সমান তালে লড়েছেন। শেষ পর্যন্ত ১৬-১০ পয়েন্টের ব্যাবধানে তামজিদকে হারিয়ে সোনার হাসি হেসেছেন অর্ণব। ২০-২৭ মার্চ ভারতে অনুষ্ঠেয় শুটিং বিশ্বকাপে অংশ নেবেন তিনি।
২০১৬ সালে হয়েছিল সর্বশেষ জাতীয় শুটিং চ্যাম্পিয়নশিপ। এ প্রতিযোগিতা এখন থেকে প্রতিবছর নিয়মিত চান অর্ণব, ‘এমন প্রতিযোগিতা যদি প্রতিবছর হয়, তাহলে সেটা আমাদের আরও কাজে দেবে।’