এই প্রথমবারের মতো পদকের লড়াইয়ে ছিল আর্চাররা
এই প্রথমবারের মতো পদকের লড়াইয়ে ছিল আর্চাররা

এশিয়াডে রোমান সানাদের পদক জিততে না পারার কারণ জানালেন কোচ

হাংজু এশিয়ান গেমসে খেলতে যাওয়ার আগেই বাংলাদেশ আর্চারি দলের জার্মান কোচ মার্টিন ফ্রেডরিখ বলেছিলেন, ‘এশিয়াড আমাদের আর্চারদের জন্য কঠিন পরীক্ষা। সাফল্য পেতে হলে আর্চারদের সামর্থ্যের পুরোটাই দিতে হবে।’

এশিয়াডের লড়াইয়ে বিশ্বসেরা আর্চারদেরই মুখোমুখি হয়েছিলেন রোমান সানা, দিয়া সিদ্দিকী, হাকিম আহমেদ, সাগর ইসলামরা। সামর্থ্যের পুরোটা কি তাঁরা দিতে পেরেছেন? এবার অবশ্য প্রথমবারের মতো পদকের লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছিল ছেলেদের রিকার্ভ দল। কোয়ার্টার ফাইনালে থাইল্যান্ডকে হারিয়ে সেমিতে ভারতের কাছে হেরে ফাইনালে ওঠা হয়নি। ব্রোঞ্জের লড়াইয়ে ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে শেষ পর্যন্ত আর পেরে ওঠেনি রিকার্ভ দল। ২০১৮ সালে জাকার্তা এশিয়াডে রিকার্ভের ব্যক্তিগত ইভেন্টে রোমান সানার শেষ আটে ওঠাই ছিল এর আগে এশিয়ান গেমসে আর্চারির সেরা সাফল্য।

আর্চারদের মনোযোগ ঘাটতি দেখছেন ফ্রেডরিখ মার্টিন

হাংজুতে ১৬ জন আর্চার গিয়েছিলেন। রোমান, দিয়া, হাকিম, সাগররা রিকার্ভ আর কম্পাউন্ড মিলিয়ে আর্চারির ১০টি ইভেন্টেই অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু ছেলেদের রিকার্ভের দলীয় ইভেন্টে পদকের লড়াইয়ে যেতে পারাই বলতে গেলে সাফল্য। গত শুক্রবার এই ইভেন্টে স্কোরশিটের তুলনামূলক চিত্রে চোখ বোলালেই বোঝা যায়, বাংলাদেশের আর্চারদের সামর্থ্য আছে, কিন্তু ঘাটতি প্রয়োগে। প্রতি সেটেই একই চিত্র।

এশিয়াডে এবারই প্রথম পদক লড়াইয়ে নেমেছিলেন আর্চাররা

প্রতিপক্ষের আর্চাররা প্রতি শটেই ১০ বা ৯ করে স্কোর করেছেন, বাংলাদেশি আর্চাররা ১০, ৯ মারতে মারতে একটি, দুটি শটে ৭-৮, এমনকি ৫-৬-ও মেরেছেন। এই জায়গাতেই ঘাটতি, প্রতিপক্ষের সঙ্গে লড়াইয়ে পিছিয়ে পড়া। কোচ মার্টিন ফ্রেডরিখের আক্ষেপও এই জায়গাতেই, ‘প্রতি শটেই ১০ বা ৯ করে স্কোর করার জন্য আর্চারদের অসম্ভব মনঃসংযোগের প্রয়োজন। প্রতিপক্ষ যেখানে প্রতিটি শটেই ১০, ৯ করে স্কোর করেছে, সেখানে আমাদের আর্চাররা ৫-৬ স্কোরও করেছে। মনোযোগের ঘাটতিই এর কারণ। পুরো মনোযোগ ধরে রেখে লড়াই করতে আরও বেশি পরিশ্রম, আরও বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা জরুরি। ঢাকায় ফিরে এবার মনোযোগের ঘাটতি নিয়েই বেশি কাজ করতে হবে।’

রোমানের দল পদকের লড়াইয়ে থাকলেও দিয়া পারেননি

শুক্রবার থাইল্যান্ডকে ৫-৪ ব্যবধানে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে শেষ চারের লড়াইটা রোমান, হাকিম, সাগররা হেরেছেন ৫-৩ ব্যবধানে। ফ্রেডরিখ ভারতের বিপক্ষে সেমিফাইনালকে বিশ্লেষণ করেছেন এভাবে, ‘এই ম্যাচের প্রথম দুই সেটেই আমরা পিছিয়ে পড়েছি। পরে লড়াইয়ে ফিরলেও ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে। তারপরও শেষ দুই সেটে দুর্দান্ত কিছু করলে খেলাটা টাইব্রেকে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু ওই যে ধারাবাহিকতার অভাব হয়ে যায়। সেটিই হয়েছে।’

ব্রোঞ্জের লড়াইয়ে ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে ৬-০ ব্যবধানে হার বাংলাদেশের। ব্রোঞ্জের লড়াইয়ে একটি সেটেও এগিয়ে যেতে না পারায় হতাশ ফ্রেডরিখ বলছেন, ‘ভারতের কাছে হারের ধাক্কা আমরা নিতে পারিনি। মনোযোগ ফেরাতে পারেনি কেউই। এ ম্যাচে আমাদের আর্চারদের স্কোরিং খারাপ হয়নি। কিন্তু প্রতিপক্ষের চেয়ে আমরা সব সময়ই পিছিয়ে ছিলাম।’