বিশ্ব অ্যাথলেটিকস দিবস সমন্ধে সেভাবে জানেন না বাংলাদেশের অ্যাথলেটরা
বিশ্ব অ্যাথলেটিকস দিবস সমন্ধে সেভাবে জানেন না বাংলাদেশের অ্যাথলেটরা

অ্যাথলেটদের চাওয়া ‘যোগ্য সম্মান’

শিশু-কিশোরদের মধ্যে খেলাধুলার আবেদন ছড়িয়ে দিতে হবে। তাহলেই নতুন প্রজন্মের আগ্রহ বাড়বে খেলায়—এই প্রতিপাদ্য সামনে রেখে ১৯৯৬ সাল থেকে প্রতিবছর ৭ মে বিশ্ব অ্যাথলেটিকস দিবস পালন করে আসছে বিশ্ব অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন। তবে সব দেশে যে ৭ মেতেই দিনটি পালন করে, তা নয়। ৭ মের আশপাশের সুবিধাজনক দিনে যে যার মতো দিবসটি পালন করে। বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন যেমন এবার দিবসটি পালন করবে ১০ মে।

কয়েক বছর ধরে অন্যান্য দেশের মতো বিশ্ব অ্যাথলেটিকস দিবস পালন করে আসছে বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনও। গত বছর সে রকম কোনো আনুষ্ঠানিকতা না থাকলেও ১০ মে সাভারের বিকেএসপিতে দিনব্যাপী ‘কিডস অ্যাথলেটিকস ফেস্টিভ্যাল’ আয়োজনের মাধ্যমে দিনটি উদ্‌যাপন করবে বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন। আন্তর্জাতিক অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনও দিবসটিকে ‘কিডস ডে’ হিসেবে ঘোষণা করেছে।

অ্যাথলেট জহির রায়হান

বিস্ময়কর হলো বাংলাদেশের অ্যাথলেটরা এই দিন সম্পর্কে সেভাবে জানেনই না। প্রচারণার অভাবে এর তাৎপর্য রয়ে যায় আড়ালে। ৪০০ মিটারের জাতীয় রেকর্ডধারী জহির রায়হানের মনেই ছিল না আজ বিশ্ব অ্যাথলেটিকস দিবস ছিল। এই প্রতিবেদকের কাছে সেটি জেনে বললেন, এই দিনে তাঁর চাওয়া খুব বেশি কিছু নয়। চান শুধু একজন অ্যাথলেট হিসেবে যোগ্য সম্মান ও স্বীকৃতি। গত ফেব্রুয়ারিতে এশিয়ান ইনডোর অ্যাথলেটিকসে ৪০০ মিটার দৌড়ে রুপাজয়ী জহির রায়হান বলেছেন, ‘ক্রীড়াঙ্গনে কোনো বৈষম্য চাই না। শুধু চাইব অ্যাথলেট হিসেবে প্রাপ্য সম্মানটুকু যেন পাই।’

এশিয়ান ইনডোরে হাইজাম্পে ব্রোঞ্জ জিতে আলোড়ন ফেলা মাহফুজুর রহমানেরও ধারণা নেই বিশ্ব অ্যাথলেটিকস দিবস সম্পর্কে, ‘এ নিয়ে প্রচারণা চালালে তবেই সবাই জানতে পারবে। আমাদের দেশে এর কোনো প্রচার নেই। ফেডারেশনও জানায় না দিবসটি সম্পর্কে। ফলে অ্যাথলেটরাও অনেকটা অন্ধকারে থাকে।’ বিশ্ব অ্যাথলেটিকস দিবসে তাঁর প্রত্যাশাও সীমিত। জহির রায়হানের মতো করেই বললেন, ‘আমাদের তো আসলে চাওয়া খুব বেশি কিছু নয়। অ্যাথলেটিকসে যখন এসেছি, যথাযথ স্বীকৃতি ও সম্মান চাই।’

হাই জাম্পার মাহফুজুর রহমান

হাইজাম্পে জাতীয় রানারআপ উম্মে হাফসার মতে, বর্তমানে অ্যাথলেটিকসে ভালো ক্যারিয়ার গড়া সম্ভব। জাতীয় পর্যায়ে ভালো করলে চাকরি মেলে। তবে তাঁর আক্ষেপ অন্য জায়গায়, ‘অ্যাথলেটরা যে এত ভালো করছে, মানুষ কিন্তু তা জানে না। কোথায় কখন অ্যাথলেটিকস খেলা হয়, সেটাই জানে না কেউ। প্রচারের অভাবে অনেকে অ্যাথলেটিকসে এসেও আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। খেলাটাকে আরও ছড়িয়ে দিতে হবে।’

বিশ্ব অ্যাথলেটিকস দিবস বলে একটা দিবস আছে, সেটা জানেন গত ফেব্রুয়ারিতে ১৫তম বারের মতো দেশের দ্রুততম মানবী হওয়া শিরিন আক্তার। তবে দিনটা যে আজই ছিল, তা জানা ছিল না। মনে করিয়ে দিতেই বললেন, ‘আমি চাইব, অ্যাথলেটদের জীবনমান যেন আরও ভালো হয়। এই খেলায় এসে ছেলেমেয়েরা যেন প্রতিষ্ঠা পায়, পরিবার নিয়ে ভালোভাবে জীবন কাটাতে পারে—এটাই প্রত্যাশা।’