গলফার সিদ্দিকুর রহমান রোমাঞ্চিত। সৌদি আরবে এশিয়ান ট্যুরের টুর্নামেন্টে বসতে যাচ্ছে বিশ্বের সেরা গলফারদের মেলা। আগামী ৩-৬ ফেব্রুয়ারি জেদ্দার রয়্যাল গ্রিনস গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবে হবে পিআইএফ সৌদি ইন্টারন্যাশনাল গলফ টুর্নামেন্ট। এশিয়ান ট্যুরের এই টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ পেয়ে রোমাঞ্চিত দেশসেরা গলফার।
এশিয়ান ট্যুরের ইতিহাসে অন্যতম সর্বোচ্চ প্রাইজমানি থাকছে এবারের টুর্নামেন্টে। ৫ মিলিয়ন ইউএস ডলারের (প্রায় ৪৩ কোটি টাকা) আকর্ষণীয় প্রাইজমানির এই টুর্নামেন্টে শুধু সিদ্দিকুরই নন, খেলবেন বিশ্বের সেরা অনেক তারকা গলফার।
এই টুর্নামেন্টে সুযোগ পেতে অবশ্য অপেক্ষা করতে হয়েছে সিদ্দিকুরকে। খেলতে পারবেন কি না, তা নিয়ে ছিলেন রীতিমতো সংশয়ে! টুর্নামেন্টে খেলার আগে বাছাইপর্ব খেলতে হয়েছে সিদ্দিকুরকে। ২৩ জানুয়ারি শেষ হওয়া এসএমবিসি সিঙ্গাপুর ওপেন টুর্নামেন্ট ছিল সৌদি ইন্টারন্যাশনাল গলফ টুর্নামেন্টের বাছাই প্রতিযোগিতা।
সেই বাছাইপর্বের ফলের ওপর ভিত্তি করে টুর্নামেন্ট কমিটি সিদ্দিকুরকে প্রথমে অপেক্ষমাণ তালিকায় রাখেন। শেষ পর্যন্ত সৌদি ইন্টারন্যাশনাল টুর্নামেন্টে খেলার ছাড়পত্র মিলেছে সিদ্দিকুরের। জেদ্দার উদ্দেশে আগামীকাল রাতে ঢাকা ছাড়বেন তিনি।
টুর্নামেন্টে খেলবেন দক্ষিণ কোরিয়ার উদীয়মান তারকা ১৯ বছর বয়সী জুইহাং কিম, যাঁর মাথায় শোভা পাচ্ছে সর্বশেষ এশিয়ান ট্যুরের অর্ডার অব মেরিটের মুকুট। অর্ডার অব মেরিট তালিকার সাবেক চ্যাম্পিয়ন থাইল্যান্ডের থংচাই জাইদি, তাঁর স্বদেশি জাজ জানেওয়াত্তানান্দ, ভারতের শুভঙ্কর শর্মা, মালয়েশিয়ার গাভিন গ্রিন, অস্ট্রেলিয়ার স্কট হেন্ডও খেলবেন সৌদি আরবে।
এ ছাড়া খেলবেন বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ের সেরা দশের মধ্যে থাকা গলফার যুক্তরাষ্ট্রের ডাস্টিন জনসন, ব্রিসন দেচামবেউ, সান্দের চাউফেলে এবং ছয়বারের মেজর চ্যাম্পিয়ন ফিল মিকেলসন।
তাঁদের সঙ্গে খেলার সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত সিদ্দিকুর, ‘আমি টুর্নামেন্টের প্রাইজমানির অঙ্ক নিয়ে মোটেও ভাবছি না। সেখানে বিশ্বের অনেক সেরা গলফারের সঙ্গে খেলতে পারব, এটা ভেবেই ভালো লাগছে। চেষ্টা করব নিজের সেরাটা দিয়ে ভালো খেলা উপহার দেওয়ার।’
করোনার কারণে গত বছর আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে খেলতে পারেননি সিদ্দিকুর। ঢাকায় সেভাবে অনুশীলন আর খেলার সুযোগও মিলছিল না। একরকম বাধ্য হয়েই এরপর গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান সিদ্দিকুর। সেখানে ডালাস ও টেক্সাসে নিয়মিত অনুশীলন করেছেন। খেলেছেন কর্ন ফেরি কোয়ালিফাইং স্কুলে।
সেই অনুশীলনের পর সিদ্দিকুর যেন কিছুটা হলেও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছেন, ‘আমার খেলায় ধীরে ধীরে উন্নতি দেখা যাচ্ছে এবং (যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে) যে অনুশীলন করেছি, সেটা নিয়ে অনেক আত্মবিশ্বাসী। ওই অনুশীলনের প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি। যে কারণে আমি একটু রোমাঞ্চিত। এটা ভেবে ভালো লাগছে যে যেসব দুর্বলতা নিয়ে কাজ করেছি, সেটা আস্তে আস্তে কাটিয়ে উঠতে পেরেছি। দু-তিন মাস আগেও যেটা করতে পারিনি, সেটা এখন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে করতে পারছি।’
নির্ভার হয়েই সৌদি আরবে খেলতে চান সিদ্দিকুর। ট্রফি জেতার চেয়ে খেলা উপভোগ করাটাই লক্ষ্য সিদ্দিকুরের, ‘আমি যদি আমার কাজ ঠিকমতো করতে পারি, তাহলে ফল এমনিতেই আসবে। নির্ভার হয়ে খেলতে পারলে এবং খেলাটা উপভোগ করতে পারলে, সেটাই হবে আমার বড় অর্জন। আমার আগের অভিজ্ঞতা দেখে যেটা মনে হয় যে নির্ভার হয়ে খেললে এমনিতেই ভালো কিছু চলে আসে। খেলা উপভোগ করতে পারলে সবকিছুই ভালো হবে। যেটা নিয়ে কাজ করার, সেই বিষয়েই তাই সব মনোযোগ দিচ্ছি।’