বিশ্বকাপে যাচ্ছেন তাঁরা
বিশ্বকাপে যাচ্ছেন তাঁরা

আর্চারি বিশ্বকাপ

বিশ্বকাপে রোমান–দিয়াদের সঙ্গী আশিকুজ্জামান

১৮-২৪ এপ্রিল তুরস্কের আনতালিয়া শহরে বসবে আর্চারি বিশ্বকাপের স্টেজ ওয়ান আসর। এই বিশ্বকাপের জন্য ৯ সদস্যের চূড়ান্ত দলের নাম ওয়ার্ল্ড আর্চারিতে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ আর্চারি ফেডারেশন। বিশ্বকাপে খেলতে তুরস্কের উদ্দেশে বাংলাদেশ দল ঢাকা ছাড়বে ১৫ এপ্রিল।

সর্বশেষ এশিয়া কাপের দলটি অপরিবর্তিত রয়েছে শুধু রিকার্ভ ইভেন্টে। ছেলেদের দলে আছেন রোমান সানা, হাকিম আহমেদ ও সাগর ইসলাম। মেয়েদের দলে দিয়া সিদ্দিকী, নাসরিন আক্তার ও ফাহমিদা সুলতানা। কম্পাউন্ড পুরুষ দলে নতুন মুখ আশিকুজ্জামান। থাইল্যান্ডের এশিয়া কাপ স্টেজ ওয়ানে খেলা সর্বশেষ বাংলাদেশ দল থেকে বাদ পড়েছেন কম্পাউন্ড পুরুষ ইভেন্টের মিঠু রহমান, হিমু বাছার ও সোহেল রানা।

ফাহমিদা সুলতানা, রোমান সানা ও দিয়া সিদ্দিকী

গত ২৯ মার্চ টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়ামে শেষ হওয়া জাতীয় আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে ভালো পারফরম্যান্সের পুরস্কার মিলেছে আশিকুজ্জামানের। কম্পাউন্ড পুরুষ এককে সোনাজয়ী আশিকুজ্জামান জাতীয় প্রতিযোগিতায় গড়ে ১৪৭ পয়েন্ট স্কোর করেছেন। শুধু তা–ই নয়, সোনাজয়ী আশিকুজ্জামান ফাইনালে ১৫০ পয়েন্টের মধ্যে মারেন ১৪৯।

গত বছর নভেম্বরে ঢাকায় হওয়া এশিয়ান আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপের দলে ছিলেন আশিক। এরপর গত মার্চে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপের স্টেজ ওয়ানে বাদ পড়েন। তবে বিশ্বকাপ দলে ফেরার প্রতিজ্ঞা নিয়েই জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে খেলেন আশিকুজ্জামান, ‘খেলা শুরুর আগে কোচ বলেছিলেন জাতীয় প্রতিযোগিতার পারফরম্যান্স দিয়েই বিশ্বকাপ, এশিয়ান গেমসসহ সামনের সব আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার দল নির্বাচন করা হবে। আমার লক্ষ্য ছিল যেভাবেই হোক আবারও দলে সুযোগ করে নেওয়া। সেই চেষ্টা শেষ পর্যন্ত সফল হয়েছে।’

কম্পাউন্ড পুরুষ দলে নতুন মুখ আশিকুজ্জামান

থাইল্যান্ডে এশিয়া কাপ স্টেজ ওয়ানে কম্পাউন্ড নারী দল অংশ নিলেও এবার তুরস্কের বিশ্বকাপে তাদের না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফেডারেশন।

গত বছর মে মাসে সুইজারল্যান্ডের লুসানে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ আর্চারির দ্বিতীয় স্টেজে রিকার্ভ মিশ্র দলগত ইভেন্টে রুপা জেতে রোমান ও দিয়া জুটি। এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেরা অর্জন এটাই। তবে এবার একক ইভেন্টগুলোতেও ভালো কিছু করার আশা বাংলাদেশ কোচ মার্টিন ফ্রেডরিখের। আর কোচের আত্মবিশ্বাসের পালে হাওয়া লাগিয়েছে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এশিয়ান আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে এবং থাইল্যান্ডে এশিয়া কাপে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স।

বনানী আর্মি স্টেডিয়ামে এশিয়ান আর্চারিতে প্রথমবার বাংলাদেশ জেতে ১টি রুপা ও ২টি ব্রোঞ্জপদক। এরপর থাইল্যান্ডে এশিয়া কাপ-ওয়ার্ল্ড র‍্যাঙ্কিং টুর্নামেন্টে ৩টি সোনা ও ১টি রুপা জিতে হয়েছে চ্যাম্পিয়ন। সব মিলিয়ে কোচের কণ্ঠেও তাই আশার সুর, ‘গত বছর বিশ্বকাপে দারুণ ফল করেছিলাম আমরা। এরপর এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ ও এশিয়া কাপেও ছেলেমেয়েরা ভালো কিছু করেছে। স্বাভাবিকভাবেই এবারের বিশ্বকাপে আমাদের প্রত্যাশা আরও বেড়েছে। ছেলেদের এবারও পদকমঞ্চে দেখতে চাই।’

বিশ্বকাপে এবার কেমন করবেন আর্চাররা?

দলগত ইভেন্টে বাংলাদেশকে নিয়ে স্বপ্ন দেখলেও একক ইভেন্টে বাস্তবেই পা রাখছেন মার্টিন, ‘আমার লক্ষ্য এবং বাস্তবতা দুটোই মাথায় রাখতে হবে। ইউরোপের আর্চাররা এককে সেরা। তাদের বিপক্ষে জেতা কঠিন। তাই এককে আমাদের প্রথম লক্ষ্য থাকবে সেরা দশের মধ্যে থাকা।’

এ বছর আর্চারি বিশ্বকাপে বেশ কিছু নিয়মের পরিবর্তন এসেছে। সাধারণত এর আগের টুর্নামেন্টগুলোতে র‍্যাঙ্কিং রাউন্ডের সেরা আটজন আর্চার নক আউটের তৃতীয় রাউন্ড পর্যন্ত বাই পেতেন। কিন্তু এবার থেকে তাঁদের প্রথম রাউন্ড থেকেই খেলায় অংশ নিতে হবে। তবে শীর্ষ আটজন আর্চারের জন্য থাকবে বোনাস পয়েন্ট। র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ বাছাই পাবেন আট বোনাস পয়েন্ট। এরপর দ্বিতীয় বাছাই পাবেন সাত। এভাবে অষ্টমজন পাবেন এক পয়েন্ট। এ ছাড়া আকর্ষণীয় অর্থ পুরস্কারও মিলবে বিজয়ীদের জন্য। বিশ্বকাপের প্রতিটি স্টেজ চ্যাম্পিয়নরা পাবেন ২৮ হাজার সুইস ফ্রাঁ, বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ২৫ লাখ ৯০ হাজার।