মোটরস্পোর্টের সর্বোচ্চ পর্যায়ে, বিশেষ করে ফর্মুলা ওয়ানে নারীদের অংশগ্রহণ খুব কম হওয়ায় গত বছর থেকে শুরু হয় ডব্লিউ সিরিজ। একক সিটের এই মোটরস্পোর্ট প্রতিযোগিতা নারীদের।
এমা কিমিলাইনেন এই সিরিজেরই চালক। ভালোবাসার এই মোটরস্পোর্ট প্রতিযোগিতা একবার ছেড়ে গিয়েছিলেন ফিনিশ চালক এমা কিমিলাইনেন। এত দিন পর তার মূল কারণ জানালেন কিমিলাইনেন।
যৌনতাবাদী এক স্পনসরশিপ প্রতিষ্ঠানের জন্য মোটরস্পোর্ট ছেড়ে দিয়েছিলেন ৩১ বছর বয়সী কিমিলাইনেন।
ওপেন হুইল ড্রাইভিংয়ে এর আগে ২০১০ সালে একবার ইন্ডি লাইটস সিরিজে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব পেয়েছিলেন কিমিলাইনেন।
যুক্তরাষ্ট্রের অটো রেসিং কর্তৃপক্ষ ইন্ডিকার অনুমোদিত এই সিরিজ ‘রোড টু ইন্ডি’র সর্বোচ্চ ধাপ। কিমিলাইনেন তখন ফর্মুলা ওয়ানে সুযোগ পাওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন।
এর মধ্যে ইন্ডি লাইটসের একটি দল থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়, তাঁকে স্পনসর করতে চায় একটি প্রতিষ্ঠান। তখন তাঁকে সেই প্রতিষ্ঠানের নাম বলা হয়নি।
সিকানি ফর্মুলা ওয়ান পডকাস্টে এ নিয়ে কথা বলেছেন কিমিলাইনেন। সেখানে এ নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। পর্তুগিজ সংবাদমাধ্যম ‘রেকর্ড’ তাঁর উদ্ধৃতি প্রকাশ করেছে, ‘আমার ক্যারিয়ারে অনেক কিছুই ঘটেছে। আমি (ইন্ডি লাইটস) দলের হয়ে পারফরম্যান্সের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, তবে তাদের (স্পনসর) কাছে খোলাসা করে আরও কিছু বিষয় জানতে চেয়েছিলাম।’
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মার্কা’ জানায়, এই চুক্তি নিয়ে কথাবার্তা চলাকালীন কিমিলাইনেন জানতে পারেন, তাঁর স্পনসর হলো ছেলেদের একটি সাময়িকী।
তাদের প্রচ্ছদের জন্য নগ্ন ও বিকিনি পরে পোজ দেওয়ার শর্তেই কিমিলাইনেন শুধু দলের হয়ে সই করতে পারবেন। কিমিলাইনেনের ভাষ্য, তিনি তখন এ বিষয়ে কিছুই জানতেন না।
‘তারা (রেসিং দল) জানায়, স্পনসরদের সঙ্গে কিছু বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি। শুরুতে বিকিনি পরা ছবি দেওয়ার ব্যাপারে তারা (দল) কথা পাকা করেছিল। কিন্তু এরপর তারা নগ্ন (শরীরের ওপরের অংশ) ছবি চেয়ে বসে। ঘটনাটি কী—জানতে চেয়েছিলাম আমি। যখন জানলাম আমার স্পনসর ছেলেদের একটি যৌনতার সাময়িকী, তাৎক্ষণিকভাবে না করে দিই’—সিকানি ফর্মুলা ওয়ান পডকাস্টে বলেন তিনি।
কিমিলাইনেন মনে করেন, এখনকার দিনে এমন প্রস্তাব ‘অযৌক্তিক’ ও ‘ভুল’ মনে হতে পারে। কিন্তু ১০ বছর আগের পৃথিবী—বিশেষ করে নারী অধিকার ও সাম্য—অন্য রকম ছিল।
২০১৯ ডব্লিউ সিরিজে পঞ্চম হন কিমিলাইনেন। করোনা মহামারির কারণে এ বছর ডব্লিউ সিরিজ গড়ায়নি।
ড্রাইভিংয়ের সংবাদমাধ্যম ‘জালোপনিক’ জানিয়েছে, সেই ঘটনার পর ইন্ডি সিরিজের দলকে সরাসরি না করে দেন কিমিলাইনেন। দলে সুযোগ পাওয়ার চুক্তি করতে তিনি শরীর অনাবৃত করবেন না বলে জানিয়ে দেন।
এরপর চার বছর মোটর রেসিং থেকে দূরে ছিলেন কিমিলাইনেন। এই ১০ বছরে ভক্তদের অকুণ্ঠ সমর্থন পেয়ে তিনি যেন ভাষাহীন, ‘যে পরিমাণ সমর্থন পেয়েছি, তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। ক্যারিয়ারে কী করলে কী হতো, এসব নিয়ে কোনো কথা বলব না। আমার পথচলা এখনো শেষ হয়নি। চলুন, রেসে নামি!’