দাবার বোর্ডে নীলাভা ও রানী
দাবার বোর্ডে নীলাভা ও রানী

দাবার রানীকে হারিয়ে দিল ১০ বছরের নীলাভা

ম্যাচটা যে এভাবে হারতে হবে, মোটেও ভাবতে পারেননি আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রানী হামিদ। চলমান মেয়েদের দাবা লিগে আজ বড় অঘটনের জন্ম দিয়েছে নীলাভা চৌধুরী। ১০ বছর বয়সী নীলাভা হারিয়ে দিয়েছেন ৭৫ বছর বয়সী অভিজ্ঞ দাবাড়ু রানী হামিদকে। পল্টন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পুরোনো ভবনে ফেডারেশন কার্যালয়ে সাদাকালো বোর্ডে আজ মুখোমুখি হয়েছিলেন দুই প্রজন্মের দুই দাবাড়ু। লিগের সবচেয়ে বয়স্ক রানী হামিদের প্রতিপক্ষ সর্বকনিষ্ঠ দাবাড়ু নীলাভা।

নীলাভা

এবারের লিগে রানী হামিদ খেলছেন বাংলাদেশ পুলিশের হয়ে। আর নীলাভার দল রুপালী ব্যাংক ক্রীড়া পরিষদ। এ পর্যন্ত ৪ রাউন্ডে ৩ ম্যাচ খেলেছেন রানী হামিদ। এর মধ্যে ২টিতে জিতেছেন। আজই প্রথম হারের স্বাদ উপহার দিল নীলাভা।

নীলাভার লিগে এটা ছিল অভিষেক ম্যাচ। আগের ৩ রাউন্ড রিজার্ভ দাবাড়ু হিসেবে পাশে বসে অন্যদের খেলা দেখেছে। অভিষেকটা কী দারুণভাবেই না রাঙিয়ে নিয়েছে খিলগাঁও ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী!

দাবার বোর্ডে মগ্ন রানী হামিদ

আজই প্রথম নীলাভার মুখোমুখি হয়েছিলেন রানী হামিদ। হেরে যাওয়ার পর হতাশ রানী হামিদ বলছিলেন, ‘আজ একটা বড় ভুল করে ফেলেছি। বাচ্চা একটি মেয়ের কাছে হেরে গেলাম। আসলে পুরো ম্যাচে আমি জেতার মতো অবস্থায় ছিলাম। কিন্তু শেষ দিকে একটা ভুল চালে সব গড়বড় হয়ে যায়।’

দাবা পরিবারের মেয়ে নীলাভা। বাবা সলিল চৌধুরী দাবাড়ু। বাবার কাছ থেকেই দাবায় হাতেখড়ি নীলাভার। বড় ভাই স্বর্ণাভো চৌধুরী জাতীয় বয়সভিত্তিক দলে খেলেন। ২০১৯ সালে নয়াদিল্লিতে বিশ্ব জুনিয়র দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়েছেন স্বর্ণাভো। আর নীলাভা গত জুলাইয়ে খেলেছেন এশিয়ান অনলাইন স্কুল দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে।

চিন্তায় পড়ে গেছেন রানী হামিদ

রানী হামিদের কণ্ঠে ঝরল নীলাভার প্রংশসা। নীলাভার মাঝে উজ্জ্বল ভবিষ্যত দেখছেন রানী হামিদ, ‘ওকে হালকাভাবে নেওয়াটাই ভুল হয়েছে। তবে ও আজ অসাধারণ খেলেছে। ওর মধ্যে অনেক সম্ভাবনা দেখেছি আমি।’

রানী হামিদকে হারিয়ে যেন ঘোরের মধ্যেই রয়েছে ছোট্ট নীলাভা, ‘আমি ভাবতেও পারিনি যে ম্যাচটি জিতব। তবে আমি চেষ্টা করেছি ভালো খেলতে।’

নীলাভার ফিদে রেটিং মাত্র ১৩৯২। পড়াশোনা আর দাবা খেলাই নীলাভার ধ্যানজ্ঞান, ‘বাবার সঙ্গে আমি নিয়মিত দাবা খেলি। কখনো দাবার বোর্ড নিয়ে বসি। কখনো ল্যাপটপে অনলাইনে খেলি। আমার স্বপ্ন গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়া।’