গত ২০ মার্চ শেষ হয়েছে এশিয়ান হকি ফেডারেশন (এএইচএফ) কাপ। চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলকে আজ দুপুরে সংবর্ধনা দিয়েছে হকি ফেডারেশন। এরপর রাতে ঘোষণা করা হয়েছে ৩৬ সদস্যের জাতীয় হকি দল। আগামী ৬-১৫ মে থাইল্যান্ডে হবে এশিয়ান গেমস হকির বাছাইপর্ব। এরপর ২৩ মে-১ জুন ইন্দোনেশিয়ায় বসবে এশিয়া কাপ হকির ১১তম আসর। এ দুটি টুর্নামেন্টকে সামনে রেখেই প্রাথমিক দল ঘোষণা করেছে ফেডারেশন। কিন্তু দল ঘোষণার আগে হয়েছে নাটক।
জাতীয় দলের স্ট্রাইকার রাসেল মাহমুদ জিমিকে ছাড়াই প্রথমে ৩৫ সদস্যের নাম ফেডারেশনে জমা দেয় নির্বাচক কমিটি। কিন্তু আজ বিমান বাহিনীর ফ্যালকন হলে কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় এ নিয়ে প্রবল আপত্তি তোলেন ফেডারেশনের সদস্যরা। শেষ পর্যন্ত কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুসারে রাসেল মাহমুদকে দলে ঢোকানো হয়।
রাসেল মাহমুদকে বাদ দেওয়ায় অবাক হকি ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইউসুফ, ‘জিমিকে বাদ দেওয়ার কারণ আমি জানি না। ওকে ছাড়াই ৩৫ জনের দল দেখে অবাকই হয়েছি। কিন্তু আজকের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে জিমিকে দলে নিতে হবে।’
এশিয়ান গেমসে তরুণ খেলোয়াড়দের প্রাধান্য দিতে জিমিকে বাদ দেওয়ার দাবি জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক সাজেদ এ আদেলের, ‘জিমির প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, সে অনেক দিন জাতীয় দলের হয়ে খেলেছে। এ জন্য ওর প্রতি কৃতজ্ঞ ফেডারেশন। আমরা এশিয়ান গেমসে তরুণদের নিয়ে দল গড়ার চিন্তাভাবনা করছি। সে ক্ষেত্রে কাউকে না কাউকে তো দলে জায়গা ছেড়ে দিতেই হবে। তবে কোচ যদি মনে করেন তার পারফরম্যান্স দলে জায়গা পাওয়ার মতো, তাহলে সে অবশ্যই চূড়ান্ত দলে থাকবে।’
সর্বশেষ আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট এএইচএফ কাপে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ গোলবন্যায় ভাসিয়েছে প্রতিপক্ষকে। ৬ ম্যাচে বাংলাদেশ দিয়েছে ৩২ গোল। কিন্তু এত এত গোলের মধ্যে জিমির স্টিক থেকে এসেছে মাত্র ২টি! জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়কের এমন পারফরম্যান্সে মোটেও সন্তুষ্ট নন সাজেদ এ আদেল, ‘আমাদের বেশির ভাগ গোল হয়েছে পেনাল্টি কর্নার থেকে। ফিল্ড গোল সেভাবে দিতে পারেনি খেলোয়াড়েরা। এটা আমাদের বড় দুর্বলতা। আমাদের ফরোয়ার্ড লাইনে যারা গোল করবে, তারা সেভাবে প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। দলের সবচেয়ে বড় ভরসা জিমি মাত্র ২টি গোল করেছে। ওর পারফরম্যান্স যে খুব ভালো ছিল, সেটাও বলব না।’
যদিও নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে যথেষ্ট সন্তুষ্ট জিমি, ‘আমি এই টুর্নামেন্টে নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে খুশি।’
এএইচএফ কাপের পর আবারও জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে গোবিনাথান কৃষ্ণমূর্তিকে। এশিয়ান গেমসের বাছাই ও এশিয়া কাপ—দুটি টুর্নামেন্টেই কোচ হিসেবে থাকবেন বিকেএসপির বিশেষজ্ঞ এই হকি কোচ। তবে এশিয়ান গেমসের জন্য মাহবুব হারুনকে আবারও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
দল ঘোষণা নিয়ে কয়েক দিন আগেও হকি ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও নির্বাচক কমিটির মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল চরমে। এরপর ফেডারেশন সভাপতি ও বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আবদুল হান্নানের কার্যালয় থেকে টেলিফোন করা হয় নির্বাচকদের। এর এক ঘণ্টার মধ্যে দল নির্বাচন করে নির্বাচক কমিটি। ১২ এপ্রিল হকি ফেডারেশনে জাতীয় দলের ম্যানেজার তারেক এ আদেলের কাছে রিপোর্ট করতে হবে খেলোয়াড়দের। ১৩ এপ্রিল বিকেএসপিতে শুরু হবে খেলোয়াড়দের ক্যাম্প। এই ক্যাম্প থেকে ১৮ জনের চূড়ান্ত দল গঠন করা হবে।