'আমার ছেলেকে বাঁচান, শুধু ওকে বাঁচান।'
এটাই ছিল সাবেক রেসলার শাড গ্যাসপার্ডের শেষ কথা। গত রোববার সমুদ্রে ভেসে গেছেন ডব্লু ডব্লুইর সাবেক তারকা গ্যাসপার্ড (৩৯ বছর)। পরিবার তিনদিন ধরে আশায় ছিল, লড়াকু গ্যাসপার্ড হইয়তো কোনো না কোনোভাবে টিকে রয়েছেন। কোনো আশ্রয় খুঁজে নিয়ে ঠিকই ফিরে আসবেন পরিবারের কাছে। কিন্তু সে আশাও শেষ হয়ে গেছে কাল। বুধবার সকালে সমুদ্র তীরে খুঁজে পাওয়া গেছে গ্যাসপার্ডের শরীর।
ক্যালিফোর্নিয়ার ভেনিস সমুদ্র সৈকতে গত রবিবার দুর্ঘটনায় পড়েন গ্যাসপার্ড ও তাঁর ছেলে আরিয়েহ। লকডাউনের পর এই প্রথম আবার সৈকত উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছিল। গ্যাসপার্ড ও তাঁর ছেলে কোমর পানিতে সাতার কাটছিলেন। কিন্তু হঠাৎ তীব্র এক স্রোত এসে দুজনকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। তীর থেকে প্রায় ৭৫ গজ দূরে এ দুজনকে দেখে একজন লাইফগার্ড তাঁদের বাঁচানোর জন্য যান। ২ মিটারের বেশি উঁচু ঢেউয়ের মাঝে দুজনকে বাঁচানোর জন্য 'রেসকিউ ক্যান' বাঁধার চেষ্টা করেন ওই লাইফ গার্ড। কিন্তু ১০ বছরের আরিয়েহ কোনোভাবেই বাঁধতে পারছিল না সেটা। তখনই গ্যাসপার্ড আগে ছেলেকে বাঁচানোর অনুরোধ করেন।
সৈকতের ওই অংশের লাইফগার্ড প্রধান কেনিচি হ্যাসকেট ওই সময়ের অসহায়ত্বের কথা জানিয়েছেন এভাবে, 'ওই লাইফগার্ড তীর থেকে ৭৫ গজ দূরে দুজন মানুষকে বাঁচানোর লক্ষ্যে নেমেছিল। ভদ্রলোকের শারীরিক গঠন (সাড়ে ৬ ফিট উচ্চতা, ১২৩ কেজি) ও পানির অবস্থায়… এটা বোজা গিয়েছিল দুজনকে একবারে ফেরানো সমভব নয়… এমন সিদ্ধান্ত আমরা কখনোই তে চাই না। গ্যাসপার্ডের শেষ কথাটি ছিল “আমার ছেলেকে বাঁচান, শুধু ওকে বাঁচান।”' লাইফগার্ড আরিয়েহকে তীরে এনেই আবার গিয়েছিলেন গ্যাসপার্ডের জন্য। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি, '৬০ সেকেন্ডের মধ্যে লাইফগার্ড ফিরেছিল শাডকে আনার জন্য। তাঁকে দেখেছিল কিন্তু একটা ঢেউ এসে ধাক্কা দিল পানির নিচে পাঠিয়ে দিল শাডকে।' শাড আর মাথা তোলেননি।
তবিবারে এই ঘটনার পর থেকে তাঁর খোঁজে সাতটি উদ্ধার অভিযান চালানো হয়েছিল। কিন্তু সারে ১৬৫ ঘন্টার অভিযান ও ৭০ নটিক্যাল মাইল এলাকা খুঁজেও তাকে না পাওয়ায় অভিযান বন্ধ করে দেওয়া হয়। গতকাল সকালে সাগর থেকে ভেসে আসা একজনের মৃতদেহ খুঁজে পাওয়ার পর এক পুলিশ কর্তৃপক্ষকে জানায়। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সেটা গ্যাসপার্ডের বলে নিশ্চিত করেছে।
ডব্লুডব্লুইর ক্রাইম টাইম জুটির অংশ ছিলেন গ্যাসপার্ড। ২০০৮ সালে জন সেনার সঙ্গে কিছুদিন জোট বেধেছিল ক্রাইম টাইম। ২০১০ অবসর নেওয়ার পর অভিনেতা হিসেবে ক্যারিয়ার গড়েছিলেন গ্যাসপার্ড।