ঘরোয়া আসরে নিজের ইভেন্টে বরাবরই সেরা এসএ গেমসে সোনাজয়ী ভারোত্তোলক মাবিয়া আক্তার। আজ সকালে জাতীয় ভারোত্তোলন চ্যাম্পিয়নশিপে মেয়েদের ৬৪ কেজি ওজন শ্রেণিতে আবারও সোনা জিতেছেন বাংলাদেশ আনসারের এই ভারোত্তোলক।
যদিও গত এপ্রিলে সর্বশেষ বাংলাদেশ গেমসে সোনা জিততে গড়া রেকর্ড টপকে যেতে পারেননি। আজ স্ন্যাচে তুলেছেন ৭৫ কেজি। ক্লিন অ্যান্ড জার্কে তোলেন ৯৫ কেজি। সব মিলিয়ে ১৭০ কেজি তুলে জিতেছেন সোনার পদক। বাংলাদেশ গেমসে স্ন্যাচে ৮০ কেজি ও ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ১০১ কেজি ভার তুলে রেকর্ড গড়েন।
টোকিও অলিম্পিকে খেলতে যাওয়ার আশায় ছিলেন ২০১৬ ও ২০১৯ এসএ গেমসে সোনাজয়ী মাবিয়া। কিন্তু বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে থাকায় শেষ পর্যন্ত যাওয়া হয়নি জাপানে। এর আগে ২০১৪ যুব অলিম্পিকেও যেতে পারেননি চীনে। ২০১৬ রিও অলিম্পিকে খেলারও সুযোগ পাননি। অথচ ওয়াইল্ড কার্ড নিয়ে বাংলাদেশের অন্যান্য ফেডারেশনের অ্যাথলেটরা নিয়মিতই অলিম্পিকে খেলতে যাচ্ছেন। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অভিজ্ঞ মাবিয়ার বারবার অন্যদের এভাবে অলিম্পিকে যাওয়া দেখতে হচ্ছে।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ জিমনেসিয়ামে আজ সোনা জেতার পর তাই সেই আক্ষেপের কথাগুলো বলছিলেন তিনি। মাবিয়া বলেন, ‘অলিম্পিকে খেলার ইচ্ছা ছেড়ে দিয়েছি, আমি আর অলিম্পিকের জন্য স্বপ্ন দেখি না। যেহেতু পরপর তিনবার হোঁচট খেয়েছি, চতুর্থবার আর ওই পথে যেতে চাই না। আমি কোথা থেকে কোথায় উঠে এসেছি, সেটা সবাই জানেন। আমি যখন খেলায় এসেছি, ফেডারেশন আমাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছে। উইং কমান্ডার মহিউদ্দিন স্যার (সহসভাপতি, ভারোত্তোলন ফেডারেশন) সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু এবারও হয়নি। আমি বারবার মানসিক ধাক্কা খেতে পারব না। তাই আমি অলিম্পিকে খেলার আশা আর করি না।’
মাবিয়া চোট নিয়েও খেলছেন এবারের ঘরোয়া প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ আসরে। শারীরিকভাবেও অনেক দুর্বল ছিলেন মাবিয়া। তাই নিজের রেকর্ড টপকানোর চেষ্টা করেননি, ‘এসএ গেমসে চোট পেয়েছিলাম। আমি এখনো সেই চোট পুরোপুরি সারিয়ে তুলতে পারিনি। আর তা ছাড়া শারীরিকভাবেও আজ বেশ অসুস্থ। ইচ্ছা করেই তাই সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করিনি। তবে আজ সেরাটা দিতে পারিনি বলে অপরাধবোধ হচ্ছে।’
এবারের জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ নিয়ে দারুণ আশাবাদী ভারোত্তোলন ফেডারেশনের সহসভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ, ‘এবার অনেক নতুন মুখ উঠে এসেছে। আগামী ডিসেম্বরে কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আছে। এখান থেকে সেরা খেলোয়াড়দের বাছাই করতে সুবিধা হবে আমাদের।’