বাফুফে ভবন
বাফুফে ভবন

বাফুফেতে কে হবেন সালাউদ্দিনের উত্তরসূরি

বাংলাদেশের ফুটবল অবশেষে পেতে যাচ্ছে নতুন সভাপতি। অবসান হতে চলেছে কাজী সালাউদ্দিন–যুগের। টানা ১৬ বছর বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি ছিলেন সাবেক তারকা ফুটবলার সালাউদ্দিন। কিন্তু এবার তিনি নির্বাচনেই দাঁড়াননি। তাঁকে ছাড়াই আজ ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে অনুষ্ঠিত হবে বাফুফের নির্বাচন। সকাল ১০টায় শুরু কংগ্রেস শেষে নির্বাচন শুরু দুপুর ২টায়, ভোট গ্রহণ চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।

এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আগামী চার বছরের জন্য নতুন নেতৃত্বের হাতে উঠবে দেশের ফুটবল। নির্বাহী কমিটির ২১ পদের মধ্যে ২০টির বিপরীতে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন ৪৬ জন প্রার্থী। সভাপতি পদে প্রার্থী ২ জন, ৪ সহসভাপতি পদে প্রার্থী ৬ জন ও ১৫টি সদস্য পদে নির্বাচন করছেন ৩৭ জন। আলোচিত সংগঠক তরফদার রুহুল আমিন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেওয়ায় সিনিয়র সহসভাপতি পদে এরই মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গেছেন ইমরুল হাসান।

বাফুফের বিদায়ী নির্বাহী কমিটিতে থাকা আটজন এবারও নির্বাচন করছেন। বাকি ২৯ জনের মধ্যে বেশির ভাগ এবারই প্রথম নির্বাচনের মাঠে নেমেছেন। নির্বাচনে ভোট দেবেন বাফুফের ১৩৩ জন কাউন্সিলর। কাউন্সিলর তালিকায় জেলা ফুটবল সংস্থা থেকে এসেছেন ৫৮ জন, প্রিমিয়ার লিগের ১০ ক্লাবের ১০ জন, ৮টি বিভাগীয় ফুটবল সংস্থা থেকে ৮ জন, বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের ৫ ক্লাবের ৫ জন, প্রথম বিভাগের ১৮ ক্লাবের ১৮ জন, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগের ৮টি করে ক্লাবের ১৬ জন, এবারই প্রথম যুক্ত হওয়া নারী লিগের শীর্ষ ৪ ক্লাবের ৪ জন, ৬ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ জন ও ৫ শিক্ষা বোর্ড থেকে ৫ জন প্রতিনিধি। এ ছাড়া রেফারি, কোচেস অ্যাসোসিয়েশন ও মহিলা ক্রীড়া সংস্থা কাউন্সিলর আছেন একজন করে।

আগামী চার বছরের জন্য নতুন নেতৃত্বের হাতে উঠবে দেশের ফুটবল

বাফুফের নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের ফুটবল খুঁজে নেবে সালাউদ্দিনের উত্তরসূরি। সবার দৃষ্টি তাই সভাপতি পদের দিকেই। বাফুফের সভাপতি পদের জন্য লড়াইয়ে আছেন তাবিথ আউয়াল ও মিজানুর রহমান চৌধুরী। তাবিথ সাবেক ফুটবলার, তিনি সালাউদ্দিনের সময় একাধিকবার বাফুফের সহসভাপতি ছিলেন। মিজানুর রহমান দিনাজপুর জেলার ফুটবল সংগঠক। সভাপতি পদে তাঁর নির্বাচন করাটা বেশ চমকই। এই পদের জন্য আরও দুজন মনোনয়নপত্র জমা দিলেও পরে তাঁরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন।

সিনিয়র সহসভাপতি পদে ইমরুল হাসান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গেলেও সহসভাপতি পদে নির্বাচন হবে। চারটি সহসভাপতি পদের জন্য প্রার্থী হওয়া ছয়জনের মধ্যে সাবেক ফুটবলার আছেন দুজন—শফিকুল ইসলাম মানিক ও সৈয়দ রুম্মান বিন ওয়ালী সাব্বির। বাকি চার প্রার্থী হলেন ফাহাদ মোহাম্মদ আহমেদ করিম, মো. ওয়াহিদউদ্দীন চৌধুরী, নাসের শাহরিয়ার জাহেদী ও সাব্বির আহম্মেদ আরেফ। দুজন সাবেক তারকা ফুটবলার প্রার্থী হওয়ায় সহসভাপতি পদে নির্বাচন নিয়েও কৌতূহল আছে।

টানা ১৬ বছর বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি ছিলেন সাবেক তারকা ফুটবলার সালাউদ্দিন

সদস্য পদে নির্বাচন করছেন আরও কয়েকজন সাবেক ফুটবলার। তাঁরা হলেন খন্দকার রকিবুল ইসলাম, ছাইদ হাছান কানন, সত্যজিৎ দাশ রুপু, ইকবাল হোসেন, গোলাম গাউস, বিজন বড়ুয়া ও সাইফুর রহমান মনি। তাঁদের মধ্যে সত্যজিৎ দাশ রুপু, বিজন বড়ুয়া ও ইকবাল হোসেন বিদায়ী নির্বাহী কমিটিতেও ছিলেন। সদস্য পদে চার নারী প্রার্থীর মধ্যে বিদায়ী কমিটির নারী উইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণের সঙ্গে আছেন সাবেক ফুটবলার ও ফুটবল কোচ মাহমুদা খাতুন অদিতি, রওশন আরা আক্তার ও তাসমিয়া রেজোয়ানা। তাঁদের মধ্যে তাসমিয়া রেজোয়ানা ফিফা কর্তৃক নিষিদ্ধ বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈমের স্ত্রী।

যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সম্প্রতি বাফুফের নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। ভোটারদের বড় অংশটা যেহেতু জেলা ফুটবল সংস্থা থেকে আসা পুরোনো কাউন্সিলর, তাই তাঁদের ওপর আগের কমিটির প্রভাব থাকাটা অস্বাভাবিক মনে করেন না তিনি। জেলা ফুটবল সংস্থার বিশাল ভোটব্যাংক নিয়ে তাই উপদেষ্টার প্রশ্ন আছে। অভিযোগ আছে, জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে পাশ কাটিয়ে জেলা ফুটবল সংস্থা গঠনই করা হয়েছে ভোটব্যাংক বানিয়ে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে।