স্বপ্নের চেয়েও সুন্দর সময় কাটছিল এনজো ফার্নান্দেজের। মাত্র ২১ বছর বয়সে আর্জেন্টিনার হয়ে জিতেছেন বিশ্বকাপ শিরোপা। হয়েছেন বিশ্বকাপের সেরা উদীয়মান খেলোয়াড়।
কিন্তু তরুণ বয়সে যেমন অনেক কিছু করে দেখানোর সম্ভাবনা বেশি থাকে, আবার মনের অজান্তে ভুল করে বসারও ঝুঁকি থাকে।
বিশ্বকাপজয়ী ফার্নান্দেজ এবার করেছেন দ্বিতীয়টা। সোনালি ট্রফি নিয়ে আর্জেন্টিনায় ফিরে সপ্তাহখানেক ছুটি কাটিয়েও মন ভরেনি তাঁর। ক্লাব বেনফিকার হয়ে এক ম্যাচ খেলেই পরিবারের সঙ্গে নতুন বছর উদ্যাপন করতে আবার গেছেন দেশে।
একে তো আর্জেন্টিনায় যাওয়ার আগে ক্লাব কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেননি, তার ওপর সময়মতো ক্লাবে ফিরতে পারেননি। স্বাভাবিকভাবে ফার্নান্দেজের ওপর রেগে আগুন বেনফিকার কর্তৃপক্ষ। সংবাদ সম্মেলনে পর্তুগিজ ক্লাবটির কোচ রজার শ্মিট বলেছেন, ‘সে খুব ভালো মানুষ। তবে আমরা ওকে আর্জেন্টিনায় যাওয়ার অনুমতি দিইনি। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। অবশ্যই এর পরিণাম খারাপ হবে। কী শাস্তি হবে, সেটা এ মুহূর্তে বলব না।’
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিরর জানিয়েছে, ফার্নান্দেজকে মোটা অঙ্কের জরিমানা করতে যাচ্ছে বেনফিকা। তবে আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে ভিন্ন কথা। তাদের দাবি, ফার্নান্দেজ নাকি বেনফিকা সভাপতি রুই কস্তার কাছ থেকে মৌখিক অনুমতি নিয়ে দেশে ফিরেছেন। এরই মধ্যে পর্তুগালের উদ্দেশে রওনাও হয়েছেন। ক্লাবে আসার পর তরুণ মিডফিল্ডারের সঙ্গে আলোচনা করে শাস্তির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
মাত্র ৬ মাস হলো স্বদেশি ক্লাব রিভার প্লেট ছেড়ে বেনফিকায় যোগ দিয়েছেন ফার্নান্দেজ। পর্তুগালের রাজধানী লিসবনের সফলতম ক্লাবটির সঙ্গে ২০২৭ সাল পর্যন্ত চুক্তি আছে তাঁর। কিন্তু বিশ্বকাপে নজরকাড়া পারফরম্যান্স দেখার পর তরুণ মিডফিল্ডারকে পেতে উঠেপড়ে লেগেছে একাধিক পরাশক্তিধর ক্লাব। তালিকার ওপরের সারিতে ছিল চেলসি, লিভারপুল, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মতো ক্লাবগুলো।
চেলসির মালিক টড বোহলি তো বেনফিকার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় গিয়ে দর–কষাকষি শুরু করেও দিয়েছিলেন। ফার্নান্দেজকে ছাড়িয়ে নিতে ১২০ মিলিয়ন ইউরো (১ হাজার ৩০৮ কোটি ৬৭ লাখ টাকার বেশি) দিতে রাজি ছিলেন। খেলোয়াড়ের বদলে খেলোয়াড় দেওয়ার প্রস্তাবও করেছিলেন লন্ডনের ক্লাবটির মার্কিন কর্ণধার।
সেই চেলসিই এখন পিছুটান দিয়েছে। ব্যাপারটা অনেকটা গাছে তুলে মই কেড়ে নেওয়ার মতো। চেলসির এমন আচরণকে অসম্মানজনক মনে হচ্ছে বেনফিকা কোচ শ্মিটের, ‘অনেক ক্লাবই আছে, যারা এনজোকে (ফার্নান্দেজকে) কিনতে চায়। সত্যি কথা বলতে, আমরা এখন ওকে বিক্রি করতে চাই না। সবাই জানে, ওকে এ মুহূর্তে কেনার একটাই উপায়, সেটা হলো রিলিজ ক্লজের ১২০ মিলিয়ন ইউরো পরিশোধ করা। কিন্তু চেলসি অসম্মানজনক কাজ করেছে। খেলোয়াড়কে দলে নেওয়ার জন্য উন্মাদের মতো আচরণ করছে।’