বিশ্বকাপে বাংলাদেশের জয়–পরাজয়ের সব হিসাব ছাপিয়ে এখন আলোচনায় ‘টাইমড আউট’ কাণ্ড। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসকে টাইমড আউট করায় আলোচনা–সমালোচনার কেন্দ্রে বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। কেউ কেউ আউটের জন্য সাকিবের আবেদন করার ঘটনাকে সমর্থন করলেও অনেকেই এর বিরোধিতা করেছেন।
সেই ধারাবাহিকতায় এবার সাকিবের সমালোচনায় মুখ খুলেছেন ম্যাথুসের ভাই ট্রেভিন ম্যাথুসও। সাকিবের টাইমড আউটের আবেদনকে হতাশাজনক বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এমনকি সাকিব শ্রীলঙ্কায় গেলে তাঁর ওপর পাথর ছুড়ে মারা হতে পারে বলেও সতর্কবার্তা দিয়েছেন ট্রেভিন।
ঘটনার শুরু বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচের ২৪.২ ওভারের সময়। সাদিরা সামারাবিক্রমা মাহমুদউল্লাহর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার পরের দৃশ্য। শ্রীলঙ্কার রান তখন ৪ উইকেটে ১৩৫। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে এলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। কিন্তু উইকেটে গিয়ে তিনি দেখলেন, তাঁর হেলমেটের স্ট্র্যাপে কোনো একটা সমস্যা। সম্ভবত ওটা ছেঁড়াই ছিল। ড্রেসিংরুমে ইশারা করলেন নতুন হেলমেটের জন্য।
অতিরিক্ত খেলোয়াড়ের মাধ্যমে নতুন হেলমেট আনতে কিছুটা দেরি হয়ে যায়। এ সময় অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের বিপক্ষে ‘টাইমড আউট’-এর আপিল করে বাংলাদেশ। পরে ম্যাথুসের অনুরোধেও নিজের অবস্থান থেকে সরে আসেননি সাকিব। টাইমড আউট হয়েই মাঠ ছাড়তে হয় ম্যাথুসকে, যে ঘটনাকে ম্যাচ শেষে ‘লজ্জাজনক’ বলেও মন্তব্য করেন ম্যাথুস।
সেই ঘটনা নিয়ে এবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘ডেকান ক্রনিকলের কাছে মুখ খুলেছেন ম্যাথুসের ভাই ট্রেভিন। তিনি বলেন, ‘আমরা খুবই হতাশ। বাংলাদেশের অধিনায়কের খেলোয়াড়সুলভ চেতনা ছিল না। ভদ্রলোকের এই খেলার প্রতি সে মোটেই মানবিক আচরণ দেখায়নি।’
শুধু এটুকুই নয়, সাকিব শ্রীলঙ্কায় গেলে বিরূপ পরিস্থিতিতে পড়তে পারেন বলেও মন্তব্য করেন ট্রেভিন, ‘সাকিবকে শ্রীলঙ্কায় স্বাগত জানানো হবে না। যদি সে এখানে আন্তর্জাতিক ম্যাচ কিংবা এলপিএলের (লঙ্কান প্রিমিয়ার লিগ) কোনো ম্যাচ খেলতে আসে, তাহলে তাকে পাথর ছুড়ে মারা হবে। কিংবা তাকে এখানে ক্ষুব্ধ সমর্থকদের তোপে পড়তে হবে।’
এদিক সাকিবের ঘটনার সমালোচনা হয়েছে দলের ভেতর থেকেও। ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকব্লগ ডটনেটে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড স্পষ্ট করেই বলেন, ‘(ক্রিকেট মাঠে) আমি এমন কিছু দেখতে চাই না।’
ঘটনাটা দেখার পর ডোনাল্ডের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া কী ছিল? এমন প্রশ্নে দক্ষিণ আফ্রিকান এই কিংবদন্তি বলেন, ‘আমার মন বলছিল, মাঠে ঢুকে বলি, যা হয়েছে যথেষ্ট হয়েছে, আমরা এর পক্ষে নই। আমরা এমন দল নই যে এর পক্ষ নেব। আমি শুধু সেখানে গিয়ে বলতে চাচ্ছিলাম, যথেষ্ট হয়েছে, আর না। এটা আমার তাৎক্ষণিক ভাবনা। সবকিছু দ্রুত ঘটে গেছে। আপনি কর্তৃত্বের কথা বলছেন, আমি তো প্রধান কোচ নই, আমি দায়িত্বে নেই। আমি মারাই এরাসমাসকে বলতে দেখেছি, ‘‘অ্যাঞ্জেলো, দয়া করে তুমি এখন মাঠ ছাড়তে পারো।’’ এরপর দেখেছি, অ্যাঞ্জেলো হেলমেট তুলে নিল, এরপর বিজ্ঞাপনী বোর্ডের দিকে ছুড়ে মারল। আসলে, আমি বিস্মিত হয়েছি।’