হ্যারি কেইনকে সরতে হলো নিজের সিদ্ধান্ত থেকে
হ্যারি কেইনকে সরতে হলো নিজের সিদ্ধান্ত থেকে

শাস্তির ভয়ে ফিফার নির্ধারণ করে দেওয়া আর্মব্যান্ডই পরছেন অধিনায়কেরা

ইরানের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের ম্যাচটি নিয়ে রাজনৈতিক কারণেই আগ্রহ প্রবল। এই প্রথমবারের মতো ইরানের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামবে ইংল্যান্ড। কিন্তু এই ম্যাচে রাজনৈতিক ব্যাপার ছাপিয়েও আলোচনায় সমকামিতা বিতর্ক। ইংলিশ অধিনায়ক হ্যারি কেইন আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন, সমকামিতাকে সমর্থন করে তৈরি বিশেষ আর্মব্যান্ড বাহুতে পরেই আজ মাঠে নামবেন। কিন্তু শাস্তির ভয়ে আপাতত সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন কেইন। কেবল কেইন নন, সমকামিতাকে সমর্থন করে তৈরি আর্মব্যান্ড পরবেন না ইউরোপের কোনো অধিনায়কই।

ম্যানুয়েল নয়্যারও পরতে চেয়েছিলেন ‘ওয়ান লাভ আর্মব্যান্ড’

কাতারে সমকামিতা গর্হিত অপরাধ হিসেবেই বিবেচিত। বিশ্বকাপের আগে এটি নিয়ে ইউরোপের বেশ কয়েকটি এলজিবিটি সংস্থা প্রতিবাদ জানিয়েছিল। নেদারল্যান্ডস, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, ডেনমার্ক, বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, সুইডেনের মতো দেশগুলো এলজিবিটি সংস্থাগুলোর প্রতিবাদের সঙ্গে একাত্ম। ব্যাপারটির প্রতিবাদে বিশেষ একটি আর্মব্যান্ড সামনে এনেছে তারা। সেটির নাম ‘ওয়ান লাভ’। কেইন আজ ইরানের বিপক্ষে এই ‘ওয়ান লাভ’ আর্মব্যান্ডই পরতে চেয়েছিলেন।

আর ফিফা পুরো এই ‘ওয়ান লাভ’ আর্মব্যান্ড নিয়ে বেজায় বিরক্ত। বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা চায়, তাদের নির্ধারিত আর্মব্যান্ড পরেই মাঠে নামুন সব দেশের অধিনায়কেরা। ফিফা মনে করে, বিশ্বকাপ যে দেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, সে দেশের আইন ও নিয়মনীতির প্রতি তারা অঙ্গীকারবদ্ধ।

ফন ডাইক হলুদ কার্ড দেখতে চাননি আগেই, সমকামিতাকে সমর্থন করা আর্মব্যান্ড পরা নিয়ে তাঁর মনে ছিল সংশয়

ফিফা ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনকে (এফএ) ফিফা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, নিয়মানুযায়ী ওই বিশেষ আর্মব্যান্ড পরতে পারবেন না কোনো অধিনায়ক। ফিফা যে আর্মব্যান্ড বানিয়েছে, সেটিতে ঐক্য ও সমতার বার্তা আছে। প্রতি রাউন্ডেই সেই আর্মব্যান্ডের স্লোগান পাল্টে যাবে। কিন্তু এর বাইরে ম্যাচে অন্য কিছু পরে নামা যাবে না। ইরানের বিপক্ষে যদি কেইন অন্য কোনো আর্মব্যান্ড পরেন, তাহলে অবশ্যই ম্যাচের আগে তাঁকে হলুদ কার্ড দেখানো হতে পারে।

ফিফার হুমকিতেই নিজেদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে ইউরোপীয় দেশগুলো। এক যৌথ বিবৃতিতে দেশগুলো জানিয়েছে, ‘ফিফা এ ব্যাপারে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে। আমাদের অধিনায়কেরা যদি বিশ্ব ফুটবল সংস্থার নির্ধারিত আর্মব্যান্ডের বাইরে অন্য কোনো আর্মব্যান্ড পরেন, তাহলে তাঁদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে। ফিফার আইনেই বলা আছে, তাদের অননুমোদিত সরঞ্জাম নিয়ে যদি কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচে খেলোয়াড়েরা খেলতে নামেন, তাহলে তাঁদের হলুদ কার্ড দেখানো হবে।’

তারা আরও জানিয়েছে, ‘দেশের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন হিসেবে আমরা আমাদের খেলোয়াড়দের নিষেধাজ্ঞা বা কোনো শাস্তির মুখে ঠেলে দিতে পারি না। সুতরাং আমরা আমাদের অধিনায়কদের এ ধরনের কোনো আর্মব্যান্ড না পরারই নির্দেশনা দিয়েছি।’ ইংল্যান্ড ও জার্মানি ছাড়াও এই যৌথ বিবৃতিতে অংশ নিয়েছে নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, ওয়েলস ও সুইজারল্যান্ডের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন।

এদিকে আজ দিনের অন্য ম্যাচে মাঠে নামবে নেদারল্যান্ডস ও সেনেগাল। এই ম্যাচেও ডাচ অধিনায়ক ভার্জিল ফন ডাইক ‘ওয়ান লাভ’ আর্মব্যান্ড পরতে চেয়েছিলেন। কিন্তু হলুদ কার্ডের শাস্তি নিয়ে তিনি নিজের শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাঁকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেছেন, ‘আমি এই আর্মব্যান্ড পরতে চাই। কিন্তু এর জন্য যদি আমাকে হলুদ কার্ড দেখানো হয়, তাহলে ব্যাপারটা নিয়ে ভাবব। হলুদ কার্ড দেখে ম্যাচ শুরু করতে মোটেও ভালো লাগবে না আমার।’