এবার আর পেপ গার্দিওলার মুখ ভার করার সুযোগ নেই!
আবেগ, উদ্যম, ক্ষুধা- ইতিহাদে উলভসের বিপক্ষে ম্যাচে ম্যানচেস্টার সিটি ফুটবলারদের মধ্যে সবটাই দেখা গেছে। ঠিক যেমনটা গার্দিওলা চেয়েছিলেন। ম্যাচের ফলাফলটাও সিটি কোচ পছন্দই করবেন। গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে হলান্ডের হ্যাটট্রিকে ৩-০ গোলের জয় পেয়েছে সিটি। চলতি মৌসুমে এটি হলান্ডের চতুর্থ হ্যাটট্রিক।
প্রিমিয়ার লিগ ইতিহাসে সবচেয়ে কম ১৯ ম্যাচ খেলে ৪টি হ্যাটট্রিকের রেকর্ড এখন হলান্ডের। আগে এই রেকর্ডটি ছিল রুদ ফন নিস্টলরয়ের। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এই কিংবদন্তি স্ট্রাইকারের লেগেছিল ৬৫ ম্যাচ। উলভসের বিপক্ষে এই জয়ের পর ২০ ম্যাচ শেষে সিটির পয়েন্ট ৪৫।
উলভসের বিপক্ষে সিটি শেষবার হেরেছিল ২০১৯-২০ মৌসুমে। সেই মৌসুমে লিগের দুই ম্যাচেই উলভসের বিপক্ষে হারে সিটি। তবে লিগে এরপর আর সিটি উলভসের বিপক্ষে হারের মুখ দেখেনি। জিতেছে টানা পাঁচ ম্যাচে।
পাঁচ ম্যাচে উলভসের জালে সিটি গোল দিয়েছে ১৬টি। মাঠে নামার আগে তাই সিটি কতটা ফেবারিট ছিল, তা না বললেও চলছে। কিন্তু এরপরও উলভসকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ ছিল না । কারণ এই ম্যাচে পয়েন্ট হারলে তালিকার শীর্ষ দল আর্সেনালের সঙ্গে ব্যবধান আরও বেড়ে যেত সিটির।
এই ম্যাচে দুটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে সিটি। গার্দিওলা শুরুর একাদশের বাইরে রাখেন টটেনহাম ম্যাচের অন্যতম সেরা দুই পারফর্মার হুলিয়ান আলভারেজ ও আকে কে। ম্যাচের শুরু থেকেই মনে হচ্ছিল সিটির গোল পাওয়া ছিল শুধুই সময়ের অপেক্ষা। প্রথম ১৫ মিনিটে ৯২ শতাংশ বলই ছিল হলান্ডদের পায়ে। তবে সিটির ফুটবলাররা উলভসের গোলপোস্টে গোল হওয়ার মতো প্রথম শট নিতে পারে ১৮ মিনিটে। জ্যাক গ্রিলিশের বাড়ানো বলে শট নেন হলান্ড। তবে তাঁর নিচু শট উলভস গোলকিপারকে ফাঁকি দিতে পারেননি।
৩২ মিনিটে ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া রদ্রির শটও উলভসের পোস্টের খানিকটা উপর থেকে যায়। গ্রিলিশ,গুন্দোয়ানও একের পর চেষ্টা করছিলেন, তবে উলভসের রক্ষণ ভাঙতে পারেননি। তবে গোলমেশিন হলান্ডেই সেই ‘ডেডলক’ ভাঙেন।
মাহরেজের তৈরি করা বলে ডি ব্রুইনা দুর্দান্ত ক্রস করেন। সেই ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে বল জালে জড়ান হলান্ড। চলতি মৌসুমে যেটি হলান্ডের ২৩ তম গোল। এই ২৩ গোল করেই গত মৌসুমে গোল্ডেন বুট জিতেছিলেন মোহাম্মদ সালাহ সালাহ ও সন হিউং-মিন। ৪১ মিনিটে পেনাল্টির আবেদন করেন গ্রিলিশ। ডি বক্সের মধ্যে নাথান কলিন্স পেছন থেকে গ্রিলিশের পায়ে আঘাত করেন। ভিআরে চেক করা হলেও পেনাল্টি পায়নি হলান্ডরা।
এই পেনাল্টি না পেলেও দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের ৪৯ মিনিটে পেনাল্টি পায় সিটি। রুবেন নেভস ফাউল করেন গুন্দোয়ানকে। পেনাল্টি থেকে গোল করেন হলান্ড। এখানেই শেষ নয়। ৪ মিনিট পরই গোলকিপারের ভুল আর মাহরেজের সহায়তায় হ্যাটট্রিক করেন হলান্ড। লিগে যেটি হলান্ডের ২৫তম আর সব মিলিয়ে ৩১তম গোল।
এক মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগের কোনো ক্লাবের ফুটবলারের সর্বোচ্চ গোল ৪৪ টি। ২০০২-০৩ সালে ইউনাইটেডের হয়ে রুদ ফন নিস্টলরয় আর ২০১৭-১৮ সালে ৪৪ গোল করেছিলেন সালাহ। হলান্ড এরই মধ্যে ৩১ টি গোল করেছেন। ৪৪ গোলের এই রেকর্ড হলান্ড না ভাঙতে পারলে অবাক হতেই হবে। ৬৩ মিনিটে হলান্ডকে তুলে আলভারেজকে মাঠে নামান গার্দিওলা। তবে ব্যবধান আর বাড়াতে পারেনি সিটি।
প্রিমিয়ার লিগে সিটি এখনো পয়েন্ট তালিকার দুই নম্বরে। ১৮ ম্যাচ শেষে ৪৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আর্সেনাল।