ক্যামেরুনিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি স্যামুয়েল ইতো
ক্যামেরুনিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি স্যামুয়েল ইতো

ইতো বললেন ‘আমি মাফিয়া’, ফিফার কাছে ফিক্সিং ও হুমকির অভিযোগ

ক্যামেরুনের ফুটবল কিংবদন্তি স্যামুয়েল ইতো দেশটির ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি হওয়ার পর অনিয়মের পাহাড় গড়ে তুলেছেন বলে অভিযোগ আছে। ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকা, মিথ্যা তথ্য ছড়ানো, হুমকি দেওয়া, সহিংসতামূলক কর্মকাণ্ডকে উসকে দেওয়া এবং ক্ষমতার অপব্যবহার—ইতোর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগই গুরুতর।

দ্য অ্যাথলেটিক জানিয়েছে, সম্প্রতি এই অভিযোগগুলো একটি নথি আকারে ফিফার নৈতিকতা কমিটিকে পাঠিয়েছেন ক্যামেরুন ফুটবল ফেডারেশনের (ফেকাফুট) সাবেক সহসভাপতি হেনরি এনজাল্লা কুয়ান জুনিয়র। নথিটি ফিফার কাছে পাঠানোর আগে তদন্ত করেছে আফ্রিকা মহাদেশের ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা (সিএএফ)।

সংস্থাটি ইতোর বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়মের অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে এবং নিশ্চিত করেছে ইতোর ‘অনুপযুক্ত আচরণ’ নিয়ে তারা তদন্ত করছে। সিএএফ গত বছরের সেপ্টেম্বরে ইতোকে ক্যামেরুন ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দিতেও ফিফাকে আহ্বান জানিয়েছিল।

আফ্রিকান কাপ অব নেশনসে ক্যামেরুনের খেলা দেখতে আইভরিকোস্টে গিয়েছিলেন ইতো। তাঁর দল ক্যামেরুন নাইজেরিয়ার কাছে হেরে শেষ ষোলো থেকে ছিটকে পড়েছে

ফিফার নৈতিকতা কমিটির কাছে হেনরি এনজাল্লার পাঠানো অনিয়মের প্রমাণাদির খবর ইতোর কাছেও পৌঁছেছে। এ ঘটনার পর এনজাল্লার সঙ্গে ইতোর সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। এত অভিযোগের পরও সাবেক বার্সেলোনা স্ট্রাইকার বিচলিত তো ননই, উল্টো এনজাল্লাকে হুমকি দিয়েছেন।

দ্য অ্যাথলেটিক জানিয়েছে, ইতোর পক্ষ থেকে এনজাল্লাকে একটি হুমকিমূলক বার্তা পাঠানো হয়েছে। যাতে লেখা, ‘আমি এই বিপ্লবের মাফিয়া এবং এখানে আমরা আমাদের নেতাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করি না। আমি এখন পর্যন্ত আমাদের এ অভিযানের স্বার্থ রক্ষা করে চলেছি। যা–ই হোক, তুমি যদি আমার সঙ্গে আজেবাজে কিছু করো, তাহলে এর পরিণতি ভোগ করার জন্য প্রস্তুত হও।’

বিপ্লব বা অভিযান বলতে ইতো ফেডারেশন পরিচালনা নাকি অন্য কিছু বুঝিয়েছেন, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়।  

এনজাল্লা (ডানে) ফিফার কাছে ইতোর অনিয়মের প্রমাণাদি পাঠিয়েছেন

ফিফাকে পাঠানো এনজাল্লার নথিতে ইতোর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, সেসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো তাঁর একাডেমির সঙ্গে কুম্বা সিটি এফসির ম্যাচ ইতোর ইশারায় ফিক্সিং করা হয়েছিল। নথিতে এ ঘটনাকে ‘মানবজাতির ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায়’ বলা হয়েছে।

এ ছাড়া ইতোর নিজ ক্ষমতাবলে তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ভ্যালেন্টিন এনকেওয়াইনের ক্লাবকে জিতিয়ে লিগে উত্তরণের ব্যবস্থা করেন। ভিক্টোরিয়া ইউনাইটেড নামের সেই ক্লাব মৌসুমের প্রথম সাত ম্যাচের চারটিতেই হেরে অবনমনের শঙ্কায় পড়েছিল। এরপর ইতো প্রভাব খাটাতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। এতে ক্লাবটি নিজেদের সর্বশেষ ১৭ ম্যাচের ১১টিতেই জিতে ওপরের ধাপে উন্নীত হয়।

২০২২ কাতার বিশ্বকাপেও বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন ইতো। ব্রাজিল–দক্ষিণ কোরিয়া ম্যাচের দিন আলজেরিয়ার এক ইউটিউবার ভিডিও করতে থাকলে তাঁকে সজোরে লাথি মেরে ফেলে দেন ইতো। ঘটনার পর দোহা পুলিশের কাছে অভিযোগ দেন ওই ইউটিউবার। পরে অবশ্য ক্ষমা চাওয়ায় পার পেয়ে যান ইতো।