‘চ্যাম্পিয়নস’ শব্দটা বিরাট করে লেখা বাসের ওপরের অংশে। বাসের ওপরের খোলা অংশটায় ফুলের মালা লাগানো। আশপাশে সমর্থকদের ভিড় আর ভিড়। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি গেটে দাঁড়ানো যে বাসকে ঘিরে এত হইচই, সেই ছাদখোলা বাসের চালকের আসনে পরিপাটি হয়ে বসে আছেন মোহাম্মদ আবুল কালাম। সাফজয়ী বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলকে তিনিই বহন করবেন ঢাকার রাস্তায়। প্রথম আলোর সাক্ষাৎকারে আবুল কালাম জানাচ্ছিলেন চ্যাম্পিয়নদের বহন করার রোমাঞ্চের কথা।
আপনার পরিচয়?
আবুল কালাম: আমার নাম মোহাম্মদ আবুল কালাম। আমি বিআরটিসিতে ২৪ বছর ধরে কাজ করছি। আমি একজন চালক। আমার সঙ্গে যিনি আছেন, তিনি আমার সহকারী। আমি সিনিয়র, তাই আজ এই গাড়ি চালানোর দায়িত্বটা আমাকে দেওয়া হয়েছে।
আজকের দিনটা নিশ্চয়ই আপনার জন্য বড় আনন্দের…
আবুল কালাম: আমি ২৪ বছর ড্রাইভিং করছি। কখনো ভাবিনি এমন দিন আসবে। এই ২৪ বছরে সবচেয়ে আনন্দ অনুভব করছি আজকে। আর সেদিন চ্যাম্পিয়নদের গাড়ি আমি চালাব। নারী ফুটবলারদের সৌজন্যে সে দিনটা এল।
কখনো ভেবেছিলেন এমন দিন আসবে?
আবুল কালাম: অবশ্যই এটা বিরাট এক পুরস্কার আমার জন্য। গর্বেরও। আমি জীবনেও কল্পনাও করিনি এমন কিছু হবে। শেষ বয়সে এসে বিরাট এক পুরস্কার পেলাম।
আপনার পরিবারের জন্য নিশ্চয়ই বিষয়টি গর্বের।
আবুল কালাম: আমার পরিবারের সবাই খুশি। আমার ছেলেমেয়েরা ফোন দিয়ে বলছে, আমাকে নাকি টিভিতে দেখাচ্ছে। ওরা সবাই খুশি। ওদের জন্যও বিরাট ব্যাপার। আমাদের তো সাধারণ কর্মচারীদের তো কখনো এমন আলোচনায় আসার কথা না। সবার জন্য বিষয়টা নতুন। সবাই রোমাঞ্চিতও।
আপনার ছবি এখন দেশের সব টিভি চ্যানেলে। কেমন লাগছে?
আবুল কালাম: আমার আরেকটা পরিচয় আছে। আমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি চালাই। সেখানে ১২ বছর ধরে কাজ করছি। ওখানকার ছাত্ররাও আমাকে ফোন দিচ্ছে। সবাই বলছে, কালাম ভাই, আপনি তো সেলিব্রিটি হয়ে যাচ্ছেন। সবাই আপনাকে দেখছে। খুব আনন্দ অনুভব করছি।
এই মুহূর্তটা নিশ্চয়ই স্মরণীয় হয়ে থাকবে…
আবুল কালাম: অবশ্যই। আমি এখন অপেক্ষায় আছি, কখন মেয়েরা আসবে। গাড়িতে উঠবে। আজ ঢাকার রাস্তায় আমার গাড়িতে ওরা চড়বে। দিনটা আমি জীবনেও ভুলব না। আজীবন মনে থাকবে এটা।