কোপা আমেরিকায় কলম্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ শেষে দর্শকদের সঙ্গে মারামারিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন উরুগুয়ের কয়েকজন খেলোয়াড়
কোপা আমেরিকায় কলম্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ শেষে দর্শকদের সঙ্গে মারামারিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন উরুগুয়ের কয়েকজন খেলোয়াড়

কোপা আমেরিকায় মারামারি: নুনিয়েজদের পক্ষে কথা বললেন স্কালোনি–মার্তিনেজ

ঘটনা সেমিফাইনালের। কিন্তু তার রেশ এখনো রয়ে গেছে। কোপা আমেরিকার সেই সেমিফাইনালে কলম্বিয়ার কাছে ১–০ গোলে হেরেছিল উরুগুয়ে। ম্যাচ শেষে গ্যালারিতে কিছু কলম্বিয়ান সমর্থকদের রোষানলে পড়েছিল উরুগুয়ের কয়েকজন খেলোয়াড়ের পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের রক্ষা করতে সেখানে গিয়ে মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন উরুগুয়ের দারউইন নুনিয়েজসহ আরও কয়েকজন।

সেমিফাইনাল শেষ হয়েছে, আজ হয়ে গেছে তৃতীয়স্থান নির্ধারণী ম্যাচও। সেই ম্যাচে কানাডাকে টাইব্রেকারে হারিয়ে উরুগুয়ে তৃতীয় হয়ে কোপা আমেরিকা শেষ করেছে। বাংলাদেশ সময় আগামীকাল সকাল ৬টায় ফাইনালে খেলবে আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়া। কিন্তু ফাইনাল ম্যাচের সংবাদ সম্মেলনেও ঘুরেফিরে এসেছে উরুগুয়ে–কলম্বিয়া ম্যাচ শেষের সেই মারামারি। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে হয়েছে আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি ও গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেজকেও।

আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি

উরুগুয়ের খেলোয়াড়দের মারামারিতে জড়িয়ে পড়া নিয়ে তদন্ত করছে কনমেবল। শোনা যাচ্ছে, এর কারণে শাস্তি পেতে পারে উরুগুয়ে দল আর দলটির কয়েকজন খেলোয়াড়। এই শাস্তির বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে উরুগুয়ের কোচ মার্সেলো বিয়েলসা তো কনমেবলকেই ধুয়ে দিয়েছেন। কানাডার কোচ জেসে মার্শও কোপা আমেরিকার আয়োজকদের সমালোচনা করেছেন। এবার উরুগুয়ের খেলোয়াড়দের পক্ষে কথা বলেছেন আর্জেন্টিনা দলের স্কালোনি ও মার্তিনেজ।

আর্জেন্টিনা কোচ এ বিষয়ে বলেছেন, ‘(উরুগুয়ে–কলম্বিয়া ম্যাচের) দৃশ্যগুলো খুব দুঃখজনক ছিল। আমার মনে হয়, (উরুগুয়ের খেলোয়াড়েরা যা করেছে) এ রকম মুহূর্তে যে কেউই একই কাজ করবে।’

স্কালোনি এরপর গত বছরের নভেম্বরে ব্রাজিলের মারাকানা স্টেডিয়ামে নিজেদের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন, ‘আমাদের পরিবারের সদস্যদের যখন মারাকানার গ্যালারিতে এমনই পরিস্থিতিতে দেখেছিলাম, আমাদেরও একই ঘটনার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল। আমরা তাদের (স্বজনদের) ড্রেসিংরুমে নিয়ে যাই। খুব বাজে দৃশ্য ছিল সেগুলো। পরিবারের সদস্যদের এমন বিপর্যয়ের মধ্যে দেখার পর কাউকে দোষ দেব কি না, বুঝতে পারছি না। তবে এ ক্ষেত্রে যে কেউই মরিয়া হয়ে উঠবে।’

আর্জেন্টিনার গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেজ

স্কালোনি এরপর যোগ করেন, ‘আমাদের এটা বিবেচনা করতে হবে। কারণ, আমরা বলি খেলোয়াড়েরাই মূল আকর্ষণ। আমরা বলি যে তারাই আদর্শ হবে। কিন্তু যখন এমনটা ঘটে, আমি জানি না, অনেকেই হয়তো ভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবে। আমি মনে করি, খেলোয়াড়েরা যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, যেকোনো সাধারণ ও স্বাভাবিক মানুষই সেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবে।’ স্কালোনি এরপর ফাইনালের দুই দলের সমর্থকদের উদ্দেশ করেই বলেছেন, ফাইনালের পর এমন ঘটনা যেন না ঘটে।

আর্জেন্টাইন গোলকিপার মার্তিনেজও নিজেদের ব্রাজিলের অভিজ্ঞতার বিষয়টি টেনে এনেছেন, ‘আমি মনে করি (স্কালোনি) এর মধ্যেই সবকিছু খু্ব ভালোভাবে বলেছে। ব্রাজিলে আমাদের সঙ্গে এমনটা হয়েছে। ঘটনা যেখানে ঘটেছে, তার কাছাকাছি আমার পরিবারের এক সদস্য ছিল। সে দেখেছে ব্রাজিলের পুলিশ তরুণ আর মেয়েদের লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছে। এটা দেখাটা কঠিন এক বিষয়। আপনি যদি মেয়েদের বা আপনার মা–বাবাকে মারতে দেখেন, তাহলে তো আমার মনে হয় দারউইন আর ওলিভেরা বা অন্যরা যা করেছে, সেটাই করবেন।’