ম্যানচেস্টার সিটি তারকা আর্লিং হলান্ড
ম্যানচেস্টার সিটি তারকা আর্লিং হলান্ড

হলান্ডকে থামানোর উপায় বললেন নেস্তা

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে প্রতিপক্ষ দলগুলোর রক্ষণকে ছিঁড়েখুড়ে ফেলছেন আর্লিং হলান্ড। কথাটা শুনতে খানিকটা নির্মম ও রুঢ় শোনালেও এটাই সত্যি। ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে এবার লিগে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ৩টি হ্যাটট্রিক করেছেন, সেটাও মাত্র ৮ ম্যাচের মধ্যে!

লিগে এরই মধ্যে তাঁর গোলসংখ্যা ১৪। বলা হচ্ছে, প্রিমিয়ার লিগে গোলের রেকর্ডকে হলান্ড অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারেন। তা না হয় সময়ের হাতে তোলা রইল, আপাতত সবাই ব্যস্ত হলান্ডকে থামানোর উপায় বের করতে। তেমন কোনো পথ পাওয়া যাচ্ছে না বলে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এক সমর্থক কিছুদিন আগে অনলাইনে পিটিশন করেন, হলান্ডকে ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ করার দাবি তাঁর। যুক্তি? হলান্ড নাকি মানুষ নয়, রোবট!

নরওয়েজীয় এ স্ট্রাইকারকে নিয়ে আলোচনার ঝড় ইতালির কিংবদন্তি ডিফেন্ডার আলেসান্দ্রো নেস্তারও কানে গেছে। বিষ্ময়কর ব্যাপার হলো, হলান্ডকে হুমকি বলে মনে করেন না নেস্তা। তাঁকে আটকানোর পথও বলেছেন ৪৬ বছর বয়সী সাবেক এই সেন্টারব্যাক। তবে নেস্তার পরিচয়টা আগে দিয়ে রাখা ভালো। তাহলে হলান্ডকে নিয়ে তাঁর কথার ওজনটা টের পাওয়া যাবে।

আলেসান্দ্রো নেস্তা। যখন মিলানে খেলতেন

নেস্তা ফুটবল ইতিহাসেই অন্যতম সেরা ডিফেন্ডারদের একজন। গতি, শৈল্পিক ট্যাকল, বলে রেশমি নিয়ন্ত্রণ, পরিচ্ছন্ন পাস এবং প্রতিপক্ষ দলের স্ট্রাইকারদের কড়া মার্কিংয়ে রাখতে নেস্তার জুড়ি ছিল না। কথাটা একটু ভুল হলো। জুড়ি ছিল। এসি মিলানে পাওলো মালদিনি আর নেস্তা যখন একসঙ্গে খেলতেন, তখন তাঁদের একে–অপরের সঙ্গে তুলনা টানা হতো। লাৎসিওতে (১৯৯২–২০০২) নয় মৌসুম এবং মিলানে (২০০২–২০১২) দশ মৌসুম কাটানো নেস্তা একাধিকবার চ্যাম্পিয়নস লিগ ও সিরি আ জিতেছেন। ইতালির হয়ে জিতেছেন ২০০৬ বিশ্বকাপও।

ইতালিয়ান রক্ষণে নেস্তা–মালদিনি জুটি কিংবদন্তির মর্যাদাও পেয়েছে। সব মিলিয়ে প্রতিপক্ষ দলের স্ট্রাইকারকে কীভাবে ফাউল না করেও কড়া মার্কিংয়ে রাখা যায় তার ‘রেফারেন্স পয়েন্ট’ হতে পারেন নেস্তা।

হলান্ডকে নিয়ে লন্ডনের ফুটবল–সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইট কোপা৯০–কে নেস্তা বলেছেন, ‘আমি হলান্ডকে থামাতে পারি। কারণ আমি ব্রাজিলের রোনালদোর বিপক্ষে খেলেছি। হলান্ড খুব ভালো, কিন্তু রোনালদো অন্য কিছু ছিল। মেসি এবং ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর বিপক্ষেও খেলেছি। কিন্তু ব্রাজিলের রোনালদো আলাদা কিছু।’

নেস্তা লাৎসিওতে থাকতে ১৯৯৭ সালে বার্সেলোনা ছেড়ে ইতালিয়ান ক্লাব ইন্টার মিলানে যোগ দেন। ২০০২ সাল পর্যন্ত ইন্টারে ছিলেন রোনালদো। সে সময় ইতালিয়ান লিগে রোনালদোকে আটকাতে বহুরকম ছক কষতে হয়েছে নেস্তা ও মালদিনিকে। কখনো সফল হয়েছেন, কখনো হননি।

ম্যানচেস্টার সিটি স্ট্রাইকারকে কীভাবে আটকাতে হবে, সেই উপায়ও বলেছেন নেস্তা, ‘আমি হলে হলান্ডের গায়ের সঙ্গে সেঁটে থাকতাম। তাকে জায়গা দিতাম না। দৌড়ালে থামানোর চেষ্টা করতাম। তাকে বেশি জায়গা দেওয়া মানে আপনি শেষ।’

সিটির হয়ে শেষ দুই ম্যাচে ৫ গোল করেছেন হলান্ড। লিগ ম্যাচে আজ সাউদাম্পটনের মুখোমুখি হবে ম্যানচেস্টার সিটি। অর্থাৎ, সাউদাম্পটনের ডিফেন্ডারদের আজ হলান্ড–পরীক্ষা দিতে হবে।