এই যন্ত্রণা রোমেলু লুকাকু ভুলবেন কী করে? গত বিশ্বকাপে তাঁর ভুলেই বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল বেলজিয়ামকে। সেই যন্ত্রণাকে কবর দেওয়ার সুযোগ লুকাকুর সামনে এসেছিল গতকাল রাতে। কিন্তু আক্ষেপ মেটানোর বদলে আরও বাড়ালেন বেলজিয়ান ফরোয়ার্ড। চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে পিছিয়ে পড়া ইন্টার মিলানকে সমতায় ফেরানোর দারুণ সুযোগ পেয়েও বল জালে জড়াতে পারেননি লুকাকু।
আরেকবার সতীর্থের গোলের প্রচেষ্টার সামনে অসাবধানতাবশত বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন এই ফরোয়ার্ড। তাঁর এ দুই ভুলই ইন্টারকে ফিরতে দেয়নি ম্যাচে। বিশ্বকাপের পর চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালেও এমন ভুল করে আলোচনায় এখন লুকাকু। ফরাসি কিংবদন্তি থিয়েরি অঁরি বলেছেন, মানুষ এখন হারের দায় লুকাকুকেই দেবে। এই ভুলের বেদনা বুকে নিয়েই থাকতে হবে তাঁকে।
ইস্তাম্বুলের ফাইনালে ৬৮ মিনিটে রদ্রির গোলে পিছিয়ে পড়ে ইন্টার। এরপর ঘুরে দাঁড়ানোর মরিয়া চেষ্টায় ২ মিনিট পরই গোলে সুযোগ তৈরি করে ইতালিয়ান ক্লাবটি। তবে ফেদেরিকো দিমারকোর হেড বারে লেগে ফিরে আসে। একই খেলোয়াড়ের ফিরতি প্রচেষ্টায় বল জালে জড়ানোর পথেই ছিল। কিন্তু সেখানে বাধ সাধেন ইন্টার ফরোয়ার্ড লুকাকু। অসাবধানতাবশত বলের সামনে পড়ে যান এই স্ট্রাইকার। তাঁর গায়ে লেগে বল ফিরে এলে গোলবঞ্চিত হয় ইন্টার। সেই ভুল ক্ষমা করা গেলেও ৮৮ মিনিটে লুকাকু যা করেছেন, সেটি ভুলতে হয়তো আরও অনেক দিন লাগবে ইন্টার সমর্থকদের।
রবিন গোসেন্স দারুণ এক কাটব্যাক করে বল দিয়েছিলেন বেলজিয়ান স্ট্রাইকারের সামনে। লুকাকুর সামনে তখন শুধু এদেরসন। দুই পাশে ফাঁকা জায়গা। কিন্তু ইন্টার স্ট্রাইকার হেড নিলেন একেবারে এদেরসনকে লক্ষ্য করে। বলটা নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি এদেরসন, তবে ফিরতি বল বাইরে পাঠিয়ে কর্নারের বিনিময়ে সিটিকে বাঁচিয়ে দেন রুবেন দিয়াজ। ইন্টারের আশাও শেষ হয়ে যায় লুকাকুর ওই মিসেই।
লুকাকুর এই দুই ভুল নিয়ে অঁরি বলেছেন, ‘বিশ্বকাপের পর যে যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে তাকে যেতে হয়েছিল, এখনো তেমনটাই হবে। যদিও দিমার্কোর প্রচেষ্টার সময় যা হয়েছে, সেটি এড়ানো কঠিন ছিল কিন্তু মানুষ তাকেই দোষ দেবে।’
এই যন্ত্রণা নিয়ে লুকাকুকে চলতে হবে জানিয়ে অঁরি আরও বলেছেন, ‘ছয় গজি বক্সের হেডটি বারবার ফিরে আসবে এবং তাড়া করে বেড়াবে। তাকে এটা নিয়েই বাঁচতে হবে। আমি নিজেও ফাইনাল জিতেছি, ফাইনাল হেরেছি। কখনো কখনো আপনি সঠিক জায়গায় থাকেন না।’
এর আগে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে বাঁচা–মরার ম্যাচেও একই ভুল করেছিলেন লুকাকু। বিশ্বকাপের সেই ম্যাচে ৬০ মিনিটে গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন বেলজিয়ান ফরোয়ার্ড। দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে পোস্টের খুব কাছে গিয়ে শট নিয়েছিলেন কারাসকো। এগিয়ে এসে রুখে দেন ক্রোয়েশিয়া গোলকিপার দমিনিক লিভাকোভিচ। বল পেয়ে যান লুকাকু।
তাঁর জোরালো শট পোস্টে লেগে দিক পাল্টে যায়। এরপর খালি পোস্ট পেয়েও গোল করতে পারেননি। তাঁর হেড চলে যায় বাইরে। ৯০ মিনিটে থরগান হ্যাজার্ডের ক্রস থেকে বল জালে জড়ানোর সুযোগ ছিল লুকাকুর। কিন্তু বুক দিয়ে বল রিসিভ করে সুযোগ নষ্ট করেন তিনি।