গোলের পর দিয়াজের উদ্‌যাপন
গোলের পর দিয়াজের উদ্‌যাপন

অবিশ্বাস্য দিয়াজ-লুনিনে রিয়াল মাদ্রিদের জয়

আরবি লাইপজিগ ০: ১ রিয়াল মাদ্রিদ

চোটের কারণে জুড বেলিংহাম না থাকায় সুযোগটা পেয়েছিলেন ব্রাহিম দিয়াজ। আর সেই সুযোগ তিনি দারুণভাবে কাজেও লাগিয়েছেন। চোখধাঁধানো এক গোলে আরবি লাইপজিগের মাঠে মহামূল্যবান এক জয় এনে দিয়েছেন রিয়ালকে। রেড বুল অ্যারেনায় চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষালোর প্রথম লেগে রিয়ালের জয় ১-০ গোলে।

রিয়াল যখন গোলের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল, তখনই দলকে অসাধারণ গোলটি এনে দেন দিয়াজ। ম্যাচের ৪৮ মিনিটে ডান প্রান্ত দিয়ে প্রায় মাঝ মাঠ থেকে বল নিয়ে লাইপজিগের তিন খেলোয়াড়কে কাটান দিয়াজ। এরপর বক্সে ঢুকে আরও দুই ডিফেন্ডারের বাঁধা এড়িয়ে লক্ষ্যভেদ করেন দারুণ এক শটে।

গোলের পর যে বেলিংহামের জায়গায় সুযোগ পেয়েছেন তাঁর মতো উদ্‌যাপনও করেন দিয়াজ। আর এ গোলই শেষ পর্যন্ত উদ্ধার করেছে রিয়ালকে। রিয়ালের এ জয়ে বড় কৃতিত্ব আছে গোলরক্ষক আন্দ্রি লুনিনেরও। এদিন ৯টি গোল সেইভ করেছেন এ গোলরক্ষক। ২০০৩-০৪ সালের পর চ্যাম্পিয়নস লিগে দ্বিতীয় গোলরক্ষক হিসেবে ৯টি গোল সেইভ করলেন লুনিন। এর আগে ২০২২ সালের চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে লিভারপুলের বিপক্ষে ৯টি গোল সেইভ করেন থিবো কোর্তোয়া।

ঘরের মাঠে ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই লক্ষ্যভেদ করে লাইপজিগ। যদিও ভিএআরে পরীক্ষার পর বাতিল হয় সেই গোল। একটুর পর ফের অল্পের জন্য গোল বঞ্চিত হয় তারা। গোল না পেলেও শুরুতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দখলেই রাখে লাইপজিগ। তবে ধীরে ধীরে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে রিয়াল।

একের পর এক গোল বাঁচিয়েছেন লুনিন

এর মধ্যে ম্যাচের ৯ মিনিটে কাছাকাছি গিয়েও গোল পায়নি রিয়াল। তবে ১০ মিনিটের মাথায় গোলরক্ষক লুনিন ত্রাতা না হলে তখনই পিছিয়ে পড়তে পারত রিয়াল। এরপর দুদলই আক্রমণ প্রতি-আক্রমণে জমিয়ে তোলে ম্যাচটা। উভয়ে চেষ্টা করছিল আক্রমণের ধারা থেকে না সরে প্রতিপক্ষকে চাপে রাখার।

রিয়াল পরপর কয়েকটি আক্রমণে কাঁপিয়ে দেয় লাইপজিগ রক্ষণকে, যদিও সেসব আক্রমণ গোলের জন্য যথেষ্ট ছিল না। অন্য দিকে লাইপজিগের জন্য বড় সমস্যা ছিল তাদের ফিনিশিং দুর্বলতা। নয়তো শুরুতেই একাধিক গোল করতে পারত তারা। এমনকি পরের দিকেও গোলের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল লাইপজিগ। কিন্তু শেষ শটটা আর ঠিকঠাক নিতে পারেনি তারা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য প্রথমার্ধে কোনো দলই গোল আদায় করতে পারনি।

বিরতির পরও লাইপজিগ প্রেস করে খেলার চেষ্টা করে। কিন্তু ৪৯ মিনিটে মিনিটে ম্যাচের রূপ বদলে দেয় দিয়াজের অবশ্বিাস্য গোলটি। তাঁর গোলটি দেখে ধারাভাষ্যকার নিজেই বলে ওঠেন, ‘এইটা দেখে লিওনেল মেসি নিশ্চয় গর্বিত হবে।’ সত্যিকার অর্থেই এ যেন মেসিকে মনে করিয়ে দেওয়া এক গোল।

একটু পর পোস্টের নিচে ফের লুনিনের চমক। তিনি দানি অলমোর শট ঠেকিয়ে দিলে গোল পাওয়া হয়নি লাইপজিগের। গোল খেয়েও অবশ্য দমে যায়নি দলটি। একের পর এক আক্রমণে নিয়মিত রিয়াল রক্ষণের পরীক্ষা নেয় তারা। কিন্তু কখনো নিজেদের ভুলে আবার কখনো রিয়াল গোলরক্ষকের দৃঢ়তায় গোল পাওয়া হয়নি তাদের।

প্রতি আক্রমণে রিয়ালও অবশ্য একাধিকবার কাছাকাছি পৌঁছে যায়। কিন্তু তারাও দ্বিতীয় গোলটি পাচ্ছিল না কোনোভাবেই। এমনকি রিয়ালের শট পোস্টে লেগেও ফিরে আসে। ৮১ মিনিটে গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি লিপজিগের বেঞ্জামিন সেসকো। এমন গোল মিস করার পর অবশ্য ম্যাচ জেতা অনেক কঠিন হয়ে যায়। তবে স্বাগতিকদের ব্যর্থতার কথা বলার পাশাপাশি কৃতিত্ব দিতে হবে লুনিনকেও। পোস্টের নিচে আজ অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়ছেন তিনি।  নয়তো আজ একাধিক গোল খেতে পারত রিয়াল।

এ জয়ে দুই লেগের লড়াইয়ে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকল ‍রিয়ালই। রিয়ালের মাঠে দ্বিতীয় লেগে দুই দল মুখোমুখি হবে আগামী ৭ মার্চ।