বার্সা ও রিয়ালে সোনালি সময় পার করে এসেছেন মেসি–রোনালদো
বার্সা ও রিয়ালে সোনালি সময় পার করে এসেছেন মেসি–রোনালদো

‘রোনালদো দানব ছিল আর মেসি দানবের বাবা’

লিগ কাপের শেষ ষোলোয় আজ রাতে টটেনহামের মুখোমুখি হবে ম্যানচেস্টার সিটি। এ ম্যাচ নিয়ে গতকাল সিটির সংবাদ সম্মেলনে ব্যালন ডি’অর নিয়ে কথা বলেন সিটি কোচ পেপ গার্দিওলা। স্প্যানিশ ফুটবলে ভূয়সী প্রশংসা করে গার্দিওলা বলেছেন, জাভি হার্নান্দেজ ও আন্দ্রেস ইনিয়েস্তাও ব্যালন ডি’অর জিততে পারতেন। কিন্তু লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর কারণে তা সম্ভব হয়নি।

এবার ব্যালন ডি’অর জিতেছেন স্পেন ও সিটির ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার রদ্রি। তার প্রশংসা করতে গিয়ে স্প্যানিশ ফুটবলের প্রসঙ্গ টানেন গার্দিওলা, ‘গত ১০-১৫ বছরে বিশ্বে স্প্যানিশ ফুটবলের প্রভাব খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেটা শুধু ট্রফি জয়ের বিচারে নয়, যেভাবে তারা খেলে এবং খেলোয়াড় ও কোচদের প্রজন্ম মিলিয়েও।’ গত দশকে স্প্যানিশ ফুটবলের অবিশ্বাস্য উন্নতির প্রসঙ্গ টেনে গার্দিওলা আরও বলেছেন, ‘জাতীয় পর্যায়ে আলাদা সব কোচ ও অবিশ্বাস্য খেলোয়াড়দের নিয়ে গত দশকে স্প্যানিশ ফুটবল অবিশ্বাস্য কাজ করেছে। বিশ্বকাপ জিতেছে, ইউরোও জিতেছে কিন্তু কখনো এই ট্রফি (ব্যালন ডি’অর) জিততে পারেনি।’

ম্যানচেস্টার সিটি কোচ পেপ গার্দিওলা

১৯৬০ সালে লুইস সুয়ারেজের পর দ্বিতীয় স্প্যানিশ হিসেবে এবার ব্যালন ডি’অর জিতেছেন রদ্রি। গার্দিওলা বার্সায় তাঁর সময়ের উদাহরণও দিয়েছেন। আর সে সময়ের কথা বলতে গিয়ে তিনি টেনেছেন মেসি ও রোনালদোকে। ২০০৮ থেকে ২০১২ পর্যন্ত বার্সার কোচ ছিলেন গার্দিওলা। তাঁর সময়ে মেসি, জাভি, ইনিয়েস্তা, সের্হিও বুসকেটস, কার্লোস পুয়োল, ডেভিড ভিয়াদের নিয়ে ‘স্বপ্নের দল’ গড়েছিল বার্সা। ‘ট্রেবল’ জয়ের পাশাপাশি সে সময় বিশ্ব ফুটবলে রাজত্ব করেছে গার্দিওলার বার্সা।

ক্রিস্টিয়ানো দানব ছিল আর মেসি দানবের বাবা। গত ১৫-২০ বছরে দুজনেই অবিশ্বাস্য খেলেছে। হয়তো তখন জাভি-ইনিয়েস্তাও ব্যালন ডি’অর জয়ের যোগ্য ছিল।
পেপ গার্দিওলা, ম্যানচেস্টার সিটি কোচ

গার্দিওলা সে সময়ের উদাহরণ টেনে বলেছেন, ‘সে সময়ে মনে আছে বার্সেলোনার একাডেমি থেকে উঠে আসা তিনজন খেলোয়াড় ব্যালন ডি’অর জয়ের জন্য মনোনীত হয়েছিল। জাভি ও ইনিয়েস্তা জিততে পারেনি; কারণ, সে সময়ে একটা দানব ছিল—মেসি। ক্রিস্টিয়ানো ছাড়া কেউ তাকে হারাতে পারেনি।’

২০১০ ব্যালন ডি’অর মেসি জিতলেও ভোটের ভিত্তিতে দ্বিতীয় হয়েছিলেন ইনিয়েস্তা ও তৃতীয় হয়েছিলেন জাভি। ২০০৯ ও ২০১১ সালেও তৃতীয় হন জাভি। ইনিয়েস্তা তৃতীয় হন ২০১২ সালে। ২০০৯ থেকে ২০১২—এই চার বছরই ব্যালন ডি’অর জিতেছেন মেসি। রোনালদো প্রথম ব্যালন ডি’অর জেতেন ২০০৮ সালে। এরপর ২০১৩, ২০১৪, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে সর্বশেষ ব্যালন ডি’র জেতেন পর্তুগিজ এই কিংবদন্তি। সব মিলিয়ে রেকর্ড আটবার এই পুরস্কার জিতেছেন মেসি। রোনালদো জিতেছেন পাঁচবার। ২০০৮ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত মেসি-রোনালদোর বাইরে আর কেউ ব্যক্তিগত শ্রেষ্ঠত্বের এই ট্রফি জিততে পারেননি।

এবার ব্যালন ডি’অর জিতেছেন স্পেন ও সিটির ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার রদ্রি

জাভি-ইনিয়েস্তার ব্যালন ডি’অর জিততে না পারার প্রসঙ্গে মেসি-রোনালদোকে টেনে গার্দিওলা আরও বলেছেন, ‘ক্রিস্টিয়ানো দানব ছিল আর মেসি দানবের বাবা। গত ১৫-২০ বছরে দুজনেই অবিশ্বাস্য খেলেছে। হয়তো তখন জাভি-ইনিয়েস্তাও ব্যালন ডি’অর জয়ের যোগ্য ছিল। তাই আমার মনে হয় বিশ্বব্যাপী স্প্যানিশ ফুটবলের যা পাওয়ার ছিল, গতকাল (পরশু) সেটাই পেয়েছে রদ্রি।’

ক্লাব ও জাতীয় দল মিলিয়ে মেসি-রোনালদোর গোলসংখ্যা ১৭০০–এর বেশি। রোনালদোর গোলসংখ্যা ৯০৭, মেসির ৮৪৯। ৩৭ বছর বয়সী মেসি এখন যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে খেলছেন। ৩৯ বছর বয়সী রোনালদো খেলছেন সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসরে।