জুরিখে অবস্থিত ফিফা সদর দপ্তর
জুরিখে অবস্থিত ফিফা সদর দপ্তর

‘চুমু-কাণ্ডে’ শাস্তিমূলক কার্যক্রমের ঘোষণা ফিফার

নারী বিশ্বকাপের ফাইনালে ‘চুমু-কাণ্ডে’ বিতর্কিত স্পেন ফুটবল ফেডারেশনের (আরএফইএফ) প্রধান লুইস রুবিয়ালেসের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কার্যক্রমের ঘোষণা দিয়েছে ফিফা।

বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি জানিয়েছে, রুবিয়ালেসের আচরণ ফিফা ডিসিপ্লিনারি কোডের ধারা ১৩-এর দুটি অনুচ্ছেদ ভঙ্গ করে থাকতে পারে। এ বিষয়ে পরবর্তী বিজ্ঞপ্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।

আজ ফিফা ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

রুবিয়ালেসের বিরুদ্ধে ফিফা যে বিধিভঙ্গের সম্ভাবনার কথা বলেছে, সেটি ‘আপত্তিকর আচরণ ও ফেয়ার প্লের নীতি লঙ্ঘন’ বিষয়ক। এর প্রথম অনুচ্ছেদে খেলার সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের ফুটবল আইনকে সম্মান দেখানো ও নীতিমালা মেনে চলার বিষয়ে বলা হয়েছে। আর দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে আছে কী কী ধরনের আচরণে শাস্তির মুখে পড়তে হবে; যার মধ্যে আছে শোভন আচরণের মৌলিক নীতি লঙ্ঘন, ফুটবল ও ফিফার সুনাম ক্ষুণ্ন হয় এমন আচরণ এবং খেলাধুলার আয়োজনকে অখেলোয়াড়সুলভ কর্মকাণ্ডে পরিণতকরণের মতো সুস্পষ্ট উদাহরণ।

নারী বিশ্বকাপ জয়ের পর হেনি হেরমোসোকে জড়িয়ে ধরে চুমু দেন লুইস রুবিয়ালেস

কয়েক দিন ধরে ফুটবলের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান রুবিয়ালেসের বিরুদ্ধে এ ধরনের আচরণের অভিযোগ তুলে শাস্তির দাবি জানিয়ে আসছে। ২০ আগস্ট সিডনিতে ফিফা নারী বিশ্বকাপের ফাইনালের পুরস্কার মঞ্চে রুবিয়ালেস স্প্যানিশ মিডফিল্ডার হেনি হেরমোসোকে দৃষ্টিকটুভাবে চুমু দিয়ে বসেন। শুধু তা–ই নয়, একটি ভিডিওতে দেখা যায়, স্পেনের জয় উদ্‌যাপনের সময় দুই হাত দিয়ে নিজের জননেন্দ্রিয় ধরে ছিলেন রুবিয়ালেস, এ সময় প্রায় দুই মিটার দূরেই স্পেনের রানি লেতিজিয়া তাঁর মেয়েকে নিয়ে বসে ছিলেন।

রুবিয়ালেসের এ ধরনের আচরণে শাস্তির দাবি জানিয়েছে দেশটির নারী ফুটবলারদের ইউনিয়ন ‘ফুটপ্রো’। ভুক্তভোগী হেরমোসোও বিবৃতিতে একই দাবি জানান। স্পেনের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ইয়োলান্দা দিয়াজ আগেই রুবিয়ালেসকে ‘পদত্যাগ’ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

নারী বিশ্বকাপ ফাইনালের পুরস্কার মঞ্চে লুইস রুবিয়ালেসের কাণ্ড সমালোচনার জন্ম দেয়

শুধু স্পেনেই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকেও রুবিয়ালেসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে। মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মুখপাত্র কার্লোস দি লাস হেরাস স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনকে ‘জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ, ঘটনার যথাযথ তদন্ত এবং খেলোয়াড়দের সুরক্ষায় মনোযোগ’ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। অ্যামনেস্টি জানিয়েছে, আরএফইএফ ব্যবস্থা নিতে না পারলে তারা স্প্যানিশ হাই কাউন্সিল অব স্পোর্টকে (সিএসডি) এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানাবে।

অবশ্য স্পোর্টস কাউন্সিলের সভাপতি ভিক্টর ফ্রাঙ্কোস এরই মধ্যে এ বিষয়ে তাঁদের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। গতকাল তিনি রেডিও স্টেশন ‘কাদেনা এসইআর’কে বলেন, ‘স্পেনের ফুটবল ফেডারেশন যদি এ নিয়ে কোনো ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে স্পোর্টস কাউন্সিল নেবে। ফেডারেশনকে বলেছি এই (তদন্ত) প্রতিবেদন স্বচ্ছ হতে হবে এবং দ্রুত দাখিল করতে হবে। তা না হলে অবশ্যই এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার বাধ্যবাধকতা আছে আমাদের।’

স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম এল পাইস জানিয়েছে, সরকারি কৌঁসুলিরা চেষ্টা করছেন ব্যাপারটি কীভাবে আদালতে নেওয়া যায়। সেটি করা গেলে ভিক্টর ফ্রাঙ্কোস রুবিয়ালেসকে নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা অর্জন করবেন। রুবিয়ালেসকে স্পেন ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি পদ থেকে সরানোর ক্ষমতা আছে আদালতেরও।