জাতীয় দল থেকে অবসর নিয়েছিলেন ২০১৮ বিশ্বকাপের পরই। কয়েক দিন আগে পেশাদার ফুটবলকেও বিদায় বলে দিয়েছেন মেসুত ওজিল। আপাতত কিছুদিন তাঁর ফুটবলহীন জীবন। তবে সেই জীবনেও ফুটবল নিয়ে কথা বলতে হচ্ছে তুরস্কের বংশোদ্ভূত এই জার্মান ফুটবলারকে।
এই যেমন দুই দিন আগেই স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক মার্কার সঙ্গে এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে নিজের খেলোয়াড়ি জীবনের স্মৃতিচারণা করেছেন রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক মিডফিল্ডার।
সেখানেই শুনিয়েছেন বার্সেলোনার খেলার ধরন পছন্দ হওয়ার পরও তিনি কীভাবে মাদ্রিদের খেলোয়াড় হয়ে গেলেন, সেই গল্প। বার্সেলোনার তখনকার কোচ পেপ গার্দিওলার অবহেলা আর রিয়াল মাদ্রিদের তখনকার কোচ জোসে মরিনিওর কাছ থেকে পাওয়া সম্মানই নাকি তাঁর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে দিয়েছিল।
২০১০ বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফর্ম করেই বড় ক্লাবগুলোর চোখে পড়েন সেই সময়ে ভেরডার ব্রেমেনে থাকা ওজিল। তাঁকে পাওয়ার দৌড়ে নেমেছিল রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা ও আর্সেনালের মতো ক্লাব।
শেষ পর্যন্ত ওজিল কিসের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, সেই গল্পটা শোনা যাক তাঁর মুখ থেকেই, ‘শেষ পর্যন্ত ব্যাপারটা এমন দাঁড়াল, আমাকে রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার মধ্যে একটা ক্লাব বেছে নিতে হবে। টাকাপয়সা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো কিছু ছিল না। আমি ঠিক করলাম, দুটি ক্লাবই ঘুরে দেখে তারপর সিদ্ধান্ত নেব। সেই সময় জোসে মরিনিওই ব্যবধানটা গড়ে দিলেন। রিয়াল মাদ্রিদে যাওয়ার পর তিনি আমাকে ভিআইপির সম্মান দিয়ে সব ঘুরিয়ে দেখালেন। আমি অসাধারণ স্টেডিয়ামটা দেখলাম, রিয়াল যত ট্রফি জিতেছে সব দেখলাম। ওসব দেখে আমার রোমাঞ্চকর অনুভূতি হলো। যেখানে বার্সেলোনায় সফরটা ছিল খুবই হতাশাজনক। পেপ গার্দিওলার সময়ই হয়নি আমার সঙ্গে দেখা করার।’
গার্দিওলার এই অবহেলার কারণেই বার্সার ওপর থেকে মন উঠে গিয়েছিল বলে জানিয়েছেন ওজিল, ‘ওই সফরের আগে আমার বার্সার খেলার ধরন খুব পছন্দ ছিল। আমিও ভেবেছিলাম, ওখানেই যোগ দেব। কিন্তু জোসে মরিনিও আমার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কাজটা সহজ করে দিলেন। ওই সফরের পর আমি শতভাগ নিশ্চিত হয়ে গেলাম, আমি মাদ্রিদিস্তাই হতে চাই।’
শুধু রিয়াল মাদ্রিদে কীভাবে যোগ দিলেন, এই স্মৃতিচারণাই নয়, ওজিল বলেছেন রিয়াল মাদ্রিদে সেই সময়ে তাঁর সবচেয়ে প্রিয় সতীর্থর নামও। সেই নামটা অবশ্য খুবই অনুমেয়—ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। এমনকি রোনালদোকে সর্বকালের সেরা বলেই মনে করেন তিনি, ‘ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সঙ্গে খেলাটা এত আনন্দদায়ক ছিল আমার জন্য! আমার চোখে সে-ই সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়। মাঠে আমাদের বোঝাপড়া এত চমৎকার ছিল, একেবারে নিখুঁত।’
সর্বকালের সেরা হিসেবে তো রোনালদোর নাম বললেন, ‘লিওনেল মেসি’র নামটাও এল ওজিল অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে। সেই প্রশ্নটা ছিল, ‘যাদের বিপক্ষে খেলেছেন, তাদের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষ ছিল কে?’
উত্তরটা পাওয়ার পর আবার তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ‘কেন?’
এবার ওজিলের উত্তর, ‘আমার মনে হয়, সবাই জানে, কেন!’