নাপোলির সঙ্গে ডিয়েগো ম্যারাডোনার সম্পর্কটা ছিল অন্য রকম এক ভালোবাসার। ম্যারাডোনা যেমন ইতালিয়ান ক্লাবটিকে নিজের সেরাটা উজাড় করে দিয়েছিলেন, নাপোলিও ভালোবাসার জবাবটা ভালোবাসা দিয়েই দিয়ে এসেছে। ম্যারাডোনার মৃত্যুর পর বুয়েনস এইরেসের মতো শোকের সমুদ্রে ভেসেছিল নেপলসও।
যে নাপোলির হয়ে ম্যারাডোনা সাফল্যের শিখর ছুঁয়েছিলেন, তারাও বিভিন্ন সময় ভালোবেসে স্মরণ করেছেন ম্যারাডোনাকে। এমনকি জার্সিতে ম্যারাডোনার ছবি এঁকেও তাঁকে স্মরণ করেছে ক্লাবটি। তবে এখন থেকে আর নিজেদের জার্সিতে ম্যারাডোনার ছবি ব্যবহার করতে পারবে না নাপোলি।
ম্যারাডোনার পাঁচ সন্তানের সঙ্গে তাঁর সাবেক ম্যানেজার স্তেফানো সেসির মধ্যকার আইনি বিরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এখন আর জার্সিতে ম্যারাডোনার ছবি ব্যবহার করতে পারবে না নাপোলি।
ইতালিয়ান ক্লাবটি ম্যারাডোনা মারা যাওয়ার পর থেকে তাঁর ছবিসংবলিত চারটি জার্সি পরেছে। যার স্বত্ব ম্যারাডোনার মৃত্যুর কয়েক মাস আগে নাপোলি কিনে নিয়েছিল সেসির কাছ থেকে।
কিন্তু ম্যারাডোনার পরিবার বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি। তাদের অনুমতি না নিয়ে ছবি ব্যবহার করায় আদালতের শরণাপন্ন হয় ম্যারাডোনার পরিবার। আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির পরিবারের পক্ষ থেকে আইনজীবীরা যেকোনোরূপে ছবির ব্যবহার বন্ধ করতে আদালতে আবেদন করে।
সেই সঙ্গে অনুরোধ করে ৪ লাখ ৫০ হাজার ইউরোর সম্পদ বাজেয়াপ্তের। যার পরিপ্রেক্ষিতেই নাপোলিকে ম্যারাডোনার ছবি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেন আদালত।
নেপলসের আদালতের বিচারক পাওলো আন্দ্রেয়া ভাসাল্লো বলেছেন, ম্যারাডোনার ছবি ব্যবহারেরর জন্য সেসির সঙ্গে নাপোলির ২২ হাজার ইউরোর চুক্তিটি কিংবদন্তি ফুটবলারের সন্তানদের জন্য আর্থিক ক্ষতির কারণ।
ম্যারাডোনার ছবি নিয়ে আদালত আরও যোগ করে বলেছেন, ‘এটি ফুটবলের একজন নক্ষত্রের প্রতীক, যিনি সারা বিশ্বে স্বীকৃত। যার অর্থনৈতিক মূল্যও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ, যা অমূল্যও বটে।’
ম্যারাডোনার ছবিসংবলিত সীমিত সংস্করণের ৬ হাজার জার্সি থেকে নাপোলির আয় হয়েছে প্রায় ৯ লাখ ইউরো, যেখান থেকে ২৩ হাজার ইউরো পেয়েছেন সেসি, যিনি নাপোলিকে বিপণনের স্বত্ব প্রদান করেছিলেন। পাশাপাশি ১ লাখ ৫০ হাজার ইউরোর অর্থসম্পদ বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর মারা যান ডিয়েগো ম্যারাডোনা। আর্জেন্টিনার ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক ম্যারাডোনা সাত মৌসুম খেলেছেন নাপোলির হয়ে। ১৯৮৪ থেকে ১৯৯১ সালের মধ্যে নাপোলিকে দুবার লিগ শিরোপা এবং একবার ইউরোপীয় শ্রেষ্ঠত্বের খেতাব এনে দেন ম্যারাডোনা।